মেহেরপুরে ফারুক হোসেন (৩৯) নামের এক সমাজসেবা কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। দুই সন্তানের জনক নিহত ফারুক হোসেন জেলা শহরের তাঁতিপাড়ার সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে ও সদর উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের কর্মচারী।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির অদূরে মেহেরপুর সদর থানার কাছে হত্যার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান ফারুক হোসেন রাত পৌনে ১১টার দিকে বাড়ির ২০গজ দূরে মেহেরপুর সদর থানা মোড়ের একটি দোকানে মশার কয়েল কিনতে যান। কয়েল কিনে বাড়ি ফেরার সময় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাকে পেছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তার ঘাড়-পিঠ ও পায়ে গভীর ক্ষত হয়। এসময় তার আত্মচিৎকারে আশে-পাশের মানুষ এসে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়। হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার আগেই মারা যান।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হাবিবুর রহমান জানান হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই ফারুক হোসেন মারা গেছেন। শরীরে রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ফারুক হোসেনের বড় মামা আলাউদ্দীন জানান, আমার জানামতে ফারুক হোসেন কারোর শক্র ছিল না। তারপরও কারা এমনটি করলো আমি জানি না।
মেহেরপুর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ আবু আব্দুল্লাহ বাপ্পি জানান, খবর পেয়ে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখি ফারুক মারা গেছেন।
ফারুকের কোন শক্রতা আছে বলে আমার মনে হয়না। তারপর কারা এ হত্যাকান্ড ঘটালো বুঝতে পারছিনা। আমি এ হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
ফারুক হোসেনের পারিবারিক সূত্র জানায়, ফারুক ২০০৮ সালে মেহেরপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরে রাধুনী হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। পরে বিভাগীয় পরীক্ষা দিয়ে মাঠকর্মী হিসেবে পদোন্নাতি লাভ করেন। তিনি এর আগে মেহেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে ৩ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ওই নির্বাচনে তিনি মাত্র কয়েক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি শাহ দারা খাঁন জানান, ঘটনার খবর পেয়ে ফোর্স নিয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে দেখি ফারুক হোসেন মারা গেছে। হত্যার ক্লু উদ্ধারে পুলিশের একাধিকদল মাঠে নেমেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার তার ময়না তদন্ত করা হবে।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে মেহেরপুর পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী জানান, ঘটনার রহস্যে উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। খুব শিগগিরই হত্যাকান্ডের রহস্যে উদঘাটন হবে বলে মনে করছি।