আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার (সুধা মিয়া) ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী গতকাল পালিত হয়েছে। আলোচনা সভা,দোয়া ও মিলাদ মাহফিলসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় খ্যাতিমান এই পরমাণু বিজ্ঞানীকে স্মরণ করা হয়। ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন,ওয়াজেদ মিয়া এমন একজন মানুষ ছিলেন তার শ্বশুর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রনায়ক এবং স্ত্রী দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও তিনি কোন দিন কোন সুবিধা নেয়ার চিন্তা করেননি। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এডভোকেট কামরুল ইসলাম,এডভোকেট শামসুল হক টুকু,মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা কামাল চৌধুরী, কণ্ঠশিল্পী রফিকুল আলম,অভিনেতা ড. ইনামুল হক,অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস,কণ্ঠশিল্পী এস ডি রুবেল ও দিনাত জাহান মুন্নী, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা। ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোট রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গতকাল এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করে। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা ঐক্য পরিষদ কার্যালয়ে এ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) -এর প্রশাসন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ও বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সমাধীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। গতকাল বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পীরগঞ্জের ফতেহপুরে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সমাধীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।
এরপর ড.ওয়াজেদ রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের পরিচালক হিসেবেও ভাইস-চ্যান্সেলর শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। পরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ,বঙ্গবন্ধু পরিষদ,অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন,তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়ন,কর্মচারী ইউনিয়ন,শিক্ষক,কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অন্যান্য সংগঠন এবং বিভিন্ন দপ্তরের পক্ষ থেকেও পৃথকভাবে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এছাড়াও বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিয় মসজিদে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মসজিদের ইমাম কাম-খতিব রকিব উদ্দিন আহাম্মেদের পরিচালনায় বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ড. এম ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ওয়াজেদ মিয়া ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। অসাধারণ মেধার অধিকারী সুধা মিয়া শৈশব থেকেই শিক্ষানুরাগী ছিলেন। তিনি ছিলেন, দেশে আণবিক গবেষণার পথিকৃৎ। তিনি পরমাণু গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন। ওয়াজেদ মিয়া বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পদে দক্ষতা ও সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ড. ওয়াজেদ বিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতে নীরবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন। ষাটের দশকে তিনি ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬২ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি গ্রেফতার হন এবং কিছুদিন জেল খাটেন। ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে তিনি বঙ্গবন্ধু পরিবারের পাশে থেকে তাদের সাহস ও শক্তি যুগিয়েছেন। এ কর্মবীর বিজ্ঞানী ২০০৯ সালের ৯ মে পরলোকগমন করেন।