× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভুতুড়ে দিল্লিতে এখনো আতঙ্ক

প্রথম পাতা

মানবজমিন ডেস্ক
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শনিবার

দিল্লিতে গত কয়েক দশকের মধ্যে হওয়া ভয়াবহতম সামপ্রদায়িক দাঙ্গায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ জনে। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে সব থেকে বেশি সংঘর্ষ হওয়া বাবরপুর, জাফরাবাদ ও মৌজপুর এলাকায়। গতকাল অবস্থা অপেক্ষাকৃত শান্ত ছিল। তবে আতঙ্ক কাটছে না দিল্লির  উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অংশের বাসিন্দাদের। এদিন নামাজ উপলক্ষে জোরদার করা হয় নিরাপত্তা। এতে কিছু অঞ্চল স্বাভাবিক হয়ে উঠলেও বেশিরভাগ দোকানপাট ছিল বন্ধ, সড়কগুলো ছিল ফাঁকা। জারি রয়েছে কারফিউ।

রাজধানীর অংশ হলেও বেশ কয়েকটি এলাকা পরিণত হয়েছে ভুতুড়ে নগরীতে।
অন্তত ৩০০০ বাড়ি ফাঁকা পড়ে আছে এসব এলাকায়। আধপোড়া বাড়িগুলো ভয়াবহ এ দাঙ্গার সাক্ষী হয়ে আছে কিন্তু তাতে নেই কোনো বাসিন্দা। ফাঁকা হয়ে আছে দোকান, কারখানা আর বসতবাড়িগুলো। কয়েকজন আছেন পাহাড়া দিচ্ছেন যাতে লুটপাট না চলতে পারে। তবে কার্যত সেখানে লুণ্ঠন চলছে বলে অভিযোগ পাহাড়ায় থাকা অনেকের। বলছেন, এখনো পুলিশ নিরাপত্তার জন্য কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এমনকি যখন গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে দাঙ্গাকারীরা একের পর এক বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছিল তখনো পুলিশ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। রাতে আগুন লাগাতে আসতে পারে এই ভয়ে গত ক’দিন ধরে ঘুমাতে পারছেন না তারা।

গত কয়েক দিনের সহিংসতার সঙ্গে কারা জড়িত তা তদন্ত করতে দুটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ড, ভাঙচুরসহ নানা অপরাধে জড়িত থাকার অপরাধে এখন পর্যন্ত দায়ের করা হয়েছে ৪৮টি এফআইআর। এসব ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত ছিল ও কাদের উস্কানিতেই দাঙ্গা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তা খুঁজে বের করতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, দিল্লির প্রশাসন ও পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। আগামী ৩০শে এপ্রিল এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

দিল্লির সংঘর্ষে পুলিশের নজরে এসেছে বেশ কয়েকজন দাগি অপরাধীর নাম। আগে থেকেই এরা দিল্লি পুলিশের টার্গেট ছিল বলে জানা গেছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লিকে অশান্ত করে তুলতে এই দাগি অপরাধীদের ব্যবহার করা হয়। এছাড়া, প্রচুর বেআইনি অস্ত্র দিল্লির সংঘর্ষে ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের বেশকিছু অস্ত্রশস্ত্র ইতিমধ্যে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৫ শতাধিক দাঙ্গাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অনুসন্ধান চলছে পুলিশের খাতায় নাম থাকা আরো কয়েকজন দাগি অপরাধীর। দিল্লিতে চারদিন ধরে চলা অশান্তিতে অন্তত ৮০ জনের শরীরে বুলেটের ক্ষত পাওয়া গিয়েছে। যেসব জায়গায় আগে থেকেই এই সব অপরাধীরা সক্রিয় ছিল, সেসব জায়গাতেই হামলা বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল দিল্লির নতুন পুলিশ কমিশনারের নাম ঘোষণা করেছে। শনিবার অবসর নিচ্ছেন বর্তমান পুলিশ কমিশনার অমূল্য পট্টনায়েক। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন দিল্লি পুলিশের বিশেষ কমিশনার এসএন শ্রীবাস্তব।

এছাড়া, দিল্লি দাঙ্গা নিয়ে নতুন করে দায়ের হওয়া আরও তিনটি পিটিশনের শুনানি হয়েছে দিল্লি হাইকোর্টে। ওই মামলায় দিল্লি পুলিশ, দিল্লি সরকার ও কেন্দ্রকে নোটিশ পাঠিয়েছে আদালত। নতুন দায়ের হওয়া পিটিশনের একটিতে বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও আসাদুদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। সহিংসতায় উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগেই তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের আবেদন জমা পড়ে। লয়ার্স ভয়েস নামে আইনজীবীদের একটি সংগঠন বৃহস্পতিবার অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে এ আবেদন করেছে। গতকাল আবেদনগুলো নিয়ে এক শুনানি শেষে এ প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে জবাব চেয়ে নোটিশ জারি করেছেন আদালত।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর