× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মাধ্যমিকেও অটোপাস / গ্রামের শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে পড়ার শঙ্কা

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২২ অক্টোবর ২০২০, বৃহস্পতিবার

চলতি বছর মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে নবম পর্যন্ত সকলেই পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে। শিক্ষার্থীদের শিখন ফলের ঘাটতি নিরুপণে নেয়া হবে অ্যাসাইনমেন্ট। এটি করতে নতুন পদ্ধতির সিলেবাস প্রণয়ন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী, মাধ্যমিকে সাপ্তাহিক অ্যাসাইনমেন্ট নেয়া হবে। ওদিকে পরীক্ষা না হওয়ায় গ্রামের শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রামের শিক্ষার্থীরা এমনিতে নানা কারণে বৈষম্যের শিকার। এর মধ্যে পরীক্ষা না হলে অনেকে পিছিয়ে পড়বে।
কারণ প্রত্যন্ত জনপদের অনেক শিক্ষার্থী এখন পাঠক্রমের বাইরে রয়েছে। যদিও শহরাঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে পাঠক্রমে যুক্ত আছে।
বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মূল্যায়নে কোনো চাপ সৃষ্টি করা হবে না। সার্বিক দিক বিবেচনা করে এনসিটিবি ৩০ কর্মদিবসের সিলেবাস প্রণয়ন করেছে। এগুলো পরবর্তী ক্লাসের জন্য কাজ করবে।
সব প্রধান শিক্ষকের নিকট এটি পাঠানো হবে। এ সংক্রান্ত অ্যাসাইনমেন্ট পৌঁছে দেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা প্রতি সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করবে। এগুলো অনলাইনেও নেয়া যাবে।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, এ সময়ে অন্য কোনো কার্যক্রম চলবে না। শিক্ষার্থীদের যেখানে দুর্বলতা থাকবে, সেগুলো পরবর্তী ক্লাসে পূরণ করা হবে। এটি ক্লাস মূল্যায়নে কোনো প্রভাব ফেলবে না। এ ছাড়াও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গ্রেড ছাড়া সনদ দেয়ার কথা জানানো হয়।
দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে এ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, ইবতেদায়ী সমাপনী, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) এবং উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষা বাতিল করা হয়। করোনার কারণে গত ১৭ই মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য অনলাইন ও টেলিভিশনে ক্লাস নেয়া হচ্ছে।
রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথ সাহা বলেন, এই মুহূর্তে যেহেতু স্কুলগুলো খুলছে না সেহেতু এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল হয়েছে, সেখানে স্কুল পর্যায়ে পরীক্ষা ছোট পর্যায়, তবুও ক্ষতি হয়েছে। এটা শিক্ষার্থীদের আঘাতের শামিল। কিন্তু করোনার বৈশ্বিক সমস্যায় মেনে নিতেই হবে। কিন্তু এরপরও নগরের শিক্ষার্থীদের থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে আছে। আমি আশা করি এই যে ক্ষতি হলো সামনের সময়টাতে এই ঘাটতি পূরণে আরো প্রযুক্তিনির্ভর যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ বিষয়ে এই স্কুলের শিক্ষার্থী রিয়াদ মাহমুদ বলেন, আমি শুরুতে টেলিভিশন ক্লাসে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করতাম। এরপর সেখানে যেমন বিদ্যুতের ভোল্টেজ কম। আবার নিয়মিত বিদ্যুৎ না থাকায় আর যুক্ত হতে পারছি না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার হাজী আঃ জলিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ূন কবির এই সিদ্ধান্তকে মন্দের ভালো হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এখন যেহেতু স্কুল খোলা সম্ভব হচ্ছে না। এরপরও যেহেতু অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হচ্ছে এটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু আমার স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন কাজে ইতিমধ্যে জড়িয়ে পড়েছে। তারা আর স্কুলে ফিরবে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ। শহরের শিক্ষার্থীরা স্কুল বন্ধ থাকলেও লেখাপড়ার মধ্যেই আছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে অধিকাংশ শিক্ষার্থী লেখাপড়ার সঙ্গে সম্পর্ক নেই।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মতিউর রহমান বলেন, শহরের বাচ্চাদের হাতে স্মার্টফোন সবার হাতে। তারা চাইলেই লেখাপড়ার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। গ্রামে একে তো স্মার্টফোন নেই, তার ওপর ইচ্ছারও অভাব রয়েছে। এই করোনাকালে গ্রামের বাচ্চারা অনেকটাই পিছিয়ে গেল।
বরিশাল জিলা স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক একরামুল আলম বলেন, শহরের শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা সচেতন। যেটা গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মাঝে কম দেখা যায়। যে যোগ্য সে মেধার স্বাক্ষর রাখবেই। আর যেহেতু বার্ষিক পরীক্ষা ছাড়া পাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার এটা নিশ্চয়ই সকলের মঙ্গলের জন্যই নিয়েছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ সৈয়দ মঞ্জুরুল হক বলেন, এই মুহূর্তে আসলে আমাদের বিকল্প নেই। এটা মন্দের ভালো। কারণ শূন্য থেকে এটা ভালো। এই সিদ্ধান্ত অনেক ভেবে চিন্তেই নেয়া হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার উপায় নেই। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের কথাও মাথায় রাখতে হবে। ৭০ শতাংশ স্কুলে মূল্যায়ন নেয়ার মতো অবস্থা নেই। সার্বিক দিক বিবেচনায় এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর