বাংলারজমিন

ডিজিটাল হচ্ছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ট্রাফিক সিস্টেম

ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম থেকে

২০২০-১০-০৩

ডিজিটাল হচ্ছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ট্রাফিক সিস্টেম। এ জন্য চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে বসানো হচ্ছে ট্রাফিক সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (সিটিসি)। যেখানে বসে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ৮৫টি স্টেশন। এতে লোকবলও লাগবে মাত্র দু’জন!
এমন তথ্য জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সরদার সাহাদাত আলী। তিনি বলেন, রেলপথ মন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সিটিসি চালু হলে রেলওয়েতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। রেল সেবায় উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছাবে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ধারাবাহিকতায় এটিও একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
সূত্রমতে, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অধীনে ৮৫টি স্টেশন রয়েছে। এসব স্টেশনে কর্মরত আছেন ৮৫ জন স্টেশন মাস্টার। এছাড়া সহকারী স্টেশন মাস্টার, কেবিন স্টেশন মাস্টার, পয়েন্টম্যান, গেটম্যান ও শান্টিংম্যান পদের কর্মীরাও আছেন। তবে ট্রেন পরিচালনার কাজ সার্বক্ষণিক তদারকি করেন স্টেশন মাস্টার।
অর্থাৎ ট্রেনকে সিগন্যাল দেয়া, রেললাইন পরিবর্তন করা, এক বগির সঙ্গে আরেক বগি সংযুক্ত করা, বগির ত্রুটি থাকলে তা অন্য লাইনে সরিয়ে নিয়ে নতুন বগি সংযুক্ত করাসহ বিভিন্ন স্থানে লেভেল ক্রসিংগুলো নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন স্টেশন মাস্টার। তারা এসব কাজ করেন নিজে উপস্থিত থেকে। তাদের এসব কাজ ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় নিয়ে যাচ্ছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এই ৮৫টি স্টেশনের কাজ কম্পিউটারের মাধ্যমে পরিচালনা করতে পারবেন দু’জন কর্মকর্তা। যারা সেখানে বসে ট্রেনের অবস্থান, স্টেশন ইয়ার্ডের অবস্থা এবং লেভেল ক্রসিংগুলোর বাস্তব অবস্থা প্যানেলে দেখা যাবে। দূরনিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে ভিডিও ক্যামেরার (সিসিটিভি) মাধ্যমে লেভেল ক্রসিংগুলোর বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। শুধু তা-ই নয়, স্থানীয়ভাবে স্টেশন মাস্টার/কেবিন স্টেশন মাস্টার কর্তৃক স্টেশন সিগন্যালিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার সুবিধা থাকবে। সব স্টেশনের মধ্যে ডিজিটাল/আইপি টেলিফোনের সাহায্যে যোগাযোগের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও ডেডিকেটেড ক্লোজড লোপ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সিটিসি অপারেটর সংশ্লিষ্ট স্টেশন, গার্ড ও চালকের সঙ্গে তাৎক্ষণিক কথা বলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
সেপ্টেম্বরে ঢাকা থেকে রেলপথ পরিদর্শন অধিদপ্তরের রেল পরিদর্শক অসীম কুমার তালুকদার এই সিস্টেমটি পরিদর্শন করেন। অসীম কুমার তালুকদার বলেন, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের পরীক্ষামূলক ট্রেন পরিচালনা করা হচ্ছে। ট্রেন পরিচালনাকারীদের স্টেশন সিগন্যালিং ব্যবস্থা, লেভেল ক্রসিংগুলোতে সরাসরি পরিচালনাসহ ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করার ক্ষেত্রে সক্ষম করে তোলা হচ্ছে। এ জন্য স্টেশন মাস্টার না হলেও চলে। তবে এটি আমাদের দেশে নতুন। যেহেতু আমরা নতুন চালাবো সেজন্য কিছু কিছু স্টেশন মাস্টার থাকবে। আগামী ৪ মাসের জন্য আমরা সিটিসির মাধ্যমে ট্রেন পরিচালনা কার্যক্রম চালু করবো। যা এক সপ্তাহের মধ্যে শুরু করা হবে। তারপর বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে আরও আপগ্রেড করবো।
তিনি বলেন, বর্তমানে অনেক জায়গায় সিটিসির ক্যাবল কেটে ফেলা হচ্ছে। লোকজন রাস্তা পারাপার হওয়ার সময় কানেকশন অনেক সময় কেটে যায়। আমি বিভিন্ন দেশে গেছি, সেখানে ক্যাবল কেটে যাওয়ার সমস্যা নেই। আমাদের দেশে রেললাইনের ওপর দিয়ে মানুষ যাতায়াত করে, অন্য দেশে তা নেই। আমরা এ সিস্টেমটি চালু করবোই।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাদেকুর রহমান বলেন, সিটিসির আওতায় চট্টগ্রাম, কালিদহ, হাছানপুর, চিনকি আন্তানা, ফেনী জংশন, নাঙ্গলকোট, মুহূরিগঞ্জ, শর্শদি, নাওটি, ফাজিলপুর, গুণবতি ও লাকসাম জংশনে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালানো হয়েছে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সব স্টেশন ক্রমান্বয়ে সিটিসিতে নিয়ে আসা হবে। সিস্টেমটি অনেক ভালো। চালু হলে যুগান্তকারী পরিবর্তন হবে। তিনি বলেন, এই ডিজিটাল সিস্টেম উন্নত দেশে রয়েছে। সিস্টেমটি চালু হলে স্টেশন মাস্টারসহ ট্রেন পরিচালনায় জড়িত কোনো কর্মচারীর প্রয়োজন হবে না। দু’জন সিটিসি কর্মকর্তার মাধ্যমে সবকিছু পরিচালনা করা যাবে। তবে রেলওয়ে মনে করলে সিটিসিতে আরো কয়েকজনকে দিয়ে কাজ করাতে পারবেন।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status