হঠাৎ কি হলো? করোনা নিয়ে শুরুটা ছিল ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ। খালি মৃত্যু। খালি সংক্রমণ। দিনের মধ্যাহ্নে সকলের অপেক্ষা আজকের পরিস্থিতি কি? স্বাস্থ্য বুলেটিন কি বলছে? মৃত্যু কি বেড়েছে? এমন খবরে কাগজের পাতা ভারি থাকত প্রতিদিনই। এ সময় ঘুরেফিরে কিছু শব্দও মাথায় ঢুকেছে। লকডাউন। আইসোলেশন। হোম কোয়ারেন্টিন।
কোভিড ১৯। ফার্স্ট ওয়েব। সেকেন্ড ওয়েব।
অক্টোবরের শেষ সপ্তাহটা এ পরিস্থিতি থেকে বিশ্ব কিছুটা হলেও মোড় ঘুরেছে। আমেরিকার নির্বাচন বিশ্বজুড়ে কোভিড থেকে কিছুটা হলেও চোখ ফেরাতে পেরেছে। ট্রাম্প আর বাইডেন আলোচনার ঝড় ওঠেছে। চারপাশে অন্তত মৃত্যু আর সংক্রমণের আওয়াজ কিছুটা হলেও কমেছে। এ নিয়ে টানটান উত্তেজনায় নির্ঘূম রাত কাটিয়েছে দুনিয়ার ছয়শো কোটি মানুষ। মাঝখানে প্যারিস কান্ড উত্তাপ ছড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে। মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল বিলম্বের দোলাচলে বেশ কদিন যাবার পর হঠাৎ আবার কি হলো?
সব ছাপিয়ে সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার কেটেছে উদ্বেগে। হঠাৎ এক অজানা আতঙ্ক চেপে বসেছে নগরবাসীর মধ্যে। সকলের প্রশ্ন ঘুরেফিরে কি হলো হঠাৎ? বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই খবর আসতে থাকে বিভিন্নস্থানে বাসে আগুন দেয়ার। একটি দুটি বাসে আগুন লেগেছে বিক্ষিপ্তভাবে তা নয়। রাজধানীর ৯টি স্থানে বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। এবং সকল খবরাখবর যা বলছে, তাতে একটি চক্র কাছাকাছি সময়ে কাজটি করেছে।
পুরো ঘটনাক্রম নিয়ে পুলিশ গৎ বাধা কথাই বলেছে, নাশকতা করেছে দুর্বৃত্তরা। বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্যই এমনটি করা হয়ে থাকতে পারে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যেভাবে একইরকম কথা আগেও বহুবার শুনেছে মানুষ। কিন্তু সাধারণ মানুষ এ ধরণের কথায় বিশ্বাসী নয় বরাবরের মতোই। দিনের আলোতে এতগুলো বাসে আগুন দেয়া হলো এর নেপথ্যে কি?
নগরজুড়ে অফিস ফেরত মানুষের নানা প্রশ্ন এ ঘটনা নিয়ে। যারা আগুন দিয়েছে, এরা কারা? কিসের আলামত? এখনতো বলতে গেলে রাজনৈতিক কোন সঙ্কট নেই? চলছে করোনার সঙ্কট। চলছে বাজার মূল্যের ঊর্ধগতি। চলছে চাকরিহীনতার সংস্কৃতি। বাড়ছে বেকারত্ব। তাহলে এই আগুন কিসের অশনি সঙ্কেত।
রাজধানীর বহুস্থানে তো সিসিটিভি রয়েছে। তাহলে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কি সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে, একসঙ্গে বাসে সিরিজ আগুন দেয়ার পেছনে কারা যুক্ত? কাউকে কি গ্রেপ্তার করা হয়েছে? সব মিলিয়ে পরিস্থিতি কোথায় যাচ্ছে? সবকিছু কেমন যেন ধোঁয়াশা। সহসাই এ সকল প্রশ্নের উত্তর মিলবে কি? জনমনে নানা প্রশ্ন। সাধারণ মানুষ একটু শান্তি চায়, স্বস্থিতে বাস করতে চায়। আর তা নিশ্চিতের দায়িত্ব তো শেষপর্যন্ত রাষ্ট্রের।