চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সরোদবাদক ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খান। গতকাল বাদ জোহর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত শনিবার রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়েসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী, ভক্ত-অনুরাগী রেখে গেছেন। শাহাদাত হোসেন খান করোনায় আক্রান্ত হলে ১২ দিন আগে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রথমে কিছুটা সুস্থ হলেও পরে আবার সংকটে পড়েন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবশেষে তার মৃত্যু হয়।
শাহাদাত হোসেন খান ১৯৫৮ সালের ৬ই জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ওস্তাদ আবেদ হোসেন খান একজন প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গসংগীতশিল্পী ও সেতারবাদক। সাত বছর বয়সে বাবার কাছে শাহাদাত হোসেনের তবলা ও সরোদের হাতেখড়ি হয়। পরে তিনি তার চাচা বাহাদুর হোসেন খানের কাছে সরোদের তালিম নেন। ১৯৭২ সালে আলাউদ্দিন সংগীত সম্মেলনে বাহাদুর হোসেনের সঙ্গে যুগলবন্দি হয়ে সরোদ পরিবেশন করেন। ১৯৮১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার আলী আকবর কলেজ অব মিউজিক থেকে সংগীত বিষয়ে স্নাতক সমমানের ‘বাদ্যালংকার’ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে সংগীতের শিক্ষক ও প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সরকারি সংগীত কলেজের ডেমোনেস্ট্রেশন কাম লেকচারার, সংগীতবিষয়ক বক্তা ও প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উচ্চতর প্রশিক্ষণ কোর্সে সেতার, সরোদ, বেহালা, বাঁশি ও গিটারের প্রশিক্ষক এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংগীত একাডেমিতে কণ্ঠ ও যন্ত্রসংগীতের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। সংগীতে অবদানের জন্য শাহাদাত হোসেন ১৯৯৪ সালে একুশে পদক লাভ করেন।