× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রাত জাগার কুফল

শরীর ও মন


২৬ জুলাই ২০২০, রবিবার

প্রজন্মটি প্রযুক্তি নির্ভর। ঠিক যেন নিশাচর প্রাণীর মতো ঘরে ঘরে রাতের বেলায় স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ইত্যাদি ডিভাইস সামনে রেখে শুরু হয় নৈশ উৎসব। কেউ রাত জেগে চ্যাটিং এ ব্যস্ত, কেউ বা ব্যস্ত কলে, আবার কেউ বা সারারাত মুভি-সিরিজ নিয়ে না ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু এই "রাত জাগা" কত যে ভয়াবহ হতে পারে সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করছি....

রাত জাগার কুফল:
★উচ্চরক্ত চাপ- কয়েকটি গবেষণায় এসেছে টানা ৩-৪ দিন রাত জেগে থাকলে বা পরিমিত না ঘুমালে শরীরের স্বাভাবিক ছন্দ পতন হয় যার প্রভাবে উচ্চরক্তচাপ দেখা দিতে পারে। আর যদি তা নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা থাকে।

★হার্টের ক্ষতি- উচ্চরক্তচাপ থেকে হার্টে প্রভাব খুবই প্রচলিত সমস্যা। হার্টের সাথে ঘুমের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে পরিমিত না ঘুমালে ধীরে ধীরে হার্টের কার্যক্ষমতায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে এবং হার্ট এটাকের সম্ভাবনা ও বেড়ে যেতে পারে। হাই প্রেসারের পাশাপাশি, ইরেগুলার হার্টবিট, হার্টরেট এমনকি হার্ট ফেইলিউর পর্যন্ত হতে পারে।

★ত্বকের সৌন্দর্য হ্রাস- রাত জাগার সাথে সরাসরি হরমোনের তারতম্য জড়িত।
না ঘুমালে স্ট্রেস হরমন বৃদ্ধি পায় যার কারণে ত্বকের কোলাজেন ভাঙতে শুরু করে এবং পর্যাপ্ত স্কিন কেয়ার সত্ত্বেও অল্প বয়সেই চেহারায় মলিনতা, ব্রণ, বয়সের ছাপ, বলিরেখা, চোখের নিচে কালি পরা এসব দেখা দিতে পারে যা মোটেই সুখকর নয়।

★ওজন বৃদ্ধি -২০১৪ সালের একটি স্টাডিতে দেখা গেছে অন্তত ৬-৭ ঘন্টা না ঘুমালে ৩০% লোকের ক্ষেত্রে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। জেগে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুধার পরিমাণ বেড়ে যায় এবং সেটা নিবারণ করতে গিয়ে ওজন বেড়ে গিয়ে কোলেস্টেরল ও বেড়ে যায় যা কিনা হার্টের ক্ষতির ও কারণ।

★সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা কমে যাওয়া- কিছু গবেষনায় দেখা গেছে টানা কয়েক মাস রাতে ঠিক মতো ঘুম না হলে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের বিশেষ কিছু অংশ এতটাই ক্লান্ত হয়ে পরে যে ঠিক মতো কাজ করে উঠতে পারে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কম সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়। উপস্থিত বুদ্ধি ও লোপ পেতে থাকে।

★হতাশা - দিনের পর দিন রাতে না ঘুমাল দেহের স্বাভাবিক ছন্দপতন হয়। উচ্চরক্তচাপ বেড়ে, ব্রেইন এর রিজুভিনেটিং পাওয়ার কমে গিয়ে এনজাইটি, ডিপ্রেশন এর উৎপত্তি হতে পারে। কিছু গবেষনায় রাত জাগা মানুষের আত্মহত্যার মত মারাত্মক সিদ্বান্ত ও নিতে দেখা গেছে।

★রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা লোপ পাওয়া- ২০১২ সালে আমেরিকার একটি প্রতিষ্ঠান এ ৩০ জন ব্যক্তির ওপর স্টাডি করে জানা গেছে রাত জাগার সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা লোপ পাওয়ার হার সমানুপাতিক। সবকিছুতেই শৃঙ্খলার প্রয়োজন। মানুষ নিশাচর প্রাণী নয়। সকাল -দুপুর-বিকেল-রাত প্রতিটি সময়ের এক্টিভিটির মানুষের জীবনের ওপর প্রভাব রয়েছে। যারা ভোর পাঁচটায় ঘুমান স্বভাবতই সকালে সময়মত উঠতে পারেন না, আর উঠলেও সারাদিনে মস্তিষ্ক বা শরীর তার ছন্দ হারায়। সারাদিনের কাজেও মানসিক বিষাদ ভর করে। প্রকৃতির নিয়মে দেহঘড়ির ছন্দ বজায় রাখতে প্রতিদিন তাড়াতাড়ি ঘুমানো ও তাড়াতাড়ি ওঠা অতীব জরুরী।

লেখক: রেজিস্টার্ড ডেন্টাল সার্জন বিএমডিসি-৯০৭৪
ছবি: সাবরিনা মিম।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর