× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমানো সম্ভব

শরীর ও মন


৮ ডিসেম্বর ২০১৯, রবিবার

হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া সাধারণ হৃদরোগ থেকে পৃথক। সাধারণ মানুষের মধ্যে বেশীরভাগই তাদের কার্ডিও ভাস্কুলার ডিজিজ প্রোফাইল সম্পর্কে জানেন না এবং সাধারণ হৃদরোগ ও হঠা‍ৎ করে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এর মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন না। হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া আসলে ধমনী ব্লক হয়ে যাওয়ার দরুণ রক্তের সংবহন জনিত একটি সমস্যা এবং এর লক্ষণ তৎক্ষণাৎ কিংবা অ্যাটাকের কয়েক ঘন্টা আগে দেখা যায়, এর লক্ষ্মণগুলির মধ্যে প্রধানত রয়েছে অ্যাঞ্জাইনা পেইন যা কয়েক মাস ধরে চলতে পারে এমনকি বছর ভরও। যদিও হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এর ক্ষেত্রে, এটি অনেকটা ‘ইলেক্ট্রিক্যাল’ সমস্যা যা হৃদযন্ত্রের হঠাৎ কাজ বন্ধ করে দেওয়ার কারণে হয় এবং যদি স্বল্প সময়ের মধ্যে তাঁর উপযুক্ত চিকিৎসা না করা যায় তাহলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

প্রফেসর ডঃ মহসিন হোসেন, প্রফেসর অফ কার্ডিওলজি, ন্যাসনাল ইনস্টিটিউৎ অফ কার্ডিও ভাস্কুলার ডিজিজ, ঢাকা, বাংলাদেশ (NICVD), বলেন, বেশীরভাগ হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ক্ষেত্রে দেখা যায় হৃদযন্ত্রের অনিয়মিত স্পন্দন এর পেছনে দায়ী যার আরেকটি নাম হোল অ্যারিদমিয়াস। অস্বাভাবিক ও অনিয়মিত হৃদ স্পন্দন প্রাণঘাতী হতে পারে যা হৃদয়ের রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে রোগীর মৃত্যু হতে পারে, যদি না উপযুক্ত সময়ে তাঁর চিকিৎসা করা হয়। যদিও, এই ধরণের প্রাণঘাতী পর্বের থেকে রক্ষা পেতে, আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে চিকিৎসা করে থাকি যারা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

যে সব রোগী, হাইপারটেনসন, ডায়াবেটিস ও ওবেসিটি বা স্থুলত্বের মতো সমস্যার শিকার এবং উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করেন তারা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সবথেকে বেশী ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
এই ধরণের রোগীদের নিয়মিত হার্ট চেক আপ ও বিশেষজ্ঞের মতামত গ্রহণ প্রয়োজন।  তবে, যে সব রোগী হৃদযন্ত্র থেকে কম রক্ত পাম্প হওয়ার সমস্যার মধ্যে রয়েছেন যাদের এই সক্ষমতা মাত্র ৩৫৫ অথবা তাঁর কম (এজেকসন ফ্র্যাকশন) এবং ইতোমধ্যেই বাইপাস সার্জারি হয়েছে অথবা স্টেন্টিং করা হয়েছে করোনারি আর্টারি ডিজিজ এর কারণে, তারা এই ধরণের হঠাত কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের সবথেকে বেশী ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন, যা কিনা জীবনঘাতী হতে পারে , এবং খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই মৃত্যু নেমে আসতে পারে।

“এই ধরণের রোগীদের জন্য যারা হঠা‍ৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন, তাঁদের এর হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে ইমপ্ল্যান্টেবল কার্ডিওভারটার ডেফিব্রিলেটর (ICD) ইনসার্ট করা যেতে পারে। ICD হোল একটি ছোট আকারের মেশিন যা পেসমেকারের মতো হয় এবং অ্যারিদমিয়াস এর সমস্যার সমাধানে ব্যবহার করা হয়। এটি হৃদ গতি নিয়ন্ত্রণ করে”, জানালেন ডঃ মহসিন হোসেন।

ICD ধারাবাহিকভাবে হৃদ গতির উপর নজর রাখে। যখন এই হার অতি দ্রুত হয়, বা অস্বাভাবিক ছন্দে চলে তখন এটি এনার্জি ডেলিভার করে (ক্ষুদ্র, কিনতি শক্তিশালী শক) হৃদ পেশীতে ফলে হৃদ গতি ফের স্বাভাবিক হয়ে যায়। ICD প্রতিটি এই ধরণের ঘটনার ডেটা রেকর্ড করে, যা ডাক্তারবাবু হাসপাতালে রাখা সিস্টেম এর তৃতীয় একটি অংশ দিয়ে প্রত্যক্ষ করবেন।

যে সব রোগীদের ICD ব্যবহার করা হয়েছে তাঁদের হৃদ গতি ধারাবাহিকভাবে নজরে রাখা হয়। এটিকে পেসমেকার এর সঙ্গে একযোগে ব্যবহার করা যায় অন্যান্য অনিয়মিত হৃদ গতির সমস্যা রোধে। কাজেই, যে সব রোগীর হৃদয়ের কার্য্যক্ষমতা কমে এসেছে (এজেকসন ফ্র্যাকশন) এবং অনিয়মিত হৃদ গতি রয়েছে তাডের জন্য একটি পৃথক ডিভাইস CRT-P ব্যবহার করতে হয়।
যদিও, হৃদ গতির ছন্দের প্যাটার্নের ভিত্তিতে, একজন রোগীকে আরো উন্নত ডিভাইস কার্ডিয়াক রিসিঙ্ক্রোনাইজেশন থেরাপি ডিফাইব্রিলেটর (CRT-D) ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। এই ডিভাইসটি, যা কম্বো ডিভাইস নামেও পরিচিত, পেসমেকার ও ICD এর কম্বিনেশন হিসাবেও গণ্য করা যায় কারণ তা অনিয়মিত হৃদ গতি সমস্যা সিঙ্ক্রোনাইজেসন এর মাধ্যমে সমাধান করে, হৃদ গতি মনিটর করে এবং প্রয়োজন হলে হঠাত কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট থেকে রোগীর জীবন রক্ষায় বৈদ্যুতিক শক দেয়।

ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজির ক্ষেত্রে একধাপ অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে, এই ডিভাইসে রয়েছে বিল্ট-ইন ইমপ্ল্যান্টেবল কার্ডিও ভাস্কুলার ডেইফাইব্রিলেটর (ICD)। “বুকের ত্বকের ভেতর এটি ইমপ্ল্যান্ট করা হয় এবং এর তাঁর শিরার মধ্যে দিয়ে হৃদ যন্ত্রের সঙ্গে সংযোগ সাধন করে, ফলে হৃদ গতির উপর নজরদারি সম্ভব হয়। যদি কোন সময় অনিয়মিত অথবা কোন ছন্দ না দেখা যায় তাহলে এই ডিভাইস হস্তক্ষেপ করে এবং হৃদযন্ত্রকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসতে সাহায্য করে”, বললেন, প্রফেসর (ডঃ) মহসিন হোসেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর