বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে অভিযোগ করেছেন তা নাকচ করে দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মহাসচিব বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আমরা যা কিছু করি দেশকে রক্ষার জন্য করি। দুর্বৃত্তদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য করি। আমরা লবিস্ট নিয়োগ করেছি, এটা একেবারেই সঠিক নয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অসত্য কথা বলেছেন।
গত সোমবার বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো জানাতে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন ডাকে দলটি। পরে সেখানে লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি নাকচ করেন।
ফখরুল ইসলাম বলেন, ইতিপূর্বে বিএনপি সুনির্দিষ্টভাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্টভাবে জনগণের সামনে প্রকাশ করেছে। বিএনপি মনে করে, যেহেতু এই সংসদ জনগণের ভোটে বৈধভাবে নির্বাচিত নয় সেহেতু এই সংসদের কোনো নৈতিক এখতিয়ার নেই এই ধরনের কোনো আইন প্রণয়নের। গোপনীয়তার সঙ্গে তাড়াহুড়ো করে এই আইন প্রণয়নের প্রচেষ্টা আওয়ামী লীগের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার নীলনকশা মাত্র।
তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো নির্বাচন কমিশনেই অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সফল হবে না যদি না নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের একতরফা সাজানো ভোটার বিহীন ও মধ্যরাতের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বিএনপি’র মহাসচিব বলেন, বিএনপি মনে করে বর্তমান আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার একমাত্র পথ, এর কোনো বিকল্প নেই। এই লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ও জনগণের ঐক্য গড়ে তুলে দুর্বার গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে এই পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হত্যা, খুন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য র্যাবসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে বাংলাদেশকে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে এবং সুদূরপ্রসারী প্রভাব বাংলাদেশের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা, অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই পরিস্থিতি সৃষ্টির সব দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।