× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পুলিশের বাধায় ঐক্যফ্রন্টের র‌্যালি পণ্ড

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৪ অক্টোবর ২০১৯, সোমবার

পুলিশের বাধার কারণে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে শোক র‌্যালি করতে পারেনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের নিচতলায় আবরার হত্যার প্রতিবাদে শোকসভা শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের উদ্দেশ্যে শোক র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি কদম ফোয়ারা মোড়ে গেলে তা আটকে দেয় পুলিশ। এসময় নেতাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয় পুলিশের। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে র‌্যালীর সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এরআগে শোকসভায় বক্তব্য রাখেন ঐক্যফ্রন্টের বক্তারা। সেখানে আগামী ১৮ই অক্টোবর ঢাকায় আবরার হত্যার প্রতিবাদে শোক সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়া হয়।

শোক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, আবরারের মতো একটা নিরীহ ছেলেকে এভাবে হত্যা করা হলো।
এরা কি মানুষ। আমাদের দেশের ছেলেদের আপনারা পশু বানাচ্ছেন কেন।এই বাংলার ছেলেরা মুক্তিযুদ্ধ করেছে। এই দেশকে স্বাধীন করেছে। যারা অতীতে দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে কাজ করেছে। এখনো যদি তাদের দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে লালন পালন করা হয় তাহলে তারা দেশকে আরো অনেক কিছুই দেবে। আর তাদেরকেই আপনারা হত্যাকারী বানাচ্ছেন। আজকে কতিপয় কয়েকজন লোক এই রাষ্ট্র দখল করে রাখার জন্য দেশের সূর্য সন্তানদের পশু বানাচ্ছে। তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়। যে সরকার এখন আছে। যে দলের নাম নিয়ে যারা দেশ চালাচ্ছে। এই দলেতো আমরাও সবাই ছিলাম। আমরা সবাই মিলে এই দেশকে স্বাধীন করেছি। কিন্তু আজ যেভাবে দেশ পরিচালনা করা হচ্ছে এতেতো অসম্মান করা হচ্ছে দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের।

তিনি বলেন, এই দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন না জোর করে ক্ষমতায় বসে আছেন। জোর করে, জবরদস্তি করে, সংবিধানকে অমান্য করে দেশ চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশের মানুষ বলবে, কারা দেশ পরিচালনা করবে। কারণ তারাই দেশের মালিক। কিন্তু আপনি সেটা হতে দিচ্ছেন না। দেশকে চরম একটা বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। সন্ত্রাসকে আজ প্রতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ড. কামাল বলেন, আমরা যে সংগ্রাম করে স্বাধীনতা অর্জন করেছি সেটা নষ্ট করার অধিকার আপনার নাই। আমাদের কন্ঠকে স্তব্ধ করার কোন ক্ষমতা নাই আপনার। পারবেনও না। সময় থাকতে মাথা ঠান্ডা করেন। মুক্ত করেন এই দেশকে। আপনার এই প্রশাসন থেকে দেশকে মুক্ত করেন। যথেষ্ঠ হয়েছে। আর কত? তৃতীয়বার কে আপনাকে নির্বাচিত করেছে। আমরাতো দেখেছি ৩০ তারিখ এসে আপনি বলেছেন আমি প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেছি। আরো পাঁচ বছরের জন্য হয়ে গেছি। দেশের মানুষকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন। আপনি একটা নাটকবাজ। আপনি স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আপনি মিথ্যার শিকার হয়েছেন। আর মিথ্যার শিকার যারা হয় তাদের ভয়াবহ পরিণতি হয়। তৃতীয়বার আপনাকে কেউই নির্বাচিত করেনি। আমি সাক্ষী দেব তৃতীয়বার আপনাকে কেউই নির্বাচিত করে নাই। সুক্ষভাবে আপনি সরে যান। দ্রুত সরে যান। আপনি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন দিন। আমি বলছি না এই মঞ্চে যারা রয়েছেন তারা ক্ষমতায় বসবেন। জনগণ যাদের ক্ষমতায় বসাবে তারাই ক্ষমতায় বসবে। আর আপনার সাথে কোন আপোসের প্রশ্নই অসে না। তাই আল্লাহরওয়াস্তে ক্ষমতাটা ছেড়ে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটা নির্বাচন দিন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, আজকে দেশের মানুষকে বন্দি করে রেখেছে এই অবৈধ সরকার। কেউ কোন কথা বলতে পারে না। সভা সমাবেশ করতে পারে না। শোক র‌্যালী করতে পারে না। কিন্তু সরকার দলের লোকেরা ঠিকই সব কিছুই করতে পারে। বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার হত্যার প্রতিবাদে আমরা একটি শোক র‌্যালী করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটিও করতে দেয়া হল না। এই সরকারে উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই। আপনারা যা করছেন সেটা ঠিক করছেন না। এখনো সময় আছে সোজা হয়ে যান। নয়তো আপনাদের উপর আল্লাহর গজব পড়বে।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরাদেশে আজ সন্ত্রসের রাজত্ব চলছে। কিছু বললেই মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। সামান্য একটা স্ট্যাটাসের কারণে আবরারকে হত্যা করা হয়েছে। আজ সারাদেশের মানুষ শোকাহত। মানুষের এই শোক সরকারের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছে। আবরার হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন বন্ধ করার জন্য বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষার্থীদের কান্না বন্ধ করতে বলেছেন। উনিতো গত ২৫ বছর ধরে উনার বাবা হত্যার বিচার চেয়েছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, বুয়েটের এই মেধাবী ছাত্র হত্যা দেশের মানুষকে হতভম্ভ করে দিয়েছে। এই শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে হবে। এই শোককে যদি শক্তিতে রূপান্তরিত করতে না পারি, রাজপথ প্রজ্জ্বলিত করতে না পারি তাহলে শহীদ আবরারের আত্মা শান্তি পাবে না। নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও ঐক্যফ্রন্টের প্রধান দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর সঞ্চালনায় শোকসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিকল্প ধারার সভাপতি রুহুল আমিন বেপারী, জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জমান রতন, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার, বিএনপি নেতা ইশরাক প্রমূখ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর