× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রশ্ন করার সাহসটাই ছিল না

ষোলো আনা

সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) থেকে
৯ আগস্ট ২০১৯, শুক্রবার

কেডা বাহে তোমরা? মোর ফটক তুলেন ক্যা? কি করবেন? ও তোমরা সংবাদিক? তোমরা ছবি তুলি কি করবেন? মোর দুঃখ ঘুচবে কি? এক নাগারে প্রশ্ন করেই যাচ্ছিলেন এই বৃদ্ধা। কিন্তু এসব প্রশ্নের উত্তর জানা নেই আমার।

নাম তার গোলাপ জান। বয়সের ভারে কাবু। তিনি আরো বলেন- মোর ঘর, বাড়ি, সংসার বানে নিয়ে গেল। জমি কোনাকও ভাঙ্গি নিয়ে গেল। ছাওয়া পাওয়া নিয়ে থাকপের জায়গা নাই। খাওয়ার কুনো ঠিক নাই। আর তোমরা আলচেন ফটক তুলবের।

এই বৃদ্ধা চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের খড়খড়িয়া বাঁধের পাশে ছেলে, বউ, নাতি, নাতনী নিয়ে থাকতেন।
পেতেছিলেন সুখের সংসার। অভাব থাকলেও দু’চোখে ছিল সুখের স্বপ্ন। কিন্তু সেই সাজানো সুখের সংসার আর স্বপ্ন নিমিশেই হারিয়ে যায় বানের পানির তোড়ে। দিনটি ছিল শুক্রবার। চারদিকে বন্যার থৈ থৈ পানি। কিছুটা কমতেও শুরু করেছিল সেই পানি। কিন্তু হঠাতই পানির তোড়ে ভেঙ্গে যায় বাঁধ, সড়ক। আর সেই সঙ্গে ভেসে যায় গোলাপ জানসহ ৭টি পারিবারের সাজানো সংসার।

দুঃখ আসে, দুঃখ যায়। মানুষের কষ্ট দূর হয়। কিন্তু বন্যা দুঃখ আর দুর্ভোগ দুটোই নিয়ে আসে। ভোগায় দীর্ঘদিন। অনেক পরিবার হারিয়ে ফেলে মাথা তুলে দাঁড়াবার শক্তি।

চারদিক থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও রেখে গেছে বাড়িহারা, ঘরহারা, সংসারহারা মানুষের চোখের পানি। তাদের চোখে পানি, মুখ মলিন। দু’চোখে শুধুই হতাশা। প্রতি বছর বন্যা আসে, বন্যা যায়। কিন্তু এবারের বন্যার আঘাত ছিল ভয়ঙ্কর। ছিল শুধু দুর্ভোগ আর দুর্ভোগ। পানি বৃদ্ধির শুরু থেকেই একের পর এক সড়ক, বাঁধ, রেল লাইন ভেঙ্গে যেতে শুরু করে। ধসে যায় ব্রিজ ভেঙ্গে যায় বাড়িঘর। ভেসে নেয় ঘর সংসার। শুধু তাই নয় পানির কমতে শুরু করলেও বঁাঁধ ভেঙ্গে ভেসে নেয় রমনা খড়খড়িয়া এলাকার ৭টি পরিবারের ঘর সংসার।

এলাকাবাসী জানান, ১৯৮৮ ও ২০১৭ সালের বন্যাকেও হার মানিয়েছে এবারের বন্যা। গোলাপ জানের অবস্থা এতটাই করুণ যে, ঈদ নিয়ে কোনো প্রশ্ন করার সাহসটাই হয়নি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর