× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দুই টার্গেটে মাঠে বিএনপি

প্রথম পাতা

শাহনেওয়াজ বাবলু
২২ জানুয়ারি ২০২২, শনিবার

দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের দাবি নিয়ে সামনে এগোতে চায় বিএনপি। এ ইস্যুতে সারা দেশে জনমত গঠনই দলটির প্রধান লক্ষ্য। এ জন্য সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ করছে তারা। যদিও দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়ায় আপাতত জেলা পর্যায়ের সমাবেশগুলো স্থগিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৪০টি জেলায় সমাবেশ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া বিভিন্ন মানববন্ধন, দোয়া, স্মারকলিপি ও বিক্ষোভ-সমাবেশের মতো ছোট কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে বিএনপি। এদিকে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের অব্যাহত চাপ সত্ত্বেও রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে তারা। রাজপথ উত্তপ্তকারী যেকোনো ধরনের ঘটনা ও কর্মসূচি এড়াতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের বারবার সতর্ক করছে দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব।
নেতাকর্মীদের বৃহত্তর ঐক্য সৃষ্টি ও কার্যকর আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন তারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে সমাবেশগুলো শেষ হওয়ার পর কঠোর আন্দোলনের পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। তবে এই মুহূর্তে দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রেখে কর্মসূচি বাস্তবায়নের ওপর জোর দিচ্ছেন নীতিনির্ধারকরা। একই সঙ্গে কোনো কিছুতে বিভ্রান্ত বা কারো ফাঁদে পা না দিতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন বিএনপি’র নীতিনির্ধারকরা। তাই সমঝোতার পথও খোলা রাখতে চাইছেন। যে কারণে এখনই বড় ধরনের কোনো কর্মসূচির বিপক্ষে নেতারা। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে চলমান কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলছেন, এসব কর্মসূচির মাধ্যমে দলীয় চেয়ারপারসনের চিকিৎসা নিয়ে সরকারের মনোভাব সম্পর্কে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে। বিদেশেও দলীয় নেতাকর্মীরা বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এ নিয়ে ব্যাপক জনমত তৈরি হচ্ছে। এদিকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ছাড়া দেশের অধিকাংশ দল খালেদা জিয়ার বিদেশে সুচিকিৎসার আহ্বান জানিয়েছে। চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তারা।
এদিকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ। নতুন ইসি গঠনের লক্ষ্যে ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের ডাক দেন প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ। গত ২০শে ডিসেম্বর বঙ্গভবনে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে এবারের সংলাপ শুরু করেন প্রেসিডেন্ট। আর ১৭ই জানুয়ারি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে এবারের সংলাপ শেষ হয়। যদিও এই সংলাপে বিএনপি ছাড়াও অংশ নেয়নি- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, সিপিবি, বাসদ, এলডিপি, জেএসডির মতো দলগুলো।
বিএনপি আগে থেকেই দাবি করছে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না তারা। এছাড়া নতুন নির্বাচন কমিশন ইস্যুতেও আগ্রহী নন দলটির নেতারা। তাদের ভাষ্য, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই ‘সুষ্ঠু’ হয়নি। ইতিমধ্যে এটা প্রমাণিত হয়েছে। আর বর্তমান নির্বাচন কমিশনও এই সরকারে দ্বারাই গঠিত। তাই তাদের আমলে গঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনও যে পূর্বের কমিশনের দেখানো পথে হাঁটবে এটা আগে থেকেই অনুমেয়।  
এদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে নিজ মতের সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে বিএনপি। এ জন্য দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যদিও করোনা আক্রান্ত হওয়ায় বেশ কয়েকদিন দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছেন তিনি। কিন্তু বিএনপির অন্য সিনিয়র নেতারা বিভিন্ন দলগুলোর সঙ্গে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু করেছেন।   
বিএনপির নেতারা বলছেন, রাজনৈতিক আদর্শের ভিন্নতার কারণে কিছু বিষয়ে ভিন্নমত থাকা স্বাভাবিক। তবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও নির্দলীয় সরকারের মতো জাতীয় ইস্যুতে একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়তে কোনো বাধা নেই।
এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন মানবজমিনকে বলেন, আমাদের দল থেকে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, এই সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়নি এবং হবেও না। অতএব, আমাদের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এজন্য সরকার যদি পদত্যাগ করে তাহলে তো ভালো কথা, আর না হলে এই সরকারকে হটিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন করা হবে। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এছাড়া আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পূর্ণ মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসার জন্য প্রেরণের ক্ষেত্রে যে বাধা সৃষ্টি করেছে রেখেছে সরকার সেটা প্রত্যাহার করা এবং দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনাই এখন আমাদের লক্ষ্য।
এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন করা হচ্ছে বা হবে এসব কোনো বিষয় না। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠন যেকোনো পদ্ধতিতেই হোক না কেন সব কিছু তো আগের মতোই হবে। তাই ইসির বিষয়ে আমরা কোনো মাথা ঘামাচ্ছি না।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে ড. মোশাররফ বলেন, সব দলের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। তবে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে বার বারই আমাদের কার্যক্রম অনেকটাই ব্যাহত হচ্ছে। তবে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।  
দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আমরা জনগণের ভোটের অধিকার তাদের ফেরত দিতে চাই। জনগণের ভোটের অধিকার এবং বেগম জিয়ার মুক্তি একই সূত্রে গাঁথা। খালেদা জিয়ার মুক্তি হওয়া মানেই এদেশের মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। এজন্য আমরা রাজপথে আন্দোলন করছি। আর নির্বাচন কমিশন দিয়ে কিছুই হবে না, যদি না এই দেশে একটা নিরপেক্ষ সরকার আসে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর