× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মুখগহ্বরের ক্যান্সার: কারণ ও লক্ষণ

শরীর ও মন


১৬ আগস্ট ২০২০, রবিবার

বাংলাদেশের ক্যান্সার রোগীদের মাঝে প্রতিবছর ৮.৯% রোগী মুখগহ্বরের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং ৭.৯% রোগী এই রোগে মৃত্যুবরণ করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষের যুগে এই রোগ দ্রুত নির্ণয় ও এর থেকে আরোগ্য লাভের অনেক সুযোগ সৃষ্টি হলেও ক্যান্সারের প্রতি মানুষের খানিকটা আতংক যেন সহজাত। তবে আমাদের মনে রাখা দরকার, মুখের ক্যান্সারের কোনও লক্ষণ দেখা দিলে গড়িমসি না করে দ্রুত চিকিৎসার পদক্ষেপ নিলে এর থেকে সম্পূর্ণ নিরাময় অসম্ভব নয়।

চলুন জেনে নিই কী কী কারণে মুখে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়?

১) তামাক বা তামাকজাত যে কোনও পণ্য সেবন (যেমন- বিড়ি, সিগারেট, সাদা পাতা, গুল, হুঁকা, চুরুট, খইনি ইত্যাদি) এবং জর্দা, সুপারি, চুন দিয়ে পান খাওয়া।

২) অতিমাত্রায় অ্যালকোহল সেবন।

৩) ধারালো বা বাঁকা দাঁত; ত্রুটিযুক্ত ডেঞ্চার, ফিলিং, আর্টিফিসিয়াল ক্রাউন, ব্রিজ বা অ্যাপ্লায়েন্স দ্বারা মুখগহ্বরের কোনও অংশে ক্রমাগত আঘাত লাগা।

৪) সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির সরাসরি সংস্পর্শে থাকা (ঠোঁটের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়)।

৫) Human papilloma virus এর সংক্রমণ।

৬) বংশগত ইতিহাস থাকা।

৭) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা।

৮) খাদ্যতালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস(ভিটামিন এ, সি, ই) এর ঘাটতি।

মুখের ক্যান্সারে কী কী লক্ষণ দেখা যেতে পারে?

১) মুখগহ্বরে দীর্ঘমেয়াদী অস্বাভাবিক ফোলা/রক্তক্ষরণকারী ক্ষত।

২) সাদা বা লাল বর্ণের দীর্ঘমেয়াদী ছোপ, যা সহজে সারছে না।

৩) অস্বাভাবিক রংয়ের কোনও ছোপ যা হঠাৎ আকারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

৪) মুখগহ্বর, চোয়াল বা তার আশেপাশে ব্যথা অনুভব করা।

৫) মাড়ি ফোলা এবং তা থেকে রক্তপাত হওয়া।

৬) মুখগহ্বরের কোনও অংশে জ্বালাপোড়া, খোঁচানোর মত অনুভূতি হওয়া।

৭) মুখগহ্বর বা তার আশেপাশে কোনও অংশে বোধশক্তি হারানো।

৮) দৃশ্যমান কোনও কারণ ছাড়াই দাঁত নড়বড়ে হয়ে যাওয়া।

৯) মুখগহ্বর, চেহারা, গলা বা ঘাড়ে চাকা বা দলার উপস্থিতি।

১০) চোয়াল বা জিহ্বা স্বাভাবিকভাবে নাড়াতে না পারা বা ব্যথা অনুভব করা।

১১) চেহারায় অপ্রতিসাম্য দেখা দেওয়া এবং তা বাড়তে থাকা।

১২) গলায় কিছু আটকে আছে বলে মনে হওয়া। কথা বলতে, খাবার চিবাতে ও গিলতে কষ্ট হওয়া।

১৩) কণ্ঠস্বর পরিবর্তন।

১৪) মুখে দুর্গন্ধ।

১৫) হঠাৎ ওজন হ্রাস।

মোটা দাগে এরকম কিছু লক্ষণ মুখের ক্যান্সারে থাকতে পারে। তবে এসব লক্ষণ দেখা দিলেই যে নিশ্চিত ক্যান্সার হয়ে গেছে তা কিন্তু নয়, অন্যান্য রোগেও এমন লক্ষণ আমরা পেয়ে থাকি।
তাই বলে লক্ষণগুলোকে অবহেলা করারও কোনও সুযোগ নেই। কারণ আমরা জানি, যে কোনও রোগ যত দ্রুত নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা শুরু করা যায়, তার তত ভাল পরিণতি আশা করা যায়। মুখ-দাঁতের বাৎসরিক চেকআপ না করানো, নিয়মিত সেলফ স্ক্রিনিং (মুখগহ্বরে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা যায় কিনা তা নিজেনিজে দেখা) না করা, মুখগহ্বরে সমস্যা দেখা দিলে রেজিস্টার্ড ডাক্তারকে না দেখিয়ে হরেক রকম চিকিৎসা(!) আর টোটকা ব্যবহার করে সময় নষ্ট করা- এসব কারণে ক্যান্সার আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ে!

সুতরাং কোনও উপসর্গ দেখা দিলে ঘাবড়ানো চলবে না। দেরি না করে একজন ন্যুনতম BDS ডিগ্রিধারী রেজিস্টার্ড ডেন্টাল সার্জনকে দেখিয়ে ফেলতে হবে। উপসর্গটি যাচাই করে, সেটি কী কারণে হচ্ছে তা নির্ণয় করে, দ্রুত চিকিৎসার পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে তিনিই আমাদেরকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারবেন।

- ডা. ইফফাত সামরিন মুনা।
ডেন্টাল সার্জন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর