সিলেটে মিথ্যা ও সাজানো ধর্ষণ মামলায় আসামি হাজী সোহেল মিয়াকে আদালত বেকসুর খালাস দিয়েছেন। পরে মামলার ভিকটিম ও বাদীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলায় গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। মিথ্যা ও সাজানো ধর্ষণ মামলার ‘নির্যাতিতা’ ও বাদী পলাতক রয়েছেন। সিলেট নগরীর ঘাসিটুলা কলাপাড়ার ফজল মিয়ার কলোনিতে বসবাস করতো সুনামগঞ্জ তাহিরপুরের সোহেল মিয়া ও তার স্ত্রী তানজিনা বেগম। তানজিনা তার বোন সুনিমা ওরফে সুনজিনাকেও ওই কলোনিতে নিয়ে আসে এবং বিভিন্ন বাসায় কাজে দিতো। এসময় চরিত্রহীন সুনিমার দৈহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে স্থানীয় বখাটে ও লম্পটদের সঙ্গে। এক পর্যায়ে সুনিমা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তার দুলাভাই সোহেল স্বামী সেজে সুনামগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে সুনিমার গর্ভপাত ঘটায়। আর এ সুযোগে এলাকার একটি কুচক্রীমহল প্ররোচনা ও ইন্ধন দিয়ে তানজিনাকে দিয়ে ২০১৮ সালের ২২শে এপ্রিল সিলেট কোতোয়ালি থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করায়।
এ মামলায় মিথ্যাভাবে ঘাসিটুলা ডহর এলাকার হাজী সোহেল আহমদকে একমাত্র ধর্ষক সাজিয়ে আসামি করা হয়। তদন্তে মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হলে পুলিশ আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দিলে বাদী নারাজি দাখিল করলে পুনঃতদন্তে দেয়া হয়। পরবর্তী তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হলে আদালতে শুনানি হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে মামলাটি মিথ্যা ও সাজানো প্রমাণিত হয়। তাই সিলেটের বিভাগীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মুহিতুল হক এনাম চৌধুরী এ বছরের ৭ই জুলাই মামলাটি খারিজ করে হাজী সোহেল আহমদকে নির্দোষ বলে অব্যাহতি প্রদান করেন। আদালতের এই খারিজ আদেশে হাজী সোহেল আহমদ জানান, আদালত ন্যায়বিচার করেছেন এবং এতে করে সত্যেরই জয় হয়েছে। তিনি আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে হাজী সোহেল আহমদ এই মিথ্যা মামলায় তার চরম মানহানি ঘটেছে এবং তিনি আর্থিক ও সামাজিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জানিয়ে একই ট্রাইব্যুনালে পাল্টা মামলা দায়ের করেন। যা ওই ট্রাইব্যুনালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০ আইনের ১৭ ও ৩৪ ধারায় ৩৫৫/২০২০ নং মামলা।
আদালত হাজী সোহেল আহমদের পাল্টা মামলাটি গত ২৮শে সেপ্টেম্বর আমলে নেন এবং মিথ্যা ধর্ষণ মামলার বাদী তানজিনা বেগম ও ভিকটিম সুনিমা ওরফে সুনজিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেন। এরপর থেকে মিথ্যা ধর্ষণ মামলার বাদী তানজিনা ও ভিকটিম সুনিমা পলাতক রয়েছে।