× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

করোনায় কর্মহীন এসএমই খাতের ৩৭% শ্রমিক

শেষের পাতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২২ অক্টোবর ২০২০, বৃহস্পতিবার

করোনার প্রভাবে দেশের এমএসএমই খাতের ৩৭ শতাংশ শ্রমিক স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে কাজ হারিয়েছেন। আর এ খাতের ৯৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের বিক্রি কমেছে ব্যাপকভাবে। পুরুষের তুলনায় নারীদের প্রতিষ্ঠান বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে। গত জুন ও আগস্ট মাসের মধ্যে বাংলাদেশের মাইক্রো বা  অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই) খাতের ওপর করোনার প্রভাব শীর্ষক এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক, কমনওয়েলথ এবং উন্নয়ন কার্যালয় (এফসিডিও) সঙ্গে অংশীদারিত্বে বিশ্বব্যাংক ও এর অঙ্গ সংস্থা আইএফসি এ জরিপ করে। এক ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে এ জরিপের তথ্য প্রকাশ করা হয়।
৫ শতাধিক এমএসএমই প্রতিষ্ঠানের ওপর পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, যারা কাজে আছেন তাদের ৭০ শতাংশই কাজ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। অনেক প্রতিষ্ঠান এখন অস্থায়ীভাবে বন্ধ বা আংশিক খোলা রয়েছে। করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর গড়ে এসব প্রতিষ্ঠানের ১০০ দিন পরিচালনার মতো নগদ অর্থ ছিল।
পরে তাদের নগদ প্রবাহে সমস্যা দেখা দেয়। বাংলাদেশে পুরুষের মালিকানাধীন ২১ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের তুলনায় নারীদের মালিকানাধীন ৩৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান অস্থায়ীভাবে বন্ধ ছিল। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার ৯২ শতাংশ, আফগানিস্তানের ৮৮, ভারতের ৮৬, নেপালের ৮৩ ও পাকিস্তানের ৬৮ শতাংশ উদ্যোক্তা ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর ৮০ শতাংশের বেশি ব্যবসায় লোকসান হয়েছে। মহামারির কারণে বিশেষ ফ্যাশন ও পোশাক ব্যবসায়ীদের এক-তৃতীয়াংশ বন্ধ ছিল। সব মিলিয়ে গত বছরের তুলনায় এবার ফ্যাশন ও পোশাকের বিক্রি ৬৫ শতাংশ কমেছে। বেশির ভাগ ব্যবসায়ী আগামী ছয় মাস বিক্রি ও চাকরির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন। আর ৭০ শতাংশ ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান আগামীতে ব্যবসা বৃদ্ধির বিষয়ে আশাবাদী নন।
বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এমএসএমই খাত। জিডিপি’র প্রায় ২৫ শতাংশ আসে এ খাতের মাধ্যমে। আবার ২ কোটির বেশি মানুষের কর্মসংস্থান এ খাতে। এ অবস্থায় পরিস্থিতির উন্নয়নে বাংলাদেশের জন্য আইএফসি সাড়ে ৭ কোটি ডলার এবং বিশ্বব্যাপী ৮০০ কোটি ডলার দিয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, অর্থনীতিকে স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে ভর্তুকি সুদে ঋণের কয়েকটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে এমএসএমই খাতে ২০ হাজার কোটি টাকা বিতরণের জন্য ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেয়া হয়েছে। মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ব্যাংকগুলো এ ঋণ বিতরণ করবে। ঋণের বেশির ভাগই উৎপাদন ও সেবা খাতে বিতরণ করা হচ্ছে। প্রণোদনার আওতায় বিতরণ করা ঋণের অন্তত ৫ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, আশার বিষয় হলো, স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে না। আইএফসি’র জরিপেও অস্থায়ীভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধের কথা বলা হয়েছে। এদের ভালোভাবে টিকিয়ে রাখতে বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠান যেন চাপে না পড়ে, সে জন্য চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত কেউ ঋণ পরিশোধ না করলেও তাকে খেলাপি করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো সঠিকভাবে ঋণ বিতরণ এবং সব ধরনের নিয়ম প্রতিপালন করছে কিনা নিয়মিতভাবে তা তদারকি করা হচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অরিজিৎ চৌধুরী বলেন, আগামী ৫ বছরে জিডিপিতে এমএসএমই খাতের অবদান ৩২ শতাংশে নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন কাজ করছে। এমএসএমই খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান, টেকসই সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। এ লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মের্সি টেম্বন বলেন, কোভিড-১৯ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের আয় ও চাকরির ওপর। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এমএসএমই উদ্যোগ এবং অর্থায়ন সমস্যা দূর করতে হবে। আইএফসি’র কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়েন্ডি ওয়ার্নার বলেন, মহামারি শুরুর আগে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ব্যবসা ঝুঁকির মধ্যে ছিল। প্রকৃত সমস্যা চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধানের দিকে এগোতে হবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন এমএসএমই খাতের প্রতিষ্ঠান ও এ খাতের কর্মসংস্থান রক্ষায় বাংলাদেশের উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর