সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার অভিযোগে সৌদি আরবের আরো ৬ নাগরিককে অভিযুক্ত করেছে তুরস্ক। ইস্তাম্বুলে প্রসিকিউটররা এর মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন ও অন্য চারজনের বিরুদ্ধে ৫ বছর করে জেল দাবি করেছেন। তুরস্কের সরকারি বার্তা সংস্থা আনাদোলু’কে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি আরবের কনস্যুলেটের ভিতরে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় সৌদি আরবের ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে। তাকে হত্যা মিশনে সৌদি আরব থেকে একটি টিম যায় সেখানে। হত্যা করে জামাল খাসোগির লাশ কি করা হয়েছে তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হয়ে কেউ বলতে পারেন না। এ অবস্থায় সোমবার ওই ৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে দু’জন হলেন কনস্যুলেটের স্টাফ।
তারা ওই হত্যা মিশনের অংশ নেয়া টিমের অংশ ছিল। মিশন শেষ করে ওই মিশনের সবার সঙ্গে তারাও তুরস্ক ত্যাগ করে। অন্য চারজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে হত্যার নমুনা মুছে ফেলার জন্য। তারাও কেউ তুরস্কে নেই।
মিডিয়ার খবরে বলা হয়, ৫৯ বছর বয়সী জামাল খাসোগিকে হত্যার পর তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ টুকরো টুকরো করা হয়েছে। তারপর তা কনস্যুলেট ভবনের বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। এখনও জানা যায়নি তারপর কি হয়েছে। এ ঘটনায় আলাদা একটি মামলার কার্যক্রম শুরু হয় জুলাই মাসে। এতে হত্যার অভিযোগে অন্য ২০ সৌদি নাগরিকের অনুপস্থিতিতে ইস্তাম্বুল কোর্ট বিচার শুরু করে। এই মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাবেক সহযোগী। তুরস্কের প্রসিকিউটররা দাবি করেছেন, হত্যা মিশনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং নির্দেশ দিয়েছিলেন সৌদি আরবের গোয়েন্দা বিষয়ক উপপ্রধান আহমেদ আল আসিরি ও রয়েল কোর্টের মিডিয়া উপদেষ্টা সাউদ আল কাহতানি। ওদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগানের অভিযোগ, সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়েছে সৌদি আরব সরকারের ‘সর্বোচ্চ মহল’ থেকে। তবে তিনি সরাসরি কখনো ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করেন নি। আন্তর্জাতিক সমালোচনা জোরালো হওয়ার প্রেক্ষাপটে এই হত্যা মিশনে নির্দেশ দেয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন ক্রাউন প্রিন্স। তবে বলেন, তিনি এর পূর্ণাঙ্গ দায় নিচ্ছেন। ওদিকে সৌদি আরবে আলাদা মামলায় যাদেরকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছিল গত বছর রুদ্ধদ্বার বিচারের পর তার মধ্যে ৫ আসামীর শাস্তি মওকুফ করে তাদেরকে ২০ বছরের জেল দেয়া হয়।