বরগুনার আমতলী উপজেলার আঙ্গুলকাটা গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ কেটে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে মুন্সি ইটভাটার মালামাল আনা-নেয়ার জন্য রাস্তা তৈরি করে ইটভাটা ভাড়া দিয়েছে ইটভাটার মালিক কর্তৃপক্ষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বাঁধ কেটেছেন বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এতে বড় ধরনের বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস হলে তলিয়ে যাবে গুলিশাখালী ইউনিয়ন। হুমকির মুখে রয়েছে ওই গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ।
১৯৮০ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড পায়রা নদী ঘেঁষা আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে রক্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে। ওই বাঁধ নির্মাণ করায় গুলিশাখালী ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ সিডর, আইলা ও মহাসেনের মতো বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
কিন্তু ৪৩/২এফ পোল্ডারের আঙ্গুলকাটা নামক স্থান দিয়ে স্থানীয় মুন্সি ইটভাটার মালিক বাদল মুন্সি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে মালামাল আনা-নেয়া করার জন্য রাস্তা তৈরি করে ইটভাটাটি ভাড়া দিয়েছে মো. আবুল মৃধার কাছে। আবুল মৃধা সুড়ঙ্গ রাস্তা দিয়ে মালামাল আনা-নেয়া করছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাটা অংশের উপরে বিভিন্ন কাঠের গুঁড়ি ফেলে রেখেছেন তিনি।
ওই কাঠের গুঁড়ির উপর দিয়ে এলাকার মানুষ ও যানবাহন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। জোয়ারের পানিতে এমনিতেই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পানিতে ছুঁই-ছুঁই অবস্থায় থাকে। কোনো জলোচ্ছ্বাস হলেই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাটা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে এলাকা তোলিয়ে যাবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে গুলিশাখালী ইউনিয়নের আঙ্গুলকাটা গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ। মুন্সি ইটভাটার মালিক মো. বাদল মুন্সির সঙ্গে কথা বলার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বর্তমানে মুন্সি ইটভাটা পরিচালনাকারী মো. আবুল মৃধা বলেন, মুন্সি ইটভাটার মালিক বাদল মুন্সির কাছ থেকে ইটভাটা ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছি আমি বাঁধ কাটি নাই। মালিক বাদল মুন্সিই কেটেছেন।
আঙ্গুলকাটা গ্রামের ইউপি সদস্য মো. ওহাব মিয়া মুঠোফোনে বলেন, বাঁধ কাটার ফলে আঙ্গুলকাটা গ্রামের মানুষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আজিজুর রহমান সুজন বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেউ কাটতে পারে না। সরজমিন পরিদর্শন করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, সরজমিন পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার আলম বলেন, বাঁধ কাটার কোনো বিধান নাই দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।