× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পীরগঞ্জে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব

বাংলারজমিন

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
২৩ অক্টোবর ২০২০, শুক্রবার

পীরগঞ্জে করতোয়া নদী ঘেঁষা টুকুরিয়া, বড় আলমপুর, চতরা, কাবিলপুর ও চৈত্রকোল ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের অর্ধশতাধিক স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন বালু উত্তোলন বন্ধে মাইকিং ও ১৪৪ ধারা জারি করা হলেও তা উপেক্ষা করে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে সংঘবদ্ধ চক্র। প্রতিদিন করতোয়া নদীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত মাহিন্দ্র ট্রলি, ১০ চাকার ট্রাক, ও ভারী যানবাহনে বালু উত্তোলন করে অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন বালুবাহী ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার সড়কগুলো ভেঙে চলার অযোগ্য হচ্ছে, তেমনি ভাঙছে আবাদি জমি, পুকুর পাড় এবং হুমকির মধ্যে পড়েছে অনেক গ্রামের ঘরবাড়ি। এ ছাড়া যানবাহন চলাচল করায় সড়কের আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকান, ঘরবাড়ি ধুলোবালিতে একাকার। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এ অবস্থা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে অর্ধশতাধিক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
সরজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর- দিনাজপুর জেলাকে বিভক্ত করে পীরগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও ঘোড়াঘাট উপজেলার ধার ঘেঁষে প্রবাহিত করতোয়া নদী। এক সময়ের খরস্রোতা করতোয়া সম্প্রতি বন্যার পর বর্তমানে শুকিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা বালু উত্তোলনের মহোৎসবে মেতে উঠেছে।
উপজেলার চতরা ইউনিয়নের কুয়েতপুর হামিদপুরের নেংড়ার ঘাটে ৫টি স্থানে শামিম, সুজন, আবু তাহের, বাবু, মজিদ, নজরুল ও ছকমলসহ ১৬ ব্যক্তি জোটবদ্ধ হয়ে একাধিক বোমা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন পূর্বক প্রতিদিন শত শত ট্রাক, মাহিন্দ্র ও পাওয়ার ট্রলিতে বালু বিক্রি করছে। গ্রামবাসী কিংবা কোনো ব্যক্তি বালু উত্তোলনে যেন বাধা দিতে না পারে এজন্য স্থানীয় প্রভাবশালী শামীম মিয়ার (৩৬) নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছে। বদনাপাড়ার টোংরারদহ, চকভেকা, নুনদহ ঘাট ও কুমারপুরে সাবু মেম্বারের বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। টুকুরিয়া ইউনিয়নে জয়ন্তীপুর ঘাট, সুজারকুটি, মোনাইল, কাঁচদহঘাটে সুলতান মাহামুদ, আব্দুস সবুর, মাহমুদ, গোলাম রব্বানী, সোহরাব, রবিউল বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে আসছে। এ ছাড়াও বড় আলমপুরের বাঁশপুকুরিয়ায় পৃথক ১০টি স্থানে মিজানুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ও গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে, কাবিলপুর ইউনিয়নের নিজ কাবিলপুর গ্রামের ৩টি স্থানে জুয়েল, হাসান আলী, আদিল ও বিপু দিবারাত্রি বালু উত্তোলন করছে। চৈত্রকোল ইউনিয়নের নাওডোবা, পীরেরহাট এলাকা থেকে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, ভূমি সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বালু উত্তোলনকারীদের বিশেষ চুক্তি রয়েছে। প্রতিমাসে কর্মকর্তারা বালু উত্তোলনকারীদের কাছে চুক্তির টাকা নেয়। এজন্য বালু উত্তোলন বন্ধে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিরোদা রাণী রায় বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে অবশ্যই পদক্ষেপ নেয়া হবে। রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান মুঠোফোনে জানান, বালু উত্তোলন বন্ধে জেলার বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করাসহ মোবাইল কোর্ট ও নিয়মিত মামলা করা হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ শিগগিরই করতোয়া থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ হবে। এদিকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এলাকার রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি স্থাপনা ধসে নষ্ট হয়ে যাওয়া ছাড়াও নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিবে। বিষয়টিতে সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারক মহল জরুরি ভিত্তিতে আইনগত পদক্ষেপ নেবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ মানুষ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর