× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চাকরির আশায় আমরণ অনশনে প্রতিবন্ধী নারী

এক্সক্লুসিভ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
২৭ জুন ২০১৯, বৃহস্পতিবার

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার প্রত্যন্ত বিয়াড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে চাঁদের কনা (৩১)। শিশুকাল থেকে তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধিতার শিকার। কিন্তু হাতের ওপর ভর দিয়ে হেঁটেই ২০১৩ সালে ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। যোগ্যতা অনুযায়ী একটি সরকারি চাকরির জন্য ছুটে বেড়িয়েছেন এ দুয়ার থেকে ও দুয়ার। নিরূপায় হয়ে বুধবার সকাল থেকে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন এই নারী।

মাত্র নয় মাস বয়সে পোলিওতে আক্রান্ত হয়ে দুটি পায়ের কার্যক্ষমতা হারায় চাঁদের কনা। তবুও বাবা-মা’র সচেতনতায় আর তার প্রতিবন্ধিতা জয়ের অদম্য প্রচেষ্টায় চলতে থাকে হাতে হেঁটে পড়ালেখা। তিনি যখন অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্রী তার স্কুলশিক্ষক মা হাসনা হেনা বেগম মারা যান। এর কয়েক বছর পর তার বাবা ব্রেইন স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে এবং বাবার অসুস্থতাজনিত কারণে তার জীবনে প্রতিবন্ধিতার সঙ্গে নেমে আসে চরম দারিদ্রতা। অবশেষে পড়ালেখার খরচ যোগাতে একটি বেসকারি টিভি চ্যানেলে সামান্য বেতনে চাকরি নেন তিনি। শত কষ্টের মাঝেও গার্হস্থ্য অর্থনীতিতে সফলতার সঙ্গে অর্জন করেন উচ্চতর ডিগ্রি।

চাঁদের কনা বলেন, সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে তিনি মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। অর্জন করেছেন প্রথম বিভাগ। শুধু তাই নয়, পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলেছেন। ভার উত্তোলন থেকে শুরু করে টিভি-রেডিও’তে সংবাদ পাঠ, টিভি প্রোগ্রাম গ্রন্থনা, উপস্থাপনা ও পরিচালনা, নাটক, গল্প ও কবিতা লেখা, অভিনয় করা ও কবিতা আবৃতি করা, গল্প বলা, ছবি আঁকা এবং কম্পিউটারে সকল কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তিনি।
চাঁদের কনা আরও বলেন, রাজশাহী মাদার বক্স গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে তিনি অনার্স পড়েছেন। পঞ্চম তলায় তার ক্লাস হতো। অন্য সব ছাত্র-ছাত্রী কলেজে আসতেন ৯টার দিকে। অথচ তিনি কলেজে যেতেন সকাল ৭টার দিকে। কারণ হাতে ভর দিয়ে পঞ্চম তলায় উঠতে তার দেড় ঘণ্টার মতো সময় লেগে যেত। স্কুলজীবন থেকে শুরু করে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন পর্যন্ত এমন লক্ষ-কোটি বাধা পেরিয়ে তিনি প্রতিবন্ধিতাকে জয় করেছেন। শুধু তার স্বপ্ন একজন সরকারি কর্মকর্তা হওয়া। এরপর যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরির জন্য বহু চেষ্টা করেছেন তিনি। এ বছরই তার সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়েছে। বাধ্য হয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন তিনি। তার হুইল চেয়ার ঘিরে রয়েছে বিভিন্ন বার্তা লেখা ২০টির মতো প্লাকার্ড। গলায় ঝুলছে, ‘আমি আমার মা প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসা চাই। তার সঙ্গে দেখা করতে চাই।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর