× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ উপনির্বাচন /একই ঘরানার দুই প্রার্থী নানা কৌতূহল

শেষের পাতা

ইমাদ উদ দীন, মৌলভীবাজার থেকে
১৯ অক্টোবর ২০২০, সোমবার

প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা শেষ। কাল মঙ্গলবার নির্বাচন। জেলাজুড়ে ভোটার ও জনসাধারণের মাঝে যেমন রয়েছে কৌতূহল তেমনি ভোট নিয়ে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় প্রার্থী ও ভোটাররা। এমনটি জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থীর বিরামহীন প্রচারণা শেষে এখন ফলাফলের প্রতীক্ষায়। কে হচ্ছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমন আলোচনা সবার মুখে মুখে। এই নির্বাচন নিয়ে প্রথমদিকে তেমন একটা কৌতূহল বা আলোচনা দেখা না গেলেও শেষমেশ ভোটার ও জেলার সর্বস্তরের নাগরিকদের মধ্যে বেশ জমজমাট আলোচনা চলছে। এর অন্যতম কারণ দুই প্রার্থী একই ঘরানার।
এই উপনির্বাচনে বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোট বা অন্য কোনো দলের প্রার্থী অংশ নেননি। তাই একই দলের দুই প্রার্থী ভোটের মাঠে রয়েছেন বেশ সক্রিয়। জেলা পরিষদ নির্বাচন হলো দলীয় প্রতীকবিহীন বা দলনিরপেক্ষ নির্বাচন। কিন্তু তারপরও ঘুরে ফিরে স্থানীয় পর্যায়ে জেলা পরিষদের নির্বাচনী আলোচনায় স্থান পায় দলীয় পরিচয়। চশমা প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে এই উপনির্বাচনে লড়ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ও ব্যবসায়ী আলহাজ মিছবাহুর রহমান। আর মোটরসাইকেল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, সাবেক বৃটিশ কাউন্সিলর, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও গেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আলহাজ এম এ রহিম (সি.আই.পি)। একই দলের দুইজন প্রার্থী হওয়ায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা পড়েছেন বিপাকে। তবে জেলা ও উপজেলার অধিকাংশ নেতা নিজেদের পদ-পদবি রক্ষায় রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দল মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে। তবে অনেক নেতাই ফটোসেশনের জন্য দলীয় মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে থাকলেও গোপনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। ভোট বৈতরণী পার হতে তাকে নানা পরামর্শ ও কৌশল জানাচ্ছেন। তবে দুজনই সরকারদলীয় প্রার্থী এবং এর মধ্যে একজন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন ভোটার ও সর্বস্তরের জনসাধারণ। ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দুই প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি বক্তব্য ও মাঠের সার্বিক অবস্থা অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সবার উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বাড়াচ্ছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দল মনোনীত চশমা প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ মিছবাহুর রহমান ১৭ই অক্টোবর গণমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করে বলেছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ এম এ রহিম (সি.আই.পি) তার গাড়িতে সরকারি স্টিকার লাগিয়ে ও অনৈতিক ভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। নানাভাবে আর্থিক টোপে ফেলছেন। এবং ভোটারদেরকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করছেন। সে বিষয়ে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন- তার ওপর নানা মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। এর প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিশ্বাসী। সে হিসেবে তিনি দলের একজন প্রার্থী ও দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক। তাই তিনি দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনেই কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তিনিও চান অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ এম এ রহিম (সি.আই.পি) ১৮ই অক্টোবর গণমাধ্যমে প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করে বলেছেন, দলনিরপেক্ষ এ নির্বাচনে সম্মানিত প্রতিদ্বন্দ্বী চশমা প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ মিছবাহুর রহমান নানাভাবে দলীয় পদ-পদবিধারী লোকজন দিয়ে ভোটারদেরকে হুমকি ধমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। নির্বাচনের শুরু থেকে এখনো জেলার বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়র সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভোটারদের ভয়ভীতির মাধ্যমে ওই প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। অথচ তার বৈধ গাড়িতে কোনো পোস্টার, ব্যানার লাগিয়ে প্রচারণা চালাতে পারেন না তাদের বাধার কারণে। তিনি বলেন- তার ব্যবহৃত গাড়ি নিয়ে প্রচারণা তো দূরের কথা পোস্টার, ব্যানার ওই প্রার্থীর নির্দেশে তার কর্মীরা সারা জেলায় তা ছিঁড়ে ফেলছে। প্রার্থী নিজেই  ভোটারদের আসন্ন ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ও পদ-পদবির টোপে ফেলে নিজের নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে নানা অপকৌশল চালাচ্ছেন। নানা মিথ্যা, অসত্য ও মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করে তাকে হেয়প্রতিপন্ন করছেন। নিশ্চিত ভরাডুবির আশঙ্কায় তাদের এমন পেশীশক্তি প্রদর্শনমূলক কর্মকাণ্ডে ভোটারসহ জেলাবাসীর মধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে নানা অজানা শঙ্কার সৃষ্টি হচ্ছে। তাদের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের বিষয়ে তিনি লিখিত ও মৌখিক রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মৌলভীবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র‌্যাবসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকেই অবগত করেছেন। তিনি বলেন- তাদের আচরণে ১৫টি ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ বলে তিনি মনে করছেন। তাই অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ভোট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রগুলোতে একজন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েনের জোর দাবি জানান। জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ৭টি উপজেলায় ৬৭টি ইউনিয়ন ও ৫টি পৌরসভা নিয়ে গঠন করা হয়েছে ১৫টি ওয়ার্ড। এর মধ্যে (নির্বাচকমণ্ডলী) ভোটার সংখ্যা হচ্ছেন ৯৪৩ জন। মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৫টি।  ২০শে অক্টোবর হবে নির্বাচন। উল্লেখ্য, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের  চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আজিজুর রহমান ১৮ই আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর