× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শিশু পর্নোগ্রাফি উদ্বেগ বাড়ছে

প্রথম পাতা

আল-আমিন
২৯ জানুয়ারি ২০২২, শনিবার
প্রতীকী ছবি

দেশের অভ্যন্তরের ইন্টারনেটের গেটওয়েতে ভয়ঙ্করভাবে বিস্তার করছে চাইল্ড পর্নোগ্রাফি। দুর্বৃত্তরা এইসব পর্নো সাইট ইউটিউবে আপলোড করায় তা ছড়িয়ে যাচ্ছে  দেশ ও দেশের বাইরে। বাংলাদেশ ছাড়াও যেসব দেশগুলো থেকে এই সব পর্নো সাইট আপলোড হয় তার আইপি ঠিকানা থাকে। এতে বিখ্যাত সার্চ মেশিন গুগল সহজেই অ্যাপলোডকারীদের নাম ও কোন দেশ থেকে আপলোড করা হয়েছে তা নির্ণয় করতে পারে। ২০২১ সালে প্রায় ২ লাখ চাইল্ড পর্নোগ্রাফি দেশের অভ্যন্তরে ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে লেনদেন এবং ইউটিউবে আপলোড হয়েছে। শিশুকে যৌন নির্যাতনের পর ওই ভিডিও ক্লিপ ইউটিউবে আপলোড ও অপরকে ম্যাসেঞ্জারে  প্রদান করার ঘটনায় সিআইডির সদর দপ্তরের সাইবার পুলিশ সেন্টার গত বছর প্রায় ১৬টি অভিযান পরিচালনা করে। ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২১ জনকে।  প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ভিকটিমের পরিবার রাজি না হলে সিআইডির পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে। সিআইডির সিপিসি বলছে, শিশু পর্নোগ্রাফি দিন দিন ভয়ঙ্কর বিস্তার লাভ করছে।
এটি রোধে কাজ করছেন তারা। এছাড়াও এই লিংকগুলো যাতে কোনো মাধ্যম ব্যবহার করে দেখা না যায় তার বিষয়ে বিটিআরসিকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সিআইডির সদর দপ্তরের সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাহমুদুল ইসলাম তালুকদার মানবজমিনকে জানান, ‘চাইল্ড পর্নোগ্রাফি ঠেকাতে আমরা কাজ করছি। সিপিসিতে যে সব অভিযোগগুলো আসে সেগুলো আমরা খতিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করি।’
সিপিসি সূত্রে জানা গেছে, দেশে দিন দিন শিশু যৌন নির্যাতনের ঘটনা বাড়ছে। কোনো কোনো ঘটনার মামলা হলেও অনেক পরিবার শিশুর ভবিষ্যত চিন্তা করে মামলা করতে যান না। অনেক ঘটনা আঁড়ালেই থেকে যায়। সাম্প্রতিক সময় দুর্বৃত্তরা শিশু  যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়ে তা তাদের বন্ধু, কাছের লোকজনকে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ছবি পাঠাচ্ছে। এটি আগে ছিল না। কিন্তু, ২০১৯ সালের পর থেকে এমন ঘটনা ঘটছে। কেউ কেউ আবার স্থায়ীভাবে নিজস্ব মোবাইলের ডিভাইসে রেখে দিচ্ছে। কেউ আবার ইন্টারনেটের ইউটিউবে আপলোড করে। যারা এমন অমার্জনীয় অপরাধ করছে তাদের আইপি এড্রেস দেখে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনছে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার।
সূত্র জানায়, বরিশালের মুলাদি এলাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক তার এক শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতন করে। ওই ভিডিওটি আবার ওই দুর্বৃত্ত ইউটিউবে আপলোড করে। ওই শিশু তার পরিবারকে কিছু বলতে পারেনি। কারণ ওই শিক্ষক তাকে হুমকি দিয়েছিল যে, সে যদি তার পরিবারকে কিছু বলে তাহলে তাকে পড়া না পারার কারণে আরও মারধর করবে। এই ভয়ে ওই শিশু কিছু বলেনি তার পরিবারকে।
সূত্র জানায়, ওই শিশু দিনের পর দিন ওই নির্যাতন সহ্য করে গেছে। ভিডিওটি ইন্টারনেটে আপলোড হওয়ার পর বিষয়টি সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের মনিটরিং সেলের চোখে পড়ে। পরে আপলোডকারীর আইপি ঠিকানা সংক্রাক্ত এবং ওই শিক্ষককে শনাক্ত করার পর  তাকে  গ্রেপ্তার করে সিপিসির একটি টিম। সিপিসির জিজ্ঞাসাবাদে ওই শিক্ষক শিশুকে যৌন হয়রানির ঘটনার বিষয়ে স্বীকার করে। শুধু এক শিশুকে নয় আরও এমন ৪ জনকে ওই শিক্ষক যৌন নির্যাতন করেছে বলে স্বীকার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছে সিপিসি জানতে চেয়েছিল যে, সে কেন ওই ভিডিওটি ইন্টারনেটে আপলোড করেছে? জবাবে ওই শিক্ষক কোনো সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি।
সূত্র জানায়, গত বছর সাভারের এক বাসায় একটি পরিবার বেড়াতে যায়। ওই পরিবারের সঙ্গে এক শিশু ছিল। তার বাবা একটি কাজে বাইরে যায়। এ সময় তার মা ঘুমিয়ে পড়লে ওই বাড়ির মালিক শিশুকে কৌশলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে যৌন নির্যাতন করে। সেটি আবার সে ভিডিও করে ইন্টারনেটে আপলোড করেছে। ওই ঘটনায় তাকে এবং তার স্ত্রীকে আইনের আওতায় এনেছে সিআইডি। তারা  এখন জেলে আছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত স্বামী ও স্ত্রী ভালো একটি পেশার সঙ্গে জড়িত। তারা জানায় যে, মজার ছলে তারা এমন ন্যক্কারজনক কাণ্ডটি ঘটিয়েছে।
সিপিসি জানিয়েছে, ওইসব ভিডিও যাতে কোনোভাবে শিশুরা দেখতে না পারে এজন্য দেশের সকল নাগরিকের প্রতি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে সিপিসি। কারণ ওই ভিডিও দেখলে একজন শিশুর মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর