× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সন্ধ্যা আরতির পর বন্ধ থাকবে পূজামণ্ডপ

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২২ অক্টোবর ২০২০, বৃহস্পতিবার

করোনা মহামারির জন্য কিছুটা অনাড়ম্বরভাবে শুরু হলো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব দুর্গাপূজা। আজ ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে শঙ্কা আছে তাই উৎসব-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে শুধুমাত্র সাত্ত্বিক ভাবেই অনুষ্ঠিত হবে এবারের পূজা। অন্যান্য বছর রাত-দিন দর্শনার্থীদের জন্য মণ্ডপ খোলা থাকলেও এ বছর সন্ধ্যা আরতির পরপরই বন্ধ করতে হবে পূজামণ্ডপ। এছাড়া প্রতিমা বিসর্জনের দিন কোনো রকম শোভাযাত্রাও করা যাবে না। তবে বিধি মেনেই পূজার যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।
আজ থেকে ঢাকের বোল, চণ্ডী ও মন্ত্রপাঠ, কাঁসর ঘণ্টা, শঙ্খ আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠবে পূজামণ্ডপগুলো। এদিন বিল্ল বৃক্ষ অর্থাৎ বেলগাছতলে দেবীর আবাহন, সংকল্প ও ‘ত্রিণয়নী’ দুর্গা দেবীর ঘুম ভাঙিয়ে পূজার্চ্চনা সহযোগে আমন্ত্রণ ও অধিবাস অনুষ্ঠিত হবে।
আগামীকাল হবে মহাসপ্তমীবিহিত পূজা। এরপর শনিবার মহাষ্টমী, রোববার মহানবমী ও সোমবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে পূজার এ উৎসব শেষ হবে। সকল আচার অনুষ্ঠান পালন করতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
হিন্দু শাস্ত্র ও পূরাণ মতে, দুর্গাপূজার সঠিক সময় বসন্তকাল, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। কিন্তু ত্রেতা যুগে শ্রী রামচন্দ্র স্ত্রী সীতাকে রাবণের হাত থেকে উদ্ধারে আশ্বিন মাসে অর্থাৎ অকালে দেবী দুর্গাকে জাগ্রত করে পূজার্চ্চনার আয়োজন করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া সত্ত্বেও শরৎকালে দুর্গাপূজা প্রচলিত হয়ে যায়। তবে, বাংলা বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুসারে এবার আশ্বিন মাস ‘মলমাস’ হওয়ায় হেমন্ত ঋতু কার্ত্তিক মাসে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষিতে এবারের দুর্গাপূজা উদযাপনে আলোকসজ্জা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আরতি, প্রসাদ বিতরণ, মহাষ্টমীর দিনে অন্যতম আকর্ষণ কুমারী পূজা ও বিজয়া দশমীর আকর্ষণ শোভাযাত্রার আয়োজন থেকে বিরত থাকার নির্দেশনার পাশাপাশি পূজার্চ্চনার সকল কার্যক্রম স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালনের নির্দেশনা দিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ।
পরিষদের নেতারা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার সারা দেশে পূজার সংখ্যা কমেছে। এ বছর মোট ৩০ হাজার ২৩১টি স্থানে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। গতবারের চাইতে এবার ১ হাজার ১৮৫টি পূজা কম হচ্ছে। এ উপলক্ষে সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব, আনসার সদস্যদের পাশাপাশি আয়োজক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক টিম নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করবে।
এদিকে, গতকাল বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে এ বছর সন্ধ্যা আরতির পরপরই দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ করে দেয়া হবে সারা দেশের পূজামণ্ডপ। সন্ধ্যা আরতির পর আর কোনো দর্শনার্থী মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারবেন না। তবে পূজার সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তারা মণ্ডপের ভেতরে থাকতে পারবেন। এছাড়া নিজ নিজ উদ্যোগে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো রকম শোভাযাত্রা করা যাবে না। শুধুমাত্র একটি করে ট্রাকে প্রতিমা নিয়ে ঘাটে গিয়ে বিসর্জন করতে হবে। এর আগে গত সপ্তাহে পূজা কমিটির আরেক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারবেন। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে সরকারের সতর্কতার পর নতুন করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী মানবজমিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠকে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ নিয়ে জনগণকে সচেতন করেছেন। মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলেছেন, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা বলেছি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজামণ্ডপে যেতে পারবে। তবে তার সঙ্গে আমরা নতুন নির্দেশনা যুক্ত করেছি। পূর্বের নির্দেশনায় ছিল রাত ৯টায় পূজামণ্ডপ বন্ধ রাখতে হবে। নতুন নির্দেশনায় সময়টা আরো এগিয়ে এনেছি। সন্ধ্যা আরতির পর সারা দেশের পূজামণ্ডপে আর কোনো দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবে না। সন্ধ্যার পর দর্শনার্থীর জন্য মণ্ডপ বন্ধ থাকবে। তবে যারা পূজার সঙ্গে যুক্ত তারা পূজা মণ্ডপের ভেতরে থাকতে পারবেন। সাধারণ দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, এছাড়া বৈঠকে প্রতিমা বিসর্জনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতিমা বিসর্জনের সময় কোনো শোভাযাত্রা হবে না। যাদের প্রতিমা তাদেরকে ঘাটে নিয়ে যেতে হবে। নিজ উদ্যোগে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যান্য বছর আমরা দুই শতাধিক ট্রাক নিয়ে শোভাযাত্রা করি। প্রতিটা প্রতিমার সঙ্গে আরো বাড়তি ৫-৬টি ট্রাক থাকে। কিন্তু এ বছর যারা প্রতিমা ট্রাক থেকে নামাবে তারা ব্যতীত আর কেউ থাকতে পারবে না।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর