বাংলারজমিন
ফেনীতে ১০ দিনে ৯ ধর্ষণ
ফেনী প্রতিনিধি
২০২০-১০-১৩
ফেনীতে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা। প্রতিদিনই জেলার কোনো না কোনো উপজেলায় ধর্ষণ বা ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় মামলা দায়ের হচ্ছে। চলতি অক্টোবরের প্রথম ১০ দিনে জেলায় ধর্ষণের ঘটনায় ৯টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় একজন জনপ্রতিনিধি ও কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১২ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। ওইসব মামলায় পলাতক রয়েছে আরো কয়েক আসামি। গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে বহিষ্কার করেছে দল। ফেনী পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী জানান, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে জেলায় ৪৬টি ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ বিভিন্ন সময়ে এসব মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করেছে। মামলার বেশির ভাগ ভিকটিমরা আদালতে তাদের জবানবন্দি দিয়েছে। ছাগলনাইয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান জানায়, গত ৫ই অক্টোবর মহামায়া ইউয়িনের উত্তর যশপুর গ্রামে ৪ বছরের এক শিশুকন্যাকে চিপসের লোভ দেখিয়ে ধর্ষণ করে আপন চাচা ইমন বাদশা। ওই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার বিকালে শিশুটির মা বাদী হয়ে বাদশাকে আসামি করে ছাগলনাইয়া থানায় মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় ৯ই অক্টোবর চাচা ইমন বাদশাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ইমন ওই ইউনিয়নের উত্তর যশপুর গ্রামের উত্তর পাড়ার রবিউল হক কন্ট্রাক্টরের ছেলে। এর আগে ছাগলনাইয়া উপজেলায় কয়েক মাস আগে এক কিশোরী (১৭)কে ধর্ষণ করে একই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফজলুল করিম বাবু। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় ইউপি মেম্বার সবুজসহ অন্যরা সালিশ-মীমাংসার মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। গত মঙ্গলবার ওই কিশোরী বাদী হয়ে ছাগলনাইয়া থানায় মামলা দায়ের করে। কিশোরীকে ধর্ষণ ও এ কর্মকাণ্ডে সহায়তার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গত ৬ই অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে এক ইউপি সদস্যসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ধর্ষক ফজলুল করিম বাবু, সহযোগী রেজিয়া বেগম, রাবেয়া আক্তার মুক্তা, আবুল হোসেন ও নুরুল করিম চৌধুরী ওরফে সবুজ মেম্বার রয়েছে। সবুজ উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। গ্রেপ্তারকৃত আবুল হোসেন ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। নুরুল করিম চৌধুরী ওরফে সবুজ মেম্বার ছাগলনাইয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক। একই উপজেলায় দুই শিশু বলাৎকার’র (ধর্ষণ) ঘটনায় দারুল কোরআন একাডেমির হাফেজ আবু নাছেরকে (২৬) আসামি করে গত সোমবার ছাগলনাইয়া থানায় মামলা দায়ের করে এক শিশুর অভিভাবক। মামলায় উল্লেখ করা হয় লম্পট শিক্ষক গত জুলাই মাসের ৭ তারিখ ও ২৯ তারিখ ওই দুই শিশুকে বলাৎকার করে। ওই মামলায় গত সোমবার রাতে হাফেজ আবু নাছেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হাফেজ আবু নাছের নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার রসুলপুর ইউপি’র দক্ষিণ লতিফপুর রমিজ উদ্দিন হাজী বাড়ির মো. ওবায়দুল হকের ছেলে।
সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজেদুল ইসলাম জানান, সোনাগাজীর মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ভাদাদিয়া গ্রামে চলতি মাসের ১ তারিখ সকালে প্রাইভেট পড়তে যাবার সময় জোর করে বাজারের নিজ দোকানে নিয়ে ৭ম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে জ্যাঠা তমিজ উদ্দিন নয়ন (৪৫)। ওই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নয়নকে আসামি করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় ৮ই অক্টোবর মধ্যরাতে মতিগঞ্জ ভাদাদিয়া গ্রামের চুনি মাঝি বাড়ি থেকে জ্যাঠা নয়নকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তমিজ উদ্দিন নয়ন চুনি মাঝির নতুন বাড়ির সৈয়দ আহাম্মদের ছেলে ও ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
ওই ঘটনায় আসামি তমিজ উদ্দিন নয়নের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার তমিজ উদ্দিন নয়নকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। অনৈতিক কাজে জড়িত থাকায় ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে নয়নকে দলের সকল স্তরের সদস্য পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে মতিগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইসমাইল জানান।
ফুলগাজী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কুতুব উদ্দিন জানান, ফুলগাজীর মুন্সিরহাট ইউনিয়নের কামাল্লা গ্রামের এক বিধবা (৪৮) নারী গত মঙ্গলবার ভোরে ফজরের নামাজ পড়তে অজু করতে বের হলে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা প্রতিবেশী মন্টু মিয়া (২৬) ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে মন্টু মিয়াকে আসামি করে ফুলগাজী থানায় মামলা দায়ের করে। ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় গত ৭ই অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় কামাল্লা গ্রাম থেকে মন্টু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মন্টু মিয়া উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের কামাল্লা গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে।
দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম শিকদার জানান, দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের সালাম নগর গ্রামে ১লা অক্টোবর রাতে প্রতিবেশী এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ঘরে আসতে বলে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ। ভুক্তভোগী ওই নারী গত ৫ই অক্টোবর সোমবার রাতে শেখ ফরিদকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করে। শেখ ফরিদ মাতুভূঞা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সালাম স্মৃতি জাদুঘর এর কেয়ারটেকার। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে।
অনৈতিক কাজে জড়িত থাকায় ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শেখ ফরিদকে দল থেকে বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবদীন মামুন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
একই উপজেলায় দাগনভূঞার পূর্ব চন্দ্রপুর মডেল ইউনিয়নের বৈঠার পাড় গ্রামে চতুর্থ শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রী ভাতিজিকে (১০) ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে চাচা কবির আহাম্মদ (৩৮) ও সালিশদার কামাল উদ্দিনকে (৪৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার বিকালে তাদের আটক করলেও মাদ্রাসাছাত্রীর মা’র দায়ের করা মামলায় রাতে তাদের গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। গত ৪ঠা অক্টোবর বাড়ির বাইরে খেলতে গেলে মেয়েকে ফুসলিয়ে পার্শ্ববর্তী খাল পাড়ে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান ভ্যানচালক কবির আহাম্মদ। স্থানীয় সালিশদার কামাল হোসেন সামাজিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা করবেন বলে অভিযুক্ত কবিরের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা নিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন।
ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, ফেনী শহরের একাডেমি বনানীপাড়া এলাকায় বস্তিতে ৩ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়ায় তার মা বাদী হয়ে গত ২রা অক্টোবর প্রতিবেশী রাজমিস্ত্রী শহীদুল ইসলামকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করে। সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের কোনো একদিন বনানী পাড়া এলাকার পুরাতন রেললাইন সংলগ্ন ডুবাই ট্রাস্টের বস্তিতে ৩ বছরের শিশু কন্যাকে একা পেয়ে শহীদুল ইসলাম নামের এক রাজমিস্ত্রি ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন শিশুটির মা। ওই ঘটনায় পুলিশ শিশুটির প্রাথমিক জবানবন্দি গ্রহণ ও পরনের প্যান্ট উদ্ধার করে। গত ৪ঠা অক্টোবর ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দিতে শিশুটি ঘটনার জন্য মামলার আসামি শহীদুলের নাম উল্লেখ করতে না পারলেও সুমাইয়ার বাবাকে (শহীদুল ইসলাম) এ ঘটনার জন্য দায়ী করে।
তবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির নমুনা পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে ৯ই অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এমরান হোসেন গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শহীদুল ইসলাম পলাতক রয়েছে।
একই উপজেলায় অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আব্দুল্লাহ আল রেজবী জাবেদকে কক্সবাজারের একটি হোটেল থেকে ৩রা অক্টোবর শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত জাবেদ সদর উপজেলার ছনুয়া গ্রামের মুন্সি পুকুর এলাকার শহীদুল্লাহ’র ছেলে। গত ১৯শে সেপ্টেম্বর ছাগলনাইয়ার দুর্গাপুর গ্রামের বাড়ি থেকে মায়ের সঙ্গে ওই স্কুলছাত্রী শহরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা দুই যুবক ফেনী শহরতলীর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে তাদের গাড়ির গতিরোধ করে। স্কুল ছাত্রীকে জোরপূর্বক গাড়ি থেকে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় অপহৃতার ভাই ফাহিমুল হক রবিন বাদী হয়ে আবদুল্লাহ আল রেজভী জাবেদের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। ১৪ দিন পর কক্সবাজার থেকে উদ্ধার হয় অপহৃত স্কুলছাত্রী। ৪ঠা অক্টোবর রোববার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে ওই স্কুলছাত্রী। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দিতে ছাত্রী জানায়-অপহরণকারী আব্দুল্লাহ আল রেজবী জাবেদ তাকে হোটেলে আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে।
সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজেদুল ইসলাম জানান, সোনাগাজীর মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ভাদাদিয়া গ্রামে চলতি মাসের ১ তারিখ সকালে প্রাইভেট পড়তে যাবার সময় জোর করে বাজারের নিজ দোকানে নিয়ে ৭ম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে জ্যাঠা তমিজ উদ্দিন নয়ন (৪৫)। ওই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নয়নকে আসামি করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় ৮ই অক্টোবর মধ্যরাতে মতিগঞ্জ ভাদাদিয়া গ্রামের চুনি মাঝি বাড়ি থেকে জ্যাঠা নয়নকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তমিজ উদ্দিন নয়ন চুনি মাঝির নতুন বাড়ির সৈয়দ আহাম্মদের ছেলে ও ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
ওই ঘটনায় আসামি তমিজ উদ্দিন নয়নের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার তমিজ উদ্দিন নয়নকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। অনৈতিক কাজে জড়িত থাকায় ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে নয়নকে দলের সকল স্তরের সদস্য পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে মতিগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইসমাইল জানান।
ফুলগাজী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কুতুব উদ্দিন জানান, ফুলগাজীর মুন্সিরহাট ইউনিয়নের কামাল্লা গ্রামের এক বিধবা (৪৮) নারী গত মঙ্গলবার ভোরে ফজরের নামাজ পড়তে অজু করতে বের হলে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা প্রতিবেশী মন্টু মিয়া (২৬) ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে মন্টু মিয়াকে আসামি করে ফুলগাজী থানায় মামলা দায়ের করে। ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় গত ৭ই অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় কামাল্লা গ্রাম থেকে মন্টু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মন্টু মিয়া উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের কামাল্লা গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে।
দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম শিকদার জানান, দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের সালাম নগর গ্রামে ১লা অক্টোবর রাতে প্রতিবেশী এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ঘরে আসতে বলে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ। ভুক্তভোগী ওই নারী গত ৫ই অক্টোবর সোমবার রাতে শেখ ফরিদকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করে। শেখ ফরিদ মাতুভূঞা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সালাম স্মৃতি জাদুঘর এর কেয়ারটেকার। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে।
অনৈতিক কাজে জড়িত থাকায় ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শেখ ফরিদকে দল থেকে বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবদীন মামুন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
একই উপজেলায় দাগনভূঞার পূর্ব চন্দ্রপুর মডেল ইউনিয়নের বৈঠার পাড় গ্রামে চতুর্থ শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রী ভাতিজিকে (১০) ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে চাচা কবির আহাম্মদ (৩৮) ও সালিশদার কামাল উদ্দিনকে (৪৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার বিকালে তাদের আটক করলেও মাদ্রাসাছাত্রীর মা’র দায়ের করা মামলায় রাতে তাদের গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। গত ৪ঠা অক্টোবর বাড়ির বাইরে খেলতে গেলে মেয়েকে ফুসলিয়ে পার্শ্ববর্তী খাল পাড়ে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান ভ্যানচালক কবির আহাম্মদ। স্থানীয় সালিশদার কামাল হোসেন সামাজিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা করবেন বলে অভিযুক্ত কবিরের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা নিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন।
ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, ফেনী শহরের একাডেমি বনানীপাড়া এলাকায় বস্তিতে ৩ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়ায় তার মা বাদী হয়ে গত ২রা অক্টোবর প্রতিবেশী রাজমিস্ত্রী শহীদুল ইসলামকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করে। সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের কোনো একদিন বনানী পাড়া এলাকার পুরাতন রেললাইন সংলগ্ন ডুবাই ট্রাস্টের বস্তিতে ৩ বছরের শিশু কন্যাকে একা পেয়ে শহীদুল ইসলাম নামের এক রাজমিস্ত্রি ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন শিশুটির মা। ওই ঘটনায় পুলিশ শিশুটির প্রাথমিক জবানবন্দি গ্রহণ ও পরনের প্যান্ট উদ্ধার করে। গত ৪ঠা অক্টোবর ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দিতে শিশুটি ঘটনার জন্য মামলার আসামি শহীদুলের নাম উল্লেখ করতে না পারলেও সুমাইয়ার বাবাকে (শহীদুল ইসলাম) এ ঘটনার জন্য দায়ী করে।
তবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির নমুনা পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে ৯ই অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এমরান হোসেন গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শহীদুল ইসলাম পলাতক রয়েছে।
একই উপজেলায় অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আব্দুল্লাহ আল রেজবী জাবেদকে কক্সবাজারের একটি হোটেল থেকে ৩রা অক্টোবর শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত জাবেদ সদর উপজেলার ছনুয়া গ্রামের মুন্সি পুকুর এলাকার শহীদুল্লাহ’র ছেলে। গত ১৯শে সেপ্টেম্বর ছাগলনাইয়ার দুর্গাপুর গ্রামের বাড়ি থেকে মায়ের সঙ্গে ওই স্কুলছাত্রী শহরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা দুই যুবক ফেনী শহরতলীর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে তাদের গাড়ির গতিরোধ করে। স্কুল ছাত্রীকে জোরপূর্বক গাড়ি থেকে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় অপহৃতার ভাই ফাহিমুল হক রবিন বাদী হয়ে আবদুল্লাহ আল রেজভী জাবেদের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। ১৪ দিন পর কক্সবাজার থেকে উদ্ধার হয় অপহৃত স্কুলছাত্রী। ৪ঠা অক্টোবর রোববার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে ওই স্কুলছাত্রী। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দিতে ছাত্রী জানায়-অপহরণকারী আব্দুল্লাহ আল রেজবী জাবেদ তাকে হোটেলে আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে।