গ্রাহকদের কাছে ভেজালমুক্ত গুড় সরবরাহে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন রাজশাহীর চারঘাটের দুই তরুণ উদ্যোক্তা। এজন্য উপজেলার প্রায় ৩০ জন গাছির সঙ্গে খাঁটি গুড় তৈরি করার জন্য চুক্তি করেছেন তারা। বিনিয়োগ করেছেন ৫ লাখ টাকা। ন্যায্য দাম না পাওয়ায় এ উপজেলার অধিকাংশ গাছি চিনিসহ বিভিন্ন ধরনের উপকরণ মিশিয়ে খেজুরের গুড় ও পাটালি গুড় উৎপাদন করেন। এ কারণে মানুষ সুস্বাদু এ গুড় ও পাটালি গুড় খেতে অনেকটাই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এ অবস্থা থেকে শিল্পটিকে বাঁচানো ও ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার জন্যই এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন এই দুই তরুণ উদ্যোক্তা।
তারা আরও জানান, গাছিরা যেন ভেজাল না মেশায় এজন্য আমরা গাছিদের অগ্রিম ন্যায্যমূল্য দিয়ে খাঁটি গুড় তৈরির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। রস সংগ্রহের শুরু থেকে গুড় তৈরি পর্যন্ত আমরা ভিডিও ধারণ করে আমাদের ফেসবুক পেজে আপলোড করি।
রাজশাহী কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করা এই দুই তরুণ উদ্যোক্তা সুফেল রানা ও শরিফুল ইসলাম। তারা দুজনই উপজেলার বামনদীঘি গ্রামের বাসিন্দা। চাকরির পেছনে না ছুটে হয়েছেন তারা উদ্যোক্তা। জেলার বিখ্যাত হাট বানেশ্বর বাজারে গড়ে তুলেছেন গ্রিন এন্টারপ্রাইজ নামের এক প্রতিষ্ঠান। সেখান থেকেই তারা বিভিন্ন মৌসুমের খাঁটি পণ্য সারা দেশে পৌঁছে দিয়ে থাকেন।
গাছিদের মাধ্যমে খাঁটি গুড় ও পাটালি উৎপাদন এবং অনলাইনের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয়ায় ক্রেতারা যেমন উপকৃত হচ্ছেন তেমনি গাছিরাও পাচ্ছেন খাঁটি গুড়ের ন্যায্যমূল্য। গাছিদের হাতে উৎপাদিত বিশুদ্ধ গুড় ও পাটালি ন্যায্য দামে কিনে অনলাইনের মাধ্যমে সারা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা।
উদ্যোক্তারা জানান, সারা দেশের মানুষ তাদের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে রাজশাহীর প্রসিদ্ধ ও ভেজালমুক্ত গুড় ও পাটালির ক্রয়াদেশ দিতে পারবেন। চারঘাট উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীম হোসেন বলেন, তরুণদের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের ফলে শীতের মৌসুমে সারা দেশের মানুষ চারঘাটের খাঁটি গুড় ও পাটালির নির্ভেজাল স্বাদ নিতে পারবে। এমন উদ্যোগে খাঁটি গুড় তৈরির উৎসাহ পাবে গাছিরা।