বিয়ানীবাজারের বিতর্কিত সহকারী কমিশনার-ভূমি (এসি ল্যান্ড) খুশনুর রুবাইয়াতকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার তিনি সিলেটের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার হিসাবে যোগদান করেন। এদিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) খুশনুর রুবায়ইয়াত বদলি হওয়ায় বিয়ানীবাজারের জনমনে সন্তোষ বিরাজ করছে।
বিয়ানীবাজারে তার যোগদানের পর থেকে ভূমি নিয়ে সাধারণ মানুষের হয়রানির শেষ ছিল না। নামজারি আবেদন, রেকর্ড সংশোধন, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, করোনাকালীন সেবা, মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানি, সরকারি জমিজমা নিয়ে বিরোধ, খাজনা আদায়ে জটিলতা, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ না মানা, ভূমি বিভাগ থেকে রাজস্ব আদায়, ভূমি কার্যালয় ও তফশিল অফিসগুলোতে চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়াসহ নানা কারণে উপজেলাবাসী তার উপর অসন্তুষ্ট ছিলেন। এসব নিয়ে তার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিয়ানীবাজার থেকে বদলি হওয়া খুশনুর রুবাইয়াতের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায়।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, খুশনুর রুবাইয়াতের যোগদানের পর থেকে বিয়ানীবাজার ভূমি অফিসে নামজারি নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে ছিলেন উপজেলাবাসী। অনেক বয়োবৃদ্ধ লোককে নামজারি সংক্রান্ত কাজে এসে তার দপ্তরে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।
নামজারি না হওয়ার উপজেলায় ভূমি ক্রয়-বিক্রয় কমে যায়। প্রতিদিন ১২টায় ভূমি কার্যালয়ের নিজ দপ্তরে এসে খুশনুর রুবাইয়াত দরজা লাগিয়ে রাখতেন। নিজের কক্ষে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরায় মানুষ দেখে তারপর তিনি কক্ষে যাওয়ার অনুমতি দিতেন। তার যোগদানের পর উপজেলায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ব্যাপকভাবে কমে যায়। বাজার মনিটরিং না করার কারণে চাল, আলু, পিয়াজসহ নিত্যপণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া সরকারি সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে তার উদাসীনতার কারণে অন্তত পক্ষে ১শ’ কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি বেহাত হয়ে গেছে। সুপাতলা, ফতেহপুর, নয়াগ্রামসহ বিভিন্ন মৌজায় কয়েক কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি বেহাত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সরকারি অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা জমি অধিঃগ্রহণের কারণে নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছেনা।
সম্প্রতি একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য তার কাছে মতামত চাওয়া হলে সেটিও ফাইলচাপা পড়ে আছে। ঘরহীন, ভূমিহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ প্রকল্পও থমকে ছিল খুশনুর রুবাইয়াতের কারণে। বিয়ানীবাজার ভূমি অফিসে কেউ কারো কথা শুনেন না। তফশিল অফিসগুলোর অবস্থা আরো খারাপ।
এসব বিষয় নিয়ে জানতে খুশনুর রুবাইয়াতের সঙ্গে যোগযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।