অনলাইন

শামসুল হুদা ও বদিউল আলম মজুমদারের সমালোচনায় সিইসি

অনলাইন ডেস্ক

২০২২-০১-২৭

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের কঠোর সমালোচনা করেছেন বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। এছাড়া জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো রাজনৈতিক দলের চাপ ছিল না বলেও দাবি করেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে ‘রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন।
দিনের ভোট রাতে হওয়ার বিষয়ে সিইসি বলেন, অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে আমি কনক্লুসিভ কিছু বলতে পারি না। কারণ, আমি তো দেখি নাই। আপনিও দেখেননি যে রাতে ভোট হয়েছে। তদন্ত হলে বেরিয়ে আসত, বেরিয়ে এলে আদালতের নির্দেশে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যেত। সারা দেশের নির্বাচনও বন্ধ হয়ে যেতে পারত। রাজনৈতিক দলগুলো কেন আদালতে অভিযোগ দেয়নি সেটা তাদের বিষয়। এ সুযোগ তারা হাতছাড়া করেছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো রাজনৈতিক দলের চাপ ছিল না। কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাবে প্রভাবিত হইনি। ক্ষমতাসীন দলের একাধিক সংসদ সদস্য বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেছি। আদালতে গিয়ে তাদের জামিন নিয়ে আসতে হয়েছে। অনেক মামলা বিচারাধীন আছে। তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনের আগেও আমি বলেছিলাম, কোনো রাজনৈতিক দলের চাপ আগেও ছিল না, এখনো নেই।
কুমিল্লা এবং নারায়ণগঞ্জে আমাদের যে অবস্থান অন্য কোনো নির্বাচনের চেয়ে একটুও অতিরিক্ত অবস্থান ছিল না। অন্য সবগুলো নির্বাচন যেভাবে করেছি, সেভাবেই হয়েছে। একটা জায়গায় আমাদের অতৃপ্তি আছে, কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ ছাড়া অন্য জায়গায় সংঘাত হয়েছে। সকাল থেকে আমরা দেখি পরিচ্ছন্ন ভোট হচ্ছে। যখন ফল ঘোষণা করা হয়, তখন হানাহানি হয়। এগুলো কাম্য না।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের এ যাবৎকালের কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যেটা জনগণের ভোটাধিকার প্রক্রিয়া এবং জনপ্রতিনিধিদের পরিবর্তনের প্রক্রিয়া, এটা আমরা বন্ধ রাখিনি। অ্যাট এনি কস্ট, ঝুঁকি নিয়ে...বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রায় ২০ জন লোক করোনায় আক্রান্ত, এর মধ্যেও আমরা পিছিয়ে থাকিনি। নির্বাচন আমরা সম্পন্ন করেছি।
সম্প্রতি সাবেক সিইসি এটিএম শামসুল হুদা বর্তমান ইসির সমালোচনা করে বলেছিলেন, সদিচ্ছা থাকলে বর্তমান নির্বাচন কমিশন ভালো নির্বাচন করতে পারত। তাদের ‘পারফর্মেন্স সন্তোষজনক নয়’। তারা বিভিন্ন বিষয়ে ‘বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন’।

ওয়ান-ইলেভেন জমানার সাবেক ওই সিইসির উদ্দেশে কেএম নূরুল হুদা বলেন, কয়েকদিন আগে এটিএম শামসুল হুদা সাহেব ছবক দিলেন। তিনি বললেন, আমাদের অনেক কাজ করার কথা ছিল, করতে পারিনি, বিতর্ক সৃষ্টি করেছি। একজন সিইসি হিসেবে তার কথা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি।

“ইসি ইজ ওয়ান অব দ্য মোস্ট কমপ্লেক্স ইন্সটিটিউশন। এর মধ্যে একজন বাহবা নিয়ে যাবেন বা স্বীকৃতি নিয়ে যেতে পারে- এটা সম্ভব না। তার পক্ষে সম্ভব; আমিত্ব বোধ থেকে বলতে পারেন।”
২০০৭-০৮ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে সিইসির দায়িত্ব পালন করা এটিএম শামসুল হুদা ‘বিরাজনীতির পরিবেশে সাংবিধানিক ব্যত্যয়’ ঘটিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন কে এম নূরুল হুদা।

তিনি বলেন, “ইসির দায়িত্ব ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করা। তিনি নির্বাচন করেছেন ৬৯০ দিন পরে। এ সাংবিধানিক ব্যত্যয় ঘটানোর অধিকার তাকে কে দিয়েছে? তখন গণতান্ত্রিক সরকার ছিল না, সেনা সমর্থিত সরকার ছিল; ইমারজেন্সির কারণে এটা করেছে। গণতান্ত্রিক সরকারের সময়ে করা সম্ভব না।

নবম সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিককে (সুজন) প্রার্থীদের হলফনামা প্রচরের কাজ দেওয়ার সমালোচনা করে কে এম নূরুল হুদা বলেন, বিরাজনীতির পরিবেশের মধ্যে তিনি (এটিএম শামসুল হুদা) এটা করেছেন। তিনি বদিউল আলম মজুমদারের কীভাবে নিয়োগ দিয়েছেন? লাখ লাখ টাকা কীভাবে দিলেন? এ রকম অনেক কিছু করা যায়। ভেবেচিন্তে কাজ করতে হবে। সব কিছুর ঊর্ধ্বে এখান থেকে গেছে, এটা সম্ভব না, ক্যানট বি। অনেক সমালোচনার আছে।

কে এম নূরুল হুদা বলেন, বদিউল আলম মজুমদার এই কমিশন নিয়ে অনেক কথা বলে ফেলেন। এটার একটা ইতিহাস আছে। এখানে যোগদানের পর থেকে আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। তাকে নিয়ে অনেক ঝামেলা, অনিয়ম। এক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম, কাজ না করে টাকা দেওয়া, নির্বাচন কমিশনে সভায় অনিয়ম নিয়ে সিদ্ধান্ত আছে। বর্তমান ইসির সময়ে কাজ না পাওয়ায় ‘ক্ষুব্ধ হয়ে’ বদিউল এখন কমিশনের সমালোচনা করছেন বলে মন্তব্য করেন নূরুল হুদা।

তিনি বলেন, দুই বছর আমার পেছনে ঘুর ঘুর করছেন। একা একা এসেছেন। খবর পেয়েছি প্রায় ১ কোটি টাকা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ও অন্যান্য অভিযোগ রয়েছে। এ লোকের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করা যায় না, বিশ্বাস করা যায় না। উনি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো বিশেষজ্ঞ..., কাজ নেই। সংবাদ সম্মেলন করার বিশেষজ্ঞ উনি। আমাদের তো তার দরকার নেই।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status