বাংলারজমিন
সরাইলে ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি মুখোমুখি
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
২০১৮-১০-০৩
আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সরাইলের অরুয়াইল। ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ও আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু তালেব পাল্টাপাল্টি মিছিল করেছে। একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে দিয়েছে অশ্লীল স্লোগান। গত রোববার ইউপি চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির লিখিত অভিযোগের তদন্ত করতে গেলে কর্মকর্তাকে রেখেই চলে মিছিল। তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেছেন, কিছু অনিয়মের প্রমাণ তো পেয়েছিই। পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গত কয়েক মাস ধরে অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যানের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ করে আসছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা। গত ৩০শে আগস্ট তারা ৪ জনের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও ইউএনও’র দপ্তরে। এমনকি তারা প্রকাশ্যে জনসভায় মাইকের সাহায্যে চিৎকার করে চেয়ারম্যানের দুর্নীতির বিশদ ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। আর চেয়ারম্যান সবকিছুকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়ে বলছেন এগুলো না পাওয়ার যন্ত্রণার ষড়যন্ত্র। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের তদন্ত করতে গত রোববার বিকালে অরুয়াইলে যান সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মকসুদ হোসেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু তালেবের অফিসে প্রথমে তিনি ভুক্তভোগী লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। পরে চলে যান ইউনিয়ন পরিষদে। সেখানে অপেক্ষমাণ ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন প্রথমে কেন পরিষদে গেলেন না এজন্য ক্ষিপ্ত হন তদন্তকারী কর্মকর্তার উপর। কিছুক্ষণ পর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বের হয় একটি মিছিল। মিছিলে আওয়ামী লীগ সভাপতি তালেবের বিরুদ্ধে দেয়া হয় নানা অশ্লীল স্লোগান। এর জবাবে ওইদিন বাদ আছর আবু তালেবের নেতৃত্বে অরুয়াইল বাজারে বের হয় আরেকটি মিছিল। ওই মিছিলে আবু তালেবের বিরুদ্ধে অশ্লীল স্লোগান দেয়া হয়। গোটা অরুয়াইল বাজারে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। উভয় শিবিরে বলতে থাকে সংঘর্ষের প্রস্তুতি। অরুয়াইল ফাঁড়ির পুলিশের সতর্কতার কারণে কোনো অঘন ঘটেনি। তদন্ত কর্মকর্তার জনৈক সহযোগী বলেন, আমরা কেন আওয়ামী লীগের অফিসে গেলাম। এজন্য চেয়ারম্যান খুব চিৎকার চেঁচামেচি করেছে। আমরা থাকতেই মিছিলের শব্দ শুনেছি। অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মকসুদ হোসেন বলেন, তদন্তে প্রাথমিক ভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির কিছুটা সত্যতা তো পেয়েছিই। দুই গ্রুপের উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাটির নিষ্পত্তির জন্য গত সোমবার অরুয়াইলে ছুটে যান স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা ও সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া। ১৩ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় চায় আওয়ামী লীগ। প্রসঙ্গত: গত বেশ কয়েক মাস ধরেই সেখানকার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি চাল আত্মসাৎ, সালিশের টাকা গায়েব করা, সরকারি ঘরের কথা বলে মাসোহারা আদায় নানা অনিয়মের অভিযোগ করে আসছিলেন। আর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলছেন, সব মিথ্যে। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। আওয়ামী লীগের অনৈতিক দাবি না রাখায় তারা আমার পিছে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।