মুরাদনগরে বীমার টাকা ফেরত পেতে কয়েক হাজার গ্রাহক জড়ো হয়ে মানববন্ধন করেছে। গতকাল দুপুরে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন চাপিতলা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মেয়াদ শেষ হয়ে ৩ বছর গত হলেও গ্রাহকরা টাকা ফেরত না পাওয়ার আশঙ্কা নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে নিরুপায় ভুক্তভোগীরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করছেন। মানববন্ধনে গ্রাহকরা বলেন, হাঁস-মুরগি, ডিম, গরু-ছাগল বিক্রি করে ১০ বছর মেয়াদি বীমা করেছি। ৩ বছর আগেই মেয়াদ শেষ হয়েছে, কিন্তু বড় স্যারদের টেবিলে টেবিলে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে গেছি। মিঠা মিঠা কথা বলে রঙ্গিন স্বপ্ন দেখিয়ে বীমা করিয়েছে। এখন টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো খারাপ ব্যবহার করছে। তাই আজ টাকা ফেরত পাওয়ার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে অংশ নেই।
আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি। সানলাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লি: এর ডিভিশনাল কো-অর্ডিনেটর শাখাওয়াত হোসেন বলেন, উপজেলার নৈরপাড়, পূর্বধইর, খামারগ্রাম, মহেশপুর, পার্শ্ববর্তী নবীনগর উপজেলার মাঝিকাড়া ও আহাম্মদপুর শাখার মাধ্যমে বিগত ১৩ বছরে প্রায় ১০ কোটি টাকার বীমা করেন প্রায় ১২শ’ গ্রাহক। এরমধ্যে প্রায় সাড়ে ৩শ’ গ্রাহকের বীমার মেয়াদ শেষ হলেও গত ৩ বছরে একজনকেও বীমার টাকা ফেরত দিতে পারি নাই। ফলে প্রতিনিয়তই গ্রাহকদের গালমন্দ শুনতে হচ্ছে। এদের মধ্যে একাধিক মৃত্যু দাবির বীমার টাকাও দিচ্ছে না কোম্পানি। যার কারণে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। শাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, আমি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বরাবর ৭ বার আবেদন করেও কোনো সুফল পাইনি। পরে কুমিল্লার এডভোকেট আরিফুর রহমানের মাধ্যমে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ইসলামী আ’সান বীমা প্রকল্পের চেয়ারম্যান, ডিএমডি, এমডি-সিও, সেক্রেটারি, প্রকল্প পরিচালক, অ্যাকাউন্টস ও কুমিল্লার অফিস ইনচার্জকে উকিল নোটিশ করেও কোনো সুফল পাইনি। সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লি: জুনিয়র এ.এম.ডি কাউছার আলম বলেন, মেয়াদ শেষ হওয়া শত শত গ্রাহকের ফাইল কুমিল্লা অফিস অনুমোদন করে বসে আছে, কিন্তু কোম্পানি চেক দিচ্ছে না। চেক পাওয়ার জন্য একাধিকবার আবেদন, উকিল নোটিশ এবং মামলাও করা হয়েছে। কোনো কিছুই কাজ হচ্ছে না। ইতিমধ্যে নুরুল ইসলাম নামে নতুন এম.ডি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে বিষয়গুলো সুরাহা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লি: এর প্রকল্প পরিচালক সাকিন আহম্মেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।