× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সিএনজি থেকে লাফ দিয়ে রক্ষা পেলো মেয়েটি

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২৮ অক্টোবর ২০২০, বুধবার

নামিয়ে দেয়ার কথা ছিল হরিপুরে। কিন্তু হরিপুরে না থামিয়ে সিএনজি অটোরিকশাটি সিলেটের দিকে আসতে থাকে। এতে ভয় পেয়ে যায় সিএনজি অটোরিকশাতে থাকা মেয়েটি। বার বার অনুরোধ করছিল- ‘আমাকে নামিয়ে দিন।’ কিন্তু তার কথা কেউ কানে নিচ্ছিলো না। গাড়িও থামাচ্ছিল না। একপর্যায়ে সিএনজি অটোরিকশা থেকে লাফ দিয়ে সম্ভ্রম বাঁচায় মেয়েটি। ঘটনাটি সোমবার সকালে ঘটেছিল সিলেটের জৈন্তাপুরের হরিপুরে। এরপর থানার ওসি মহসিন আলীকে মোবাইল ফোনে জানানো হয়েছিল ঘটনাটি।
কিন্তু ওসি ঘটনাস্থল হরিপুরে আসেননি। অন্যদিকে- কিছু  চোরাকারবারির একটি দল ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে স্থানীয় জনতা। রাত ৮ টায় কয়েকশ’ মানুষ নেমে আসে সিলেট-তামাবিল সড়কে। করে বিক্ষোভ। এতে করে সিলেটের ব্যস্ততম সিলেট-তামাবিল সড়ক প্রায় দুই ঘটনা অবরোধ ছিল। এ সময় আটকা পড়ে কয়েকশ’ যানবাহন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন- হরিপুরের দলইপাড়া গ্রামের ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রী সকালে কোচিংয়ে গিয়েছিল। সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে হরিপুরে ফিরতে সে একটি সিএনজি অটোরিকশাতে ওঠে। ওই অটোরিকশাতে আরো দুই তরুণ বসা ছিল। ছাত্রীকে নামিয়ে দেয়ার কথা হরিপুর বাজারে। কিন্তু সিএনজি অটোরিকশা বাজারে দাঁড় না করিয়ে সিলেট অভিমুখে আসতে থাকে। এ সময় ওই ছাত্রী গাড়ি থামাতে বার বার অনুরোধ করলেও অটোরিকশাচালক তাতে কর্ণপাত করেনি। বরং চালক গাড়ির গতি বাড়িয়ে সিলেট অভিমুখে আসতে থাকে। এ সময় মেয়েটি চিৎকার করতে চাইলে সিএনজিতে থাকা দুই তরুণ তাকে টানাটানির চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীটি চলন্ত সিএনজি অটোরিকশা থেকে লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। এতে ওই ছাত্রী আহত হয়েছে। পার্শ্ববর্তী হরিপুর বাজারে এ ঘটনাটি জানাজানি হলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় স্থানীয়দের মধ্যে। হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। এমন ঘটনায় তারা হতবাক হন। বিষয়টি জানান, জৈন্তাপুরের ওসিকে। হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সাবেক কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন- ওসি মহসিন আলীকে বিষয়টি জানানোর পর স্থানীয় চোরাকারবারিরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে। এই অবস্থায় দিনভর অপেক্ষার পর পুলিশ না আসার কারণে সন্ধ্যায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে বৈঠকে বসেন এলাকার মানুষ। ওই বৈঠকে ওসিকে বার বার আসার অনুরোধ জানালেও তিনি কালক্ষেপণ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয় এলাকার মানুষ। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদে রাত ৮ টা থেকে সিলেট-তামাবিল সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় তারা অপহরণের চেষ্টাকারী সিএনজি চালক সাহেল ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। এদিকে- রাস্তা অবরোধের পর সেখানে ছুটে আসেন ওসি মহসিন আলী। তিনি গিয়ে মামলা গ্রহণের আশ্বাস দিলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। পরে ওই ছাত্রীর পিতাকে সঙ্গে নিয়ে জৈন্তাপুর থানায় গিয়ে মামলা রেকর্ড করা হলেও ওসিকে আসামি গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম দিয়ে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। এদিকে- গতকাল জৈন্তাপুর থানার ওসি মহসিন আলী জানিয়েছেন- ‘এলাকার লোক তাকে জানালেও এ ঘটনায় কেউ এজাহার নিয়ে আসেনি। আমরা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় অভিযোগ দাখিলের অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা অভিযোগ দাখিল না করে সড়ক অবরোধ করে। পরে আমি গিয়ে বাদীকে সঙ্গে করে এনে মামলা রেকর্ড করেছি।’ তিনি বলেন- ‘এলাকায় সড়ক অবরোধ হয়েছে- এই সুযোগে পালিয়ে গেছে প্রধান আসামি সাহেল। এরপরও সাহেলকে গ্রেপ্তারে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।’ সিএনজি চালক সাহেলের বাড়ি হরিপুরের নিকটবর্তী বালিপাড়া এলাকায়। তার পিতার নাম আব্দুল ওয়াহাব। হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন- আসামি গ্রেপ্তারের জন্য গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০ টা পর্যন্ত ওসিকে সময় দেয়া হয়েছিল। ওই সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। এ নিয়ে রাতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে বৈঠক হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তার না হলে ফের রাস্তা অবরোধ সহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানান তারা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর