× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সংসদ সচিবালয়ে ফাইলের স্তূপ /দলবেঁধে বিদেশ ভ্রমণ

প্রথম পাতা

কাজী সোহাগ
১৫ অক্টোবর ২০১৯, মঙ্গলবার
প্রতীকী ছবি

নানা ছুঁতোয় বিদেশ ভ্রমণে যান এমপিরা। এ নিয়ে নানা সমালোচনাও হয়েছে তাদের। তবে এবার দলবেঁধে বিদেশে গেছেন সংসদ সচিবালয়ের দায়িত্বে  থাকা শীর্ষ চার ব্যক্তি। তারা হলেন, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া, চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী ও সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান। তাদের সঙ্গে একজন হুইপও রয়েছেন। তিনি হলেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। দলে আরও রয়েছেন-বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি  তোফায়েল আহমেদ এমপি, শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আমির হোসেন আমু এমপি, মো. হাবিবে মিল্লাত এমপি, ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এমপি,আবদুস সালাম মূর্শেদী এমপি,পীর ফজলুর রহমান এমপি, সুবর্ণা মুস্তাফা এমপি ও শবনম জাহান এমপি। সার্বিয়ার বেলগ্রেডে ইন্টার পার্লামেন্টারী ইউনিয়ন (আইপিইউ) এর ১৪১তম এসেম্বলি এবং আইপিইউ এর সংশ্লিষ্ট মিটিংয়ে অংশ নিতে ১১ই অক্টোবর দেশ ছেড়েছেন তারা।
ফিরবেন ১৭ই অক্টোবর। তাদের এ সফরের মধ্যে রয়েছে ৫টি কর্মদিবস। সংসদ সচিবালয়ের শীর্ষ চার ব্যক্তির একসঙ্গে বিদেশ যাওয়া অনেকটা নজিরবিহীন বলে জানিয়েছেন, সংসদ সচিবালয়ের ঊর্দ্ধতন কয়েকজন কর্মকর্তা। তারা বলেন, এর ফলে সংসদ সচিবালয়ের সব ধরনের আর্থিক আর প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। এসব ব্যক্তিদের টেবিলে প্রতিদিন অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি ফাইল যায় স্বাক্ষরের জন্য। কিন্তু তারা সবাই বিদেশে থাকায় টেবিলে টেবিলে ফাইলের স্তুপ জমে গেছে। সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা জানান,ফাইল মুভ না করলে কাজের গতি থাকে না। তাই এ ক’দিন অলস সময় কাটাতে হবে। কেউ কেউ আবার অফিসে হাজিরা দিয়েই ছুটছেন সচিবালয়ের বাইরে। আড্ডা কিংবা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। অনেকে এই সুযোগে লম্বা ছুটিও কাটাচ্ছেন। সচিবালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, সংসদের যে কোন ধরনের ফাইল বিভিন্ন টেবিল ঘুরে যায় সংসদ সচিবের কাছে। যেসব ফাইল তার নিষ্পত্তির ক্ষমতা রয়েছে সেগুলো তিনি নিষ্পত্তি করেন। যেগুলোর নিষ্পত্তি করতে পারেন না সেগুলো পাঠিয়ে দিতে হয় স্পিকারের কাছে। তাই সচিবের টেবিলে যেসব ফাইল যাচ্ছে সেগুলো পড়ে থাকছে। তার অনুপস্থিতিতে নিষ্পত্তিও হচ্ছে না আবার স্পিকারের টেবিলেও যাচ্ছে না। আবার প্রশাসনিক ও আর্থিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন ফাইলগুলো যায় সরাসরি স্পিকারের কাছে। ১৯৯৪ সালের সংসদ সচিবালয় আইন অনুযায়ি এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারি হচ্ছেন স্পিকার। বর্তমানে তার টেবিলে রয়েছে ফাইলের স্তুপ। এর পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে, নিয়ম অনুযায়ি স্পিকার অনুপস্থিত থাকলে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা থাকে ডেপুটি স্পিকারের। তিনিও রয়েছেন বিদেশ সফরে। সাধারণত সংসদ অধিবেশনে মন্ত্রীদের উত্তর দেয়ার জন্য এমপিদের করা প্রশ্নের বিষয়টি দেখভাল করেন ডেপুটি স্পিকার। কিছুদিন পরই বসছে সংসদ অধিবেশন। প্রতিদিনই এমপিরা প্রশ্ন জমা দিচ্ছেন সংসদ সচিবালয়ের প্রশ্ন শাখায়। তারাও প্রশ্নের তালিকা তৈরি করছেন প্রতিদিন। কিন্তু সচিব ও ডেপুটি স্পিকার বিদেশে থাকায় ওই কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়েছে। কারণ প্রশ্ন শাখার তৈরি তালিকার ফাইল সচিবের স্বাক্ষর নিয়ে যায় ডেপুটি স্পিকারের কাছে। অন্যদিকে, এমপিদের আবাসন থেকে শুরু করে যাবতীয় বিষয় দেখভালের দায়িত্ব চীফ হুইপের। তিনি বিদেশ থাকায় এসব বিষয় স্থবির হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, নিউজিল্যান্ডে এসিসটেন্ট স্পিকার রয়েছেন। আবার ডেপুটি স্পিকারও রয়েছেন। স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতে এসিসটেন্ট স্পিকার দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু আমাদের দেশে এসিসটেন্ট স্পিকারের কোন পদ নেই। তাই তাদের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালনের সুযোগ কারও নেই। সংসদ সচিবালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান,সম্প্রতি সংসদ সচিবালয়ের ই-নথি পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। তবে ই-নথির সঙ্গে ম্যানুয়াল ফাইলও রয়েছে। সচিব পর্যন্ত ওই পদ্ধতি কার্যকর। স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের কাছে ফাইল পাঠানো হয়। তবে এ পর্যন্ত ই-নথিতে ফাইল নিষ্পত্তির উদাহরণ নেই বললেই চলে। এসব প্রসঙ্গে সংসদের কার্যক্রম নিয়মিত পর্যবেক্ষণকারি প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান মানবজমিনকে বলেন, বিদেশে অনুষ্ঠিত যে কোন কনফারেন্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল যেতেই পারেন। তবে সংসদ সচিবালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত করে, বিকল্প কোন ব্যবস্থা না করে একসঙ্গে বিদেশ যাওয়া কতটা নৈতিক তা বিবেচনা করা উচিত। তিনি বলেন, এমনিতেই এই সংসদের কার্যক্রম নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। সে প্রেক্ষিতে এ ধরনের বিদেশ সফর ওই প্রশ্নকে আরও গভীর করে। পাশাপাশি ভূল বার্তা দেয়। এটা কোন ইতিবাচক দৃষ্টান্ত নয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর