অনলাইন

অনশন ভাঙলেও শাবি ভিসি পদত্যাগের আন্দোলন চলবে

শাবি প্রতিনিধি

২০২২-০১-২৬

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন দমানোর জন্য কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তগুলোর কঠোর সমালোচনা করেছেন অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল এবং বিষয়গুলোকে অমানবিক, নিষ্ঠুর ও দানবীয় বলে অবহিত করেছেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানো শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক দম্পতি। সাংবাদিকদের ড. জাফর ইকবাল বলেন, শিক্ষার্থীরা আমার কথা মতো অনশন ভঙ্গ করেছে। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এখন তাদের হাসপাতালে নিতে হবে তারা যেন সুন্দরভাবে সুস্থ হয়ে উঠে। আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলছি, আন্দোলন থামানোর জন্য যে পদক্ষেপগুলো নেয়া হয়েছে তা অমানবিক, নিষ্ঠুর ও দানবীয়। আমি ধরে নিয়েছিলাম এখানে একটি মেডিকেল টিম থাকবে তারা নিয়মিত তাদের চিকিৎসা দিবে। এখানে মেডিকেল টিম না থাকাতে আমি কষ্ট পেয়েছি। আন্দোলনে তাদের যারা অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছে সেই সব মানুষদেরকে পুলিশ হাজতে রেখেছে, এটা নিন্দনীয়। এই ব্যাপারগুলো অবশ্যই যাতে বন্ধ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে কারো নাম ছাড়া, যখন প্রয়োজন হবে তখন নাম ঢুকানো হবে। আমি আশা করছি, এই জিনিসগুলো অবিলম্বে বন্ধ করা হবে।

তিনি বলেন, এখানে আসার আগে সরকারের উচ্চ মহল থেকে আমার সাথে কথা বলা হয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে আমি এখানে এসেছি। আমাকে যারা যে কথা দিয়ে এখানে পাঠিয়েছেন তা যেন তারা রক্ষা করেন। আমার আর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই। কাজেই আমাকে যে কথা দিয়েছেন তা যদি রক্ষা করা না হয়, তাহলে ছাত্রদের সাথে নয়, আমার ও এদেশের প্রগতিশীল মানুষদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে ধরে নিবো। খাবার বন্ধ করার মতো নিষ্ঠুরতা স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে করা হবে অকল্পনীয়।

ড. জাফর ইকবাল আরও বলেন, যদি কথা না রাখা হয় তাহলে অবশ্যই আমার ভূমিকা থাকবে। আমার কাছে তারা এসেছেন আমি যাইনি। সুতরাং আমি অনশনের হাত থেকে রক্ষা করে কথা রেখেছি আপনারাও কথা রাখবেন আশা করছি। আর পুলিশ এদের উপর নিমর্মভাবে হামলা করেছে তাই তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক দাবি। যে হামলা করেছে তাকে আমি মানুষ বলতে চাই না, সে দানব। তার জন্য শিক্ষার্থীদের মরার কোনো দরকার নেই।

অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক বলেন, যখন পুলিশ হামলা করেছে তখন শিক্ষকদের ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা ছিল। বিভিন্ন সময় আন্দোলনে আমরা সামনে ছিলাম, সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলন থামানো হয়েছে। পুলিশের সামনে দাঁড়ালে পুলিশ কিছুই করবে না, কারণ আমি একজন শিক্ষক। ওই ঘটনায় শিক্ষকরা প্রতিবাদ পর্যন্ত করেনি। শিক্ষার্থীরা তোমরা শিক্ষক হবে, তোমরা এমন মেরুদন্ডহীন হও না।

এদিকে অনশন থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম অপূর্ব বলেন, আমরা জাফর ইকবাল স্যারের উপর বিশ্বাস ও আস্থা রেখে অনশন থেকে সরে এসেছি। উনি আমাদের কথা দিয়েছেন আমাদের দাবিগুলো মেনে নিবেন। আমাদের বিশ্বাস আছে। কিন্তু ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো এবং পরবর্তী কর্মসূচি কি হবে আমরা তা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবো।

এদিকে গত ১৯শে জানুয়ারি বুধবার থেকে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। কয়েকদফায় সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে অনশন ভাঙ্গানোর চেষ্টা করা হয় কিন্তু ভিসির পদত্যাগের আগ পর্যন্ত অনশন চলবে বলে তাদেরকে জানিয়ে দেয়। কিন্তু বুধবার ভোর রাত ৪টায় জাফর ইকবাল দম্পতি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙার জন্য অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে অনশন ভাঙেন।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status