× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দৌলতপুরে গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের ১৬ প্রকল্পের গম লুট

বাংলারজমিন

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
১৩ আগস্ট ২০২০, বৃহস্পতিবার

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের ১৬টি প্রকল্পের ১৬০ মেট্রিকটন গম লুটপাটের বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) প্রকল্পে এমন পুকুর চুরির অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. আ. কা. ম. সরোয়ার জাহান বাদশাহ্র সুপারিশে উপজেলার বিভিন্ন অবকাঠামো সংস্কারে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১’শ ৬০ দশমিক ৫৫৫ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার স্কুল মাঠ ও কাঁচা রাস্তা সংস্কারসহ মোট ১৬টি প্রকল্পের বিপরীতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার এ গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে প্রকল্প এলাকার মানুষের অভিযোগ, নামমাত্র কাজ করে সিংহভাগ অর্থ ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের (পিআইও অফিস) লোকজন ও প্রকল্প সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টরা। সরোজমিনে ঘুরে এসব অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। উপজেলার তারাগুনিয়া ফুটবল মাঠ এর উন্নয়নে ‘তারাগুনিয়া ফুটবল মাঠে আঙিনায় মাটি ভরাট ও উন্নয়ন’ নামে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১০ মেট্রিক টন গম। সরকারি হিসেবে যার বাজার মূল্য তিন লাখ ১০ হাজার টাকা।
তবে এলাকার ঐতিহ্যবাহী ওই ফুটবল মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, দুটি স্থানে মাত্র দুই ট্রাক মাটি স্তুপীকৃত ভাবে পড়ে আছে। স্থানীয়রা জানায়, এ মাটির মূল্য বড় জোর ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা হবে। প্রকল্পে বরাদ্দকৃত গমের মূল্য ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা হলেও প্রকল্পের সভাপতি শফিকুল ইসলাম জানান, পিআইও অফিস থেকে তাকে মোট ১ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। তার দাবি, অতি বর্ষার কারণে সময় মত মাটি সংগ্রহ করতে না পারায় প্রকল্পের কজ শেষ করা যায়নি। এদিকে, উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মোজাম্মেলের বাড়ি থেকে জিল্লুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুন:নির্মাণের জন্য ৯টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে সরোজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, জুলাই মাসের শেষের দিকে ওই রাস্তার দুয়েকটি স্থানে কয়েক ঝুড়ি করে মাটি ফেলা হয়েছে। তবে এ প্রকল্পের সভাপতি বজলু মেম্বর দাবি করেন, পিআইও অফিস থেকে ৯ টন গমের মুল্য হিসেবে দেড় লাখ টাকা মত পেয়েছেন তিনি। গমের দাম এত কম কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পিআইও অফিসে তো কিছু খরচা দিতে হয়’। একই অবস্থা উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের দৌলতখালী গ্রামের আলতাবের বাড়ি হতে হোসেনাবাদ অভিমুখী কাঁচা রাস্তা পুন: নির্মাণ প্রকল্পের। ওই রাস্তার দুটি স্থানে মাত্র দশ-বারো ট্রলি মাটি ফেলা হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। এতে তিন থেকে চার হাজার টাকার বেশি খরচা হয়নি বলে জানায় এলাকাবাসী। অথচ এ প্রকল্পের বরাদ্দ ছিল ৯টন গম। প্রকল্প সভাপতি ছাপাতন মেম্বরের বলেন, ‘আমাদের তো গম দেয়নি। ৮০ হাজার টাকা দিয়েছিল পিআইও অফিস। তা দিয়ে যতটা পেরেছি কাজ করেছি।’ অন্যদিকে উপজেলার খাস মথুরাপুর গোরস্থানের আঙ্গিনায় মাটি ভরাট প্রকল্পেও পুকুর চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই প্রকল্পের বরাদ্দ ছিল ১১ টন গম। স্থানীয়রা জানান, কিছু শ্রমিক দিয়ে সামান্য কিছু মাটি ফেলা হয় ওই গোরস্থানের জানাজা নামাজ আদায়ের জায়গায়। পরে সেখানে ট্রাকটার দিয়ে চাষ করা হয় যাতে দেখে মনে হয় অনেক মাটি ফেলা হয়েছে। মশাউড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙিনায় মাটি ভরাটসহ উন্নয়নের জন্য ১০ মেট্রিকটন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেখানে একই অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, একই রকম অনিয়ম হয়েছে বাকি প্রকল্পগুলোতেও।
তবে দৌলতপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান দাবি করেন, কাজ না করে প্রকল্পের অর্থ নয়ছয়ের কোন সুযোগ নেই। তিনি নিজে এসব কাজ মনিটর করেন। তার দাবি প্রকল্পের সব অর্থ এখনো ছাড় করা হয়নি। কাজ দেখার পর এই অর্থ দেওয়া হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর