× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

৩৫ টাকায়ও আলু বিক্রি করতে নারাজ ব্যবসায়ীরা

প্রথম পাতা

নূরে আলম জিকু
২২ অক্টোবর ২০২০, বৃহস্পতিবার

বাজার সিন্ডিকেট আর ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে আলুর দাম নিয়ে নৈরাজ্য থামছে না। দ্বিতীয় দফায় সরকারের বেঁধে দেয়া ৩৫ টাকা দামেও আলু বিক্রি হচ্ছে না বাজারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারের নির্ধারণ করা দামে আলু বিক্রি করা সম্ভব নয়। বাজারে যেসব আলু আছে তা সরকারের নির্ধারিত দামের চাইতে বেশি দরে কেনা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফার আশায় নিজেরা সিন্ডিকেট করছেন। আলু গুদামজাত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে অল্প অল্প করে বিক্রি করছেন। এতে একদিকে যেমন তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিল হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ ও সরকারকে বেকায়দায় ফেলছেন।
বুধবার রাজধানীর কাওরান বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, সরকারের বেঁধে দেয়া দামে কোথাও আলু বিক্রি করা হয়নি। উল্টো বাজারভেদে রয়েছে দামের ভিন্নতা। গতকাল থেকে ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি আলু ৩৫ টাকায় বিক্রি করার কথা থাকলেও তা মানতে নারাজ। এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে দেখা গেছে বাকবিতণ্ডা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাজারে আসা ক্রেতারা। এদিকে কাওরান বাজারের আড়তগুলোতে পাইকারি দামে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪১ থেকে ৪২ টাকায়। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৫০ টাকায়। মালিবাগ কাঁচাবাজার, রামপুরা বাজারে প্রতি কেজি আলু ৪৭-৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সরকারের বেঁধে দেয়া দামে তারা এখনো আলু পাননি। আগে বেশি দামে কেনা থাকায় আলু বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে। তবে সপ্তাহখানেকের মধ্যে সরকারের নির্ধারিত দামে আলু পেলে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। মালিবাগ রেললাইন সংলগ্ন মেসার্স ফুলমিয়া ট্রেডার্সে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা। সরকারের নির্ধারিত দামের চাইতে বেশি নেয়ার কারণ জানাতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী বলেন, আপনারা সরকার থেকে আলু নেন। সরকার বাজার চালায় না। সরকারকে বলেন কম দামে বিক্রি করতে। আমাদের তার চাইতে বেশি দামে কোল্ড স্টোরেজ থেকে কিনতে হচ্ছে। ব্যবসা করতে আসছি, লোকসান গুনতে আসি নাই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার দুই দফায় দাম নির্ধারণ করে দিলেও গতকাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সকল পাইকারি ও খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। আগের দামেই চলছে বেচাকেনা। কোথাও ব্যবসায়ীদের ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় আলু বিক্রি করতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার সারাদিন কাওরান বাজার আড়তে কোন আলু ছিলো না। কৃক্রিম সংকট তৈরি করছেন ব্যবসায়ীরা। এদিন বিকেলের দিকে কৃষিমন্ত্রী আলুর দাম ৩০ থেকে ৫ টাকা বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করলে সন্ধ্যার দিকে আড়তে বস্তা বস্তায় আলু আসে। রাতে সেই আলু ৪৬ টাকা থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হয়। সকাল খুচরা বাজারে ৩৫ টাকা দামে আলু বিক্রি করার কথা থাকলেও ৪৫/৪৬ টাকার নিচে বিক্রি হয়নি। গতকাল দেখা যায় প্রায় প্রতিটি আড়তেই রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমানে আলু। একতা বানিজ্যালয়, জনতা বানিজ্যালয়, বিক্রমপূর বাণিজ্যালয়সহ বড় বড় সব আড়ত থেকে পাইকারি ৪০ টাকায় দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। দু’একটি আড়তে আলু শূণ্য থাকলেও তারা বলছেন, কোল্ড স্টোরেজ থেকে সরকারের নির্ধারিত দামে আলু কেনা সম্ভব হচ্ছে না। কোল্ড স্টোরেজ থেকে আলু বের করছে না প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা। ফলে বাজারে যেসব আলু আছে তা, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বেশি দামেই ক্রয়-বিক্রয় করতে হচ্ছে।
কাওরান বাজারে বিসমিল্লাহ বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী আফজাল হোসেন মানবজমিনকে বলেন, আমার আড়তে গত চারদিন ধরে আলু নেই। সরকার যে দাম ঘোষণা করেছে, সেই দামে আলু আনার জন্য যোগাযোগ করছি। যদি পাই তাহলে সেই দামেই বিক্রি করবো। পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সিয়াম মানবজমিনকে বলেন, আজও কোল্ড স্টোরেজ থেকে ৩৯ টাকা দরে আলু কিনেছি। কাওরান বাজারে আসতে প্রতি কেজি আলুর দাম পড়ে ৪১ টাকা। সরকারের নির্ধারণ করা ৩৫ টাকা দামে আলু বিক্রি করবো কেমন করে। সরকার বাজার মনিটরিং করার আগে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেটকারী, যারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিলে এমনিতেই আলুর দাম কমে আসবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর