× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এ লজ্জা রাখি কোথায়?

ষোলো আনা

শামীমুল হক
১১ অক্টোবর ২০১৯, শুক্রবার

ক্ষমা চাইতেও লজ্জা হচ্ছে। তারপরও মাথা নিচু করে বলছি, ক্ষমা করে দিস বাবা আবরার। তোকে রক্ষা করতে না পারার ব্যর্থতা এ দেশের। দেশের মানুষের। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের ছাত্র হয়ে নিশ্চয় গর্ববোধ করতি। কিন্তু এটা হয়তো জানতি না, এখানেই রয়েছে যমদূতদের বাস। যাদের সঙ্গে একই ক্যাম্পাসে ঘুরতি, পড়তি ওরাই তোর যমদূত হয়ে হাজির হবে। এটা কি কোনোদিন ভেবেছিলি? অথচ দেশবাসী দেখলো তোর মতো আবরারকে মেরে ওরা উল্লাসনৃত্য করেছে।
মহাউৎসবে তোর ওপর হামলে পড়েছিল শয়তানের দল। তোর পিঠের নীল দাগ দেখেই এটা বুঝতে পেরেছি। ভাবছি, কোথায় মানবতা? কোথায় গেল ভালোবাসা। ওদের মন কোন ধাতুতে তৈরি? ওদের জন্ম কোন জগতে? সত্যিই কী ওরা মানব সন্তান?

আবরার সামনে পরীক্ষা তাই ছুটির সময়টুকুও বাড়িতে না থেকে তুই ছুটে এসেছিলি প্রিয় ক্যাম্পাসে। শনিবার সকালে মায়ের আদর আর বাবার ভালোবাসা নিয়ে বিদায় নিয়েছিলি বাড়ি থেকে। যথারীতি ক্যাম্পাসে ফিরে খবরও দিয়েছিলি। কিন্তু এই রাতই যে তোর জীবনে অভিশপ্ত রাত হবে তুই কি জানতি। হায়েনারা যে তোর মতো মায়াবী আবরারের পথ চেয়ে বসে আছে সেটা কে জানতো? নীরব রাতে তোর ওপর হামলে পড়ে ওরা। তোর প্রাণবায়ু উড়ে না যাওয়া পর্যন্ত ওরা ওদের কাজ চালিয়ে যায়। আফসোস, তোর মতো মেধাবী সন্তানকে দেশ হারালো। তোর লাশ যখন কুষ্টিয়ার পথে তখন গ্রেপ্তারকৃত হায়েনাদের একজনের বেহায়া হাসি জাতি দেখেছে ঘৃণা ভরে। জানি না, যে মায়ের গর্ভে এসব হায়েনাদের জন্ম  সে মায়েরা তাদের সন্তানকে নিয়ে গর্বিত না দুঃখিত। তবে, আমি নিশ্চিত সেসব মায়েরা যদি মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে এমন সন্তান জন্ম দেয়ার গ্লানি বয়ে বেড়াবেন আজীবন। আবরার তুই পরপারে ভালো থাকিস। জানিস, আবরার, লজ্জা হচ্ছে, লজ্জা। কেমনে তোর সঙ্গে কথা বলি? তোর সামনে মুখ দেখাবো কি করে? এ লজ্জা কোথায় রাখি বল? তোর মায়ের বুক ফাটা আর্তনাদ বুকে এসে বিঁধছে। তোর বাবার বোবা কান্না বৃষ্টি হয়ে ঝরছে। সত্যিই আমরা অপরাধী।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর