রেলওয়েতে চাকরি পরীক্ষার বিরুদ্ধে ছাত্ররা সহিংস বিক্ষোভ করেছে ভারতের বিহারে। এ সময় একটি যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তারা। অন্য একটি ট্রেনে ইটপাথর ছুড়ে মেরেছে। এ অবস্থায় রেল বিভাগ নন-টেকনিক্যাল পপুলার ক্যাটেগরি (এনটিপিসি) এবং লেভেল-১ পরীক্ষা স্থগিত করেছে। আজ ছিল ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস। এদিনই এ ঘটনা ঘটলো। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকার চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষোভ সমাধানের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে।
রেলমন্ত্রী অশ্বীনি বৈষ্ণব শিক্ষার্থীদের আইন ভঙ্গ না করতে অনুরোধ করেছেন। তাদেরকে নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, তাদের ক্ষোভের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, চাকরিপ্রার্থীদের অনুরোধ করছি তারা যেন আইন হাতে তুলে না নেন। আমি তাদেরকে ক্ষোভের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করবো এবং তাদের উদ্বেগের বিষয়টিও দেখা হবে। চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, উদ্বেগের বিষয়টি শুনতে রেলওয়ের রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের সব চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে একটি ইমেইল সৃষ্টি করা হয়েছে। কমিটি দেশের বিভিন্ন অংশে যাবে এবং চাকরিপ্রার্থীদের কথা শুনবে।
আজ গয়া’তে যে বিক্ষোভ হয়েছে তাতে একটি ট্রেন দাউ দাউ করে জ্বলতে দেখা যায়। অগ্নিনির্বাপণকারীদের দেখা যায় আগুন নিভাচ্ছেন। এ সময় উপস্থিত বিপুল সংখ্যক পুলিশ বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। শিক্ষার্থীরা রেলওয়ের বিভিন্ন ট্র্যাকে ছড়িয়ে পড়ছিল। তারা বিভিন্ন সহায় সম্পদ ভাঙচুর করে। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। তারা বেশ কিছু ট্রেন টার্গেট করে। এতে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়।
রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের নন-টেকনিক্যাল পপুলার ক্যাটেগরি (আরআরবি-এনটিপিসি) ২০২১ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এই বিক্ষোভ দেখা দেয়। রেলওয়ে এই পরীক্ষা দুই পর্যায়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন চাকরিপ্রার্থীরা । তাদের দাবি, প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষায় যারা পাস করেছেন, তাদের জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা অন্যায়। প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে ১৫ই জানুয়ারি। এ পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন এক কোটি ২৫ লাখ প্রার্থী। লেভেল-২ থেকে লেভেল-৬ পর্যন্ত ৩৫ হাজার পোস্টে লোক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এসব পদে মাসিক বেতন হবে ১৯,৯০০ রুপি থেকে ৩৫,৪০০ রুপি পর্যন্ত। পরীক্ষায় অংশ নেন প্রায় ৬০ লাখ প্রার্থী।
রেলওয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, বিক্ষোভের পর পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে। বিভিন্ন রেলওয়ে রিক্রুটিং বোর্ডের অধীনে যারা পাস করেছেন তাদের বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে যারা ফেল করেছে তাদের বিষয়ও দেখবে কমিটি।