২৩ দিনে ১৫ বাংলাদেশি ভারত সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো অনেকটাই চুপ। তরুণ প্রজন্মের কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব থাকলেও সামনে আসেননি তারা। কিন্তু একজন ব্যতিক্রম। তিনি আরিফুল ইসলাম (আদীব)। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৪৩ তম ব্যাচের (স্নাতকোত্তর) ছাত্র। সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে ৪ দফা দাবিতে শনিবার বিকাল থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশন করছেন এই তরুণ। রাতে নিরাপত্তার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নিলেও সকালেই প্রেস ক্লাবে চলে গেছেন তিনি।
এদিকে অনশনে যাওয়ার আগে নিজের ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাস দেন আরিফ। তাতে তিনি লেখেন- ‘প্রতিনিয়ত সীমান্তে নির্বিচারে মানুষ হত্যা (আমি আবারো বলছি মানুষ, পাখি নয় পশু নয়) করছে ‘বন্ধু’ রাষ্ট্র ভারত। আমি মানুষ শব্দটি দুইবার উল্লেখ করলাম এই জন্য যে মানুষ হত্যা করেছে এই অনুভূতিটা এখন আর আমাদের মাঝে নেই। আমরা প্রতিদিন ধর্ষণ করে হত্যা, নির্যাতনে হত্যা, ক্রসফায়ারে হত্যা, বোমা মেরে হত্যা শুনতে শুনতে একেবারে অনুভূতিহীন হয়ে গেছি। এই অনুভূতিটা আবার জেগে ওঠে যখন নিজের, বাবা, ভাই কিংবা বোন হয়।
একটা পরিসংখ্যান বলি- গত দশ বছরে ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সালে সীমান্তে ভারত ৩০০ মানুষ হত্যা করেছে। ২০১৯ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ৪৬। আর ২০২০ সালে মাত্র ২৩ দিনেই হত্যা করেছে ১৫ জন। ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে সীমান্তে হত্যা তিনগুণ। আর এভাবে চলতে থাকলে ২০২০ সালে সংখ্যাটা ৪০০ও ছাড়াতে পারে। কিছুদিন আগে নিউজে দেখলাম ১১ বছর আগে বাবাকে মেরেছে বিএসএফ এবার মারলো ছেলেকে।
একবার চিন্তা করেছেন, এই আমরাই ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, ৪ জনের হত্যার প্রতিবাদে পুরো দেশ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে মায়ের ভাষার জন্য লড়াই করেছি। আর সেই আমরাই ২০২০ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে এসেও কি রকম চেতনাহীন হয়ে গেছি। বলি কি ভাই, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শুধু ১৬ই ডিসেম্বর আর ২৬শে মার্চের জন্য রেখে না দিয়ে হৃদয়ে অনুভব করি। এভাবে চলতে দেয়া যায় না। এভাবে চলতে পারে না। পাশের দেশ নেপালও দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে ১ জন মানুষকেও মারলে তার প্রতিবাদ করতে হয়। এবার জেগে ওঠুন, প্রতিবাদ করুন। কত সময় নানা কাজে ব্যয় করেন। দশটা মিনিট দেশের জন্য প্রতিবাদ করুন। রাস্তায় নেমে আসুন। আর শিক্ষার্থী ভাইদের বলি কত সময় আড্ডায়, ফোনে গেম খেলে নষ্ট করেন। এবার একটু বাস্তব জীবনে খেলুন না। ভাইয়ের জন্য দাড়াঁন, দেশের জন্য দাড়াঁন। আর কোন হত্যা নয়, এবার হবে প্রতিবাদ।’
যে ৪ দফা দাবিতে আরিফুল ইসলাম অনশন করছেন সেগুলো হলো-
১. ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সকল হত্যার আন্তর্জাতিক আইনে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
২. ভারতকে সীমান্ত হত্যার জন্য ক্ষমা চেয়ে আর হত্যা না করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
৩. সীমান্তে হত্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সকল পরিবারকে তদন্ত সাপেক্ষে দুই দেশের যৌথভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৪. বাংলাদেশের সংসদে সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদ করে নিন্দা জানাতে হবে।
Shahjahan Sarkar Sha
২৬ জানুয়ারি ২০২০, রবিবার, ৭:৪৩Bangladesh is not Palestein. Bangladesh Border force also kill those killer who kill our people.