× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এই প্রতিবাদ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, রাষ্ট্র জনগণের

ফেসবুক ডায়েরি

আলী রীয়াজ
১৭ আগস্ট ২০২০, সোমবার

চতুর্দশ লুই বলেছিলেন– ‘আমিই রাষ্ট্র’। স্বৈরাচারী শাসকদের কাছে রাষ্ট্র, সরকার, দেশ একাকার হয়ে ব্যক্তির করতলগত হয়- তাঁরা ছাড়া আর সব কিছুই গৌণ।তাঁরা এবং তাঁদের অনুসারীরা বলেন - তিনিই সার্বভৌম, তাঁর বিকল্প নেই, তিনি না থাকলে রাষ্ট্র থাকবেনা, দেশ থাকবেনা। স্বৈরাচারী শাসকের সেই চিরায়ত কণ্ঠস্বর রোববার ধ্বনিত হয়েছিলো বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে। ২৬ বছর ধরে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো জালিয়াতির মাধ্যমে ৯ আগস্ট নির্বাচনে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণার পর সেখানে গত কয়েক দিন ধরেই চলছে বিক্ষোভ; সেই সব বিক্ষোভে হামলা হয়েছে, আটক করা হয়েছে হাজার হাজার মানুষ, কয়েক জন মারা গেছেন। এই পটভূমিকায় রোববার মিনস্কে লুকাশেঙ্কো তার সমর্থকদের এক সমাবেশের আয়োজন করে – আকারে ছোট এই সমাবেশে যারা উপস্থিত ছিলেন তার অধিকাংশই ছিল সরকারি কর্মচারী। সমাবেশে লুকাশেঙ্কো বিক্ষোভকারীদের বর্ণনা করেন 'ইঁদুর', 'আবর্জনা' এবং 'ডাকাত' বলে; বলেন বিক্ষোভকারীরা হচ্ছে ‘বিশ্বাসঘাতক’। লুকাশেঙ্কো তাঁর ভাগ্য আর জাতির ভাগ্যকে অভিন্ন বলেই ঘোষণা দেন; 'তুমি যদি [আজ] লুকাশেঙ্কোকে ধ্বংস করো তবে তা হবে তোমার শেষের সূচনা'।
স্বৈরশাসকের এই ঔদ্ধত্বের জবাব দিয়েছে বেলারুশের জনগণ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। মিনস্কের কেন্দ্রস্থলে সমবেত হয়ে আওয়াজ তুলেছে লুকাশেঙ্কোর পদত্যাগের, আওয়াজ তুলেছে গণতন্ত্রের, আওয়াজ তুলেছে ভোটাধিকারের।
প্রায় দুই লক্ষ মানুষ তাতে যোগ দিয়েছেন। বেলারুশের ইতিহাসে এত বড় সমাবেশ আগে হয়নি। লুকাশেঙ্কোকে মদদ যোগাচ্ছে প্রতিবেশী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দেশে দেশে অগণতান্ত্রিক শাসকদের পেছনে যার সমর্থন সুস্পষ্ট।
বেলারুশের জনগণের এই বিক্ষোভ শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা এখনই বলা কঠিন। কিন্ত সারা বিশ্ব জুড়ে গণতন্ত্রের পশ্চাদযাত্রার এই সময়ে এই প্রতিবাদ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে রাষ্ট্র জনগণের - চতুর্দশ লুই যে নামে যে দেশেই ফিরে আসুক না কেন, জনগণের অধিকারের লড়াই অব্যাহত আছে। ব্যক্তিই রাষ্ট্র নয়, জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ হচ্ছে অধিকারের জন্যে সংগ্রামে শামিল হওয়া।

লেখক যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর। লেখাটি তার ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেয়া
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর