× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সুন্দরবন ঘিরে গড়ে উঠেছে অবৈধ শুঁটকির ডিপো

বাংলারজমিন

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
১ নভেম্বর ২০২০, রবিবার

শুকানো হয় বিষ প্রয়োগ করা মাছ, জ্বালানো হয় সুন্দরবনের কাঠ, ক্ষতি হয় সুন্দরবনে সংরক্ষিত গাছপালা ও পরিবেশের। নদীর চর দখল করে সুন্দরবনকেন্দ্রিক অবৈধভাবে গড়ে উঠছে শুঁটকির (খঁটি) ডিপো। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা খঁটির কারণে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বিষ প্রয়োগকারীর সংখ্যা। সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী নালা থেকে বিষ প্রয়োগ করে মারা চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছগুলো নিয়ে রাতারাতি খঁটিতে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১৬টির মতো খঁটি রয়েছে। যেখানে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হয় সুন্দরবনের কাঠ। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব খঁটি গড়ে উঠেছে। সুন্দরবনের পাশে পরিবেশ নষ্ট করে কাঠ পুড়িয়ে মাছ শুকানোয় বিধি নিষেধ থাকলেও তা না মেনে প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাচ্ছে শুঁটকির কাজ।
শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন কলবাড়ীতে ৩টা, মুন্সিগঞ্জে ১টা, হরিনগরে ২টা, টেংরাখালীতে ৩টা, মহিন্দ্যসিলে ৫টা, কাশিমাড়ীতে ২টা এলাকায় ১৬টা অবৈধ শুঁটকির ডিপো গড়ে উঠেছে। চালু থাকা এসব খঁটিতে চিংড়ি এবং সাদা মাছ শুকিয়ে প্রস্তুত করা হয়। সারা বছর ধরে চলে এ কাজ। বন বিভাগের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগে মাছ ধরার ওপর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরপরও এসব খঁটি মালিকরা রাতের আঁধারে চড়া দাদন দিয়ে জেলেদের মাধ্যমে মৎস্য আহরণ করাচ্ছে। এসব খঁটিতে শুঁটকির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পোড়ানো হচ্ছে শত শত মণ বিভিন্ন প্রজাতির সুন্দরবনের কাঠ। আর এ কাজের নেপথ্যে রয়েছে এলাকার কিছুসংখ্যক অসাধু লোক। এসব খঁটি সচল হয়

রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে। ঘরের মধ্যে উপরে মাচা করে নিয়ে কাঠ জ্বালানো হয়। আগুনের তাপে চলে মাছ শুকানোর প্রক্রিয়া। স্থানীয় জেলেদের দাবি, বিষ দেয়া মাছ পাইকারি আড়তে বিক্রি হয় না। খঁটি ডিপো মালিকরা তা কিনে নিয়ে শুঁটকি করে। এলাকার সচেতন মহল সুন্দরবন সংলগ্ন এই এলাকার শুঁটকি ডিপো বন্ধ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পাউবোর বেড়িবাঁধের উপরে সুন্দরবনের পাশে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ১৬টি মাছ শুকানোর শুঁটকি ডিপো। কৌশলে ডিপো মালিকদের নিজস্ব শ্রমিক দিয়ে সুন্দরবন থেকে রাতের আঁধারে কাঠ কেটে এনে ওই সকল ডিপোতে খুবই গোপনীয়তার সঙ্গে রাখে। ব্যবসায়ীরা লোক দেখানোর মতো কিছুসংখ্যক দেশি কাঠ সংগ্রহ করে তা না পুড়িয়ে রাতের আঁধারে সুন্দরবনের কাঠ পুড়িয়ে থাকে। মাঝে মধ্যে বন বিভাগ অভিযান পরিচালনা করলেও তারা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ বিষয়ে ডিপো মালিকরা বলেন, ‘বিষ দিয়ে মারা কোনো মাছ শুঁটকি করা বা সুন্দরবনের কাঠ পোড়ানো হয় না। স্থানীয়রা জানান, সমপ্রতি সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তার একমাত্র কারণ রাতের আঁধারে বিষ দিয়ে ধরা মাছের ঐ সকল শুঁটকি ডিপোতে চাহিদা বেশি। বেসরকারি এনজিও সংস্থা লিডার্সের পরিচালক মোহন কুমার বলেন, সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা অবৈধ শুঁটকির ডিপো যেখানে সুন্দরবনের কাঠ পুড়িয়ে বিষ দেয়া মাছ শুকানো হয়। যে কারণে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সুন্দরবনের বিষ প্রয়োগকারীর সংখ্যা। ক্ষতি হচ্ছে সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্য, গাছপালা ও পরিবেশের। সাতক্ষীরা রেঞ্জ সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এম এ হাসান বলেন, শুঁটকির ডিপোগুলা কোথায় আছে তালিকা দিলে আমরা দ্রুত বন্ধের ব্যবস্থা নেবো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর