ময়মনসিংহের ভালুকা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড ভাণ্ডাব সিলমা পাড়ায় রাস্তা না থাকায় গত বুধবার বিকালে রাবেয়া খাতুন (৬০) নামে এক মহিলার লাশ জানাজার মাঠে নেয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের প্রাচীর টপকিয়ে। ৪০ বছর ধরে এভাবেই চরম দুর্দশার মধ্যদিয়ে তাদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনদের লাশ আনা নেয়াসহ নিজেদের চলাফেরা করতে হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। বুধবার সিলমা পাড়ার সিদ্দিকুর রহমানের স্ত্রী রাবিয়া খাতুন মারা যাওয়ায় বিকালে উপজেলার ৫০ শয্যা সরকারি হাসপাতালের প্রাচীর টপকে নামাজে জানাজার জন্য লাশ নেয়া হয়। মরহুমার ভাই মো. আছমত আলী উপস্থিত মুসল্লিদের সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, রাস্তা না থাকায় তার বোনের লাশ আনতে হয়েছে প্রাচীরের উপর দিয়ে। অথচ তাদের পরিবার হাসপাতালের জন্য দেড় একর জমি দিয়েছেন। কিন্তু তারা চলাচলের জন্য কোনো রাস্তা পাননি। ৪০ বছর ধরে তারা চলাচলের একমাত্র রাস্তার জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তার মা-বাবা ও চাচাদের লাশ এভাবেই প্রাচীর টপকে পার করেছেন।
তিনি সরকারের সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চলাচলের জন্য একটু রাস্তা করে দেয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন। জানাজার নামাজে উপস্থিত সাবেক মেম্বার একেএম আবুল হোসেন জানান, সিলমাপাড়া এলাকার প্রায় ৫০টির মতো পরিবারের কয়েকশ’ মানুষ রাস্তার অভাবে দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের প্রাচীর টপকে অবর্ণনীয় কষ্ট করে আসা-যাওয়া করছেন। কিন্তু তারা বিভিন্ন মহলে রাস্তার জন্য আবেদন করেও কোনো প্রতিকার পাননি। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জহিরল ইসলাম জানান, সিলমাপাড়ার কয়েকশ’ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। মহল্লার মসজিদের ইমাম শাহজাহান মিয়া জানান, তিনি ২৬ বছর ধরে এখানে ইমামতি করছেন। মানুষ মারা গেলে প্রাচীর টপকিয়ে লাশ আনা-নেয়া করতে হয়। তার মতে মানুষের জীবনে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারেনা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ সময়ে স্থানীয়ভাবে কোনো প্রতিকার পাননি তাই তারা সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।