ভোলাহাটে জলমহালের ইজারাদার পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দেয়ায় পানির নিচে ৬শ’ বিঘা জমির ধান তলিয়ে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। উপজেলার মুশরীভূজার ৭৫ জন ভুক্তভোগী কৃষক গত ১৫ই অক্টোবর স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কৃষি অফিসার, মৎস্য অফিসার বরাবর প্রতিকার চেয়ে অভিযোগপত্র প্রদান করেছেন। অভিযোগপত্রে জানা যায়, মুশরীভূজা, চামামুশরীভূজা, নামোমুশরীভূজা, ঘাইবাড়ী, বারইপাড়া, জাগলবাড়ী ও রঘুনাথপুর মৌজার প্রায় ৬শ’ বিঘা জমির আউশ ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফলে ১০-১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিলভাতিয়া জলমহল ইজারাদার সোনাজোলের ব্রিজের নিচে বালির বস্তা ফেলে বাঁধ দিয়ে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দেয়। ফলে রোপণ করা আউশ ধান তলিয়ে যায়। পানি নিষ্কাশন বন্ধ না থাকলে দ্রুত ধানগাছগুলো জেগে উঠতো। কিন্তু জলমহাল ইজারাদারেরা ব্যক্তিগতভাবে লাভবানের আশায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ করায় পানি নেমে যেতে পারেনি।
ফলে প্রায় ৬শ’ বিঘা জমির আউশ ধান পানির নিচে থাকায় তাদের ছাড়া রাক্ষসী মাছ ধানগুলো খেয়ে নিশ্চিহ্ন করে ফেলেছে। এত ভুক্তভোগী কৃষকরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন। ভুক্তভোগী কৃষক লোকমান আলী জানান, ধান নষ্ট হওয়ায় এ এলাকার প্রায় ১শ’ পরিবারের ৫শ’ মানুষকে না খেয়ে মরতে হবে। বিলভাতিয়া ইজারাদারদের কারণে তাদের ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। অপর একজন কৃষক মেজারুল হক জানান, রাক্ষসী মাছে তাদের সব ধান খেয়ে শেষ করে ফেলেছে। আশায় বুক বেঁধে ধান রোপণ করে ডালভাত খেয়ে সংসারের সদস্যদের নিয়ে বাঁচতাম। কিন্তু ইজারাদারদের কারণে আজ সর্বস্বান্ত। তিনি ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। রজব আলী জানান, ঘরে একটি ধানও তুলতে পারবো না। সব খেয়ে শেষ করেছে রাক্ষসী মাছে। পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দেয়ার ক্ষমতা নেই বলে কেঁদে ফেলেন। এদিকে বিলভাতিয়ার ইজারাদার বজলুর রহমানের পার্টনার জেমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাঁধ দিয়ে পানি নিষ্কাশন বন্ধের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ব্রিজে কোনো বাঁধ দেয়া হয়নি এবং যেসব ধানের জমি ডুবে আছে সেগুলো প্রপোজালেল জমি। সরকার জলাশয়ের জন্য লাল কালি দিয়ে বাতিল করেছে। ভুক্তভোগী কৃষকের অভিযোগের ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার আসাদুজ্জাবান অভিযোগপত্রটি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে সমন্বয় করে সরজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।