মানুষের অতি আত্মবিশ্বাসের কারণে সংক্রমণ বাড়ছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এরকম একটা পরিস্থিতির কারণে এক থেকে ৩২ শতাংশে উঠেছে সংক্রমণের হার। এটা খুবই আশঙ্কাজনক। এই মুহূর্তে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসা রোগীর ৮৫ শতাংশই টিকা নেননি। গতকাল অনলাইন জুম প্ল্যাটফরমে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ওমিক্রন মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত দেশের ১৪ কোটির মতো মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব হয়েছে। তবে, এখনো আমাদের টার্গেট পপুলেশনের আরও ৩ কোটি মানুষকে টিকা দেয়া সম্ভব হয়নি। এই ৩ কোটি মানুষের অধিকাংশই পরিবহন খাতের, শিল্প-কারখানায় কর্মরত সদস্য বা বিভিন্ন দোকানপাটে কর্মরত কর্মী বাহিনীর সদস্য।
এ বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। দ্রুতই আমাদের এই ৩ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এটি সময় মতো করা গেলে ওমিক্রনের কারণে দেশে ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কমে যাবে। তিনি বলেন, দেশে এখন ওমিক্রন খুব দ্রুততার সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে না। দেশে সংক্রমণের হার মাত্র ১ ভাগ থেকে বেড়ে ৩২ ভাগ হয়েছে। মৃত্যুহার মাত্র ১ ভাগ থেকে ১৭ ভাগ হয়ে গেছে। অথচ বাণিজ্যমেলায় দেখা যাচ্ছে মানুষ গাদাগাদি করে চলাফেরা করছে। সেখানে অনেকেই মাস্ক পরিধান করছে না। দেশের অন্যান্য জনবহুল স্থানেও একই অবস্থা রয়েছে। সরকার কোভিডের প্রথম দুটি ঢেউ দেশের মানুষের সহায়তায় সফল হয়েছে। এবারও দেশের মানুষের সহায়তা ছাড়া সফল হওয়া সম্ভব হবে না। আর এ যাত্রায় সফল হতে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। ওমিক্রন মাইল্ড হতে পারে কিন্তু তার সংক্রমণের ক্ষমতা অনেক বেশি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সংক্রমণ যখন বেশি হবে তখন মৃত্যু বেশি হবে। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় সরকারি হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে জানান তিনি। আগেও বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিকরা যেভাবে এগিয়ে এসেছিল এবারও সেই ভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আশা করি- এবারও আপনারা আগের বারের মতো করবেন। সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মুবিন খান বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্যের মতে বেসরকারি মেডিকেল খাত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় প্রায় ৬২ ভাগ অবদান রাখে। দেশে ইতিপূর্বে বেসরকারি স্বাস্থ্যখাত সরকারের নানারকম উদ্যোগের পাশাপাশি থেকে কাজ করে গেছে। এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এবারের ওমিক্রন মোকাবিলাতেও প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশন সরকারের পাশে থেকে সরকারের সঙ্গেই কাজ করে যাবে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশনের মহাসচিব আনোয়ার হোসেন খান এমপি, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব সাইফুল ইসলাম বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এনায়েত হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. আহমেদুল কবীর প্রমুখ।