× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চেঙ্গিস খানের পশ্চিম দিকে যাত্রা

দেশ বিদেশ

ওমর খালেদ রুমি
১৫ অক্টোবর ২০২০, বৃহস্পতিবার

পামির মালভূমি এশিয়ার পূর্ব এবং পশ্চিমের মাঝখানে দুর্ভেদ্য দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল হাজার হাজার বছর ধরে। চেঙ্গিস খান তাই মঙ্গোলিয়া এবং তার চারপাশে অর্থাৎ গোবী মরুভূমি এলাকায় তার সাম্রাজ্য বিস্তারে ব্যস্ত ছিলেন। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তিনি জানতেনও না পর্বতের ওপারে কী আছে। ক্যাথি জয় করার পর তার আত্মবিশ্বাস সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। ঠিক এই সময়ে দক্ষিণ-পশ্চিম আরব থেকে আগত বণিকদের মাধ্যমে পশ্চিম সম্পর্কে অবগত হন। এসব আরব বণিকরা বাণিজ্যের আশায় বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে পামির মালভূমির উত্তর দিক দিয়ে সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে উত্তর-পূর্ব দিকের গোবীর সমতলে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে যেত। চেঙ্গিস খান মুসলমান ব্যবসায়ীদের তার সাম্রাজ্যের পণ্য নিয়ে পশ্চিমে আরব দেশে ব্যবসায়ের জন্য পাঠাতেন। পামিরের পার্বত্য এলাকায় তখন অবস্থান করছিলেন চেঙ্গিস খানের দূরদর্শী সেনাপতি খেপ নয়ন।
চেঙ্গিস খান তাকে বললেন পর্বতের ভেতর দিয়ে কীভাবে পশ্চিমে যাওয়া যায় তার পথ বের করতে। খেপ নয়ন তাকে জানালেন পর্বতের ভেতর দিয়ে ওপাশে যাওয়ার দুটো পথ আছে। চেঙ্গিস খান খবর নিয়ে জানতে পারলেন পর্বতের ওপারে আরেকজন বিশাল ক্ষমতাধর শাসক রয়েছেন। তিনি খাওয়ারিজামের শাহ আলাউদ্দিন মোহাম্মদ। তিনি শাহের কাছে ব্যবসার প্রস্তাব পাঠালেন। কিছুদিন পর্যন্ত ব্যবসা-বাণিজ্য ভালোই চলছিলো। এক পর্যায়ে তিনি একটি বিরাট কাফেলা পাঠালেন শাহের সঙ্গে দেখা করতে। সঙ্গে দিলেন বহু মূল্যবান উপহার সামগ্রী। এর মধ্যে ছিল সাদা ঘোড়ার লোমে তৈরি ভারী শীতের পোশাক ও মূল্যবান রত্ন। কিন্তু কাফেলা শাহের রাজ্যে প্রবেশ করতেই চারদিকে গুজব ছড়িয়ে পড়লো কাফেলার মধ্যে মোঙ্গলদের পাঠানো গুপ্তচর রয়েছে। শাহের গভর্নর ইনাল জুক অগ্রপশ্চাদ না ভেবেই কাফেলার ওপর আক্রমণ চালালেন এবং সবাইকে বন্দি করলেন। তিনি শাহের কাছে খবর পাঠালেন। শাহ নিজেও কোনো কিছু না ভেবেই তাদেরকে হত্যা করার আদেশ দিলেন। খবর পৌঁছে গেল চেঙ্গিস খানের কাছে। চেঙ্গিস খান আলোচনার জন্য তার দরবারের গুরুত্বপূর্ণ মুসলমান সদস্যদের দূত হিসেবে প্রেরণ করলেন। নির্বোধ ইনাল জুক প্রধান দূতকে হত্যা করলেন এবং অন্য মুসলিমদের দাড়ি পুড়িয়ে দিলেন। অপমানিত দূতরা যখন চেঙ্গিস খানের কাছে পৌঁছালো তখন তার মাথায় খুন চেপে গেল। তিনি দূত হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। সমস্ত গোত্রপতিদের খবর দেয়া হলো। কয়েক লক্ষ দুর্ধর্ষ মোঙ্গল যোদ্ধার এক বিরাট বাহিনী নিয়ে শিগগিরই পশ্চিম অভিমুখে রওনা হলেন তিনি।  চেঙ্গিস খানের ভাগ্য ভালো তখন পাহাড়ে কোনো বরফ ছিল না। চেঙ্গিস খানের বাহিনী প্রথমে বোখারায় হামলা চালিয়ে বোখারাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিলেন। খবর পাওয়া গেল খাওয়ারিজমের শাহ সমরকন্দে আশ্রয় নিয়েছেন। চেঙ্গিস ছুটলেন সমরকন্দের দিকে। দেখতে দেখতে স্বপ্নের শহর সমরকন্দও বোখারার মতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো। এরপর শাহ একে একে মার্ভ, নিশাপুর হয়ে কাস্পিয়ান সাগরের দিকে ছুটলেন। চেঙ্গিস খানও তার পেছনে পেছনে ছুটলেন। একের পর এক মাটিতে মিশিয়ে দিলেন মার্ভ ও নিশাপুরের মতো মূল্যবান শহর। পলায়নপর শাহ অবশেষে আশ্রয় নিলেন কাস্পিয়ান সাগরের এক দ্বীপে। নিজের শরীরের অবস্থা এতোটাই ভেঙে গিয়েছিলো যে, শাহের বুঝতে বাকি থাকলো না যে, তার হাতে খুব বেশি সময় নেই।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর