গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের হ্যাটট্রিক জয়। প্রথম ম্যাচে তারা গুঁড়িয়ে দেয় মুশফিকুর রহীমের বেক্সিমকো ঢাকাকে। পরের ম্যাচে জয় পায় টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের জেমকন খুলনার বিপক্ষে। এই দলে আছেন দেশের সাবেক অধিনায়ক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও। আর গতকাল শরিফুল ইসলাম-মোস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে চট্টগ্রাম ১০ রানে হারায় ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের দল ফরচুন বরিশালকে। তার মানে দেশের সব পরীক্ষিত দলনেতার বিপক্ষে চমক অব্যাহত রাখলেন ঘরোয়া ক্রিকেটের নয়া অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ও তার দল চট্টগ্রাম।
প্রথম দুই ম্যাচে লক্ষ্য তাড়া করে জয় পায় গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। গতকাল টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান সংগ্রহ করে তারা। জবাব দিতে নেমে বরিশালের অধিনায়ক তামিম লড়াই করেন।
৩২ রান করে আউট হন তিনি। কিন্তু তার বিদায়ের পর জয়ের পথ দেখাতে পারেননি আর কেউ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪ রান আসে আফিফ হোসেনের ব্যাট থেকে। শেষ পর্যন্ত হাতে দুই উইকেট থাকলেও চট্টগ্রাম থামে ১৪১ রানে। বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম। আগের ম্যাচে জয়ের নায়ক মোস্তাফিজুর রহমানেরও শিকার ৩ উইকেট। একটি করে শিকার মোসাদ্দেক হোসেন ও সৌম্য সরকারের। ১০ রানের জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে এখন চট্টগ্রাম। হ্যাটট্রিক জয়ে ফাইনালের পথ সুগম করে ফেলেছে তারা। অন্যদিকে তিন ম্যাচে দ্বিতীয় হার দেখলেন তামিম। গতকাল টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রামের দুই ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকার সুবিধা করতে পারেননি। যদিও প্রথম দুই ম্যাচ তাদের জুটিতে দল পেয়েছে ৯ উইকেটের বড় জয়। আগের দুই ম্যাচে ৭৯ ও ৭৩ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়া সৌম্য-লিটন গতকাল থামেন ২২ রানে। আবু জায়েদ রাহীর বলে আউট হওয়ার আগে সৌম্য করেন ৫ রান। লিটন অন্য প্রান্তে ছন্দেই ছিলেন। তবে মেহেদী মিরাজকে ফাইন লেগ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন শর্ট ফাইন লেগে থাকা ফিল্ডারের হাতে। ২৫ বলে ৪ চারে তিনি করেন ৩৫ রান। যা দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। মাঝে অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন আউট হন ১৭ রান করে। ক্রিজে থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি শামসুর রহমান। ২৮ বলে করেন ২৬ রান। ১০২ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে শেষ দিকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও সৈকত আলী। দুজনে ষষ্ঠ উইকেটে যোগ করেন ১৮ বলে ৪০ রান। ২৪ বলে মোসাদ্দেকের ব্যাট থেকে আসে ২৮ রান অন্যদিকে রান আউটে হওয়ার আগে সৈকত ১১ বলে ১ চার ৩ ছক্কায় করেন ২৭ রান। বরিশালের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন আবু জায়েদ রাহী। একটি করে উইকেট ভাগাভাগি করেন সুমন খান, তাসকিন আহমেদ, কামরুল ইসলাম রাব্বী ও মেহেদী হাসান মিরাজ। রান তাড়ায় ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি তামিম ইকবালের সঙ্গে টানা তৃতীয় ম্যাচে ওপেন করা মেহেদী হাসান মিরাজ। আগের দুই ম্যাচে যথাক্রমে ০ ও ১ রানের পর শরিফুল ইসলামের বলে আজ ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ১৩ রান করে। মিরাজের বিদায়ের পর অধিনায়ক তামিম ইকবাল দলকে টানার চেষ্টা করেন। ৩২ বলে ৩২ রানের ইনিংসটি অবশ্য পরিস্থিতি বিবেচনায় যথেষ্ট ছিল না। তামিমের আগেই ১১ রান করে সাজঘরে ফেরেন পারভেজ হোসেন ইমন। এরপর আর কোনো ব্যাটসম্যান জয়ের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেননি। মোস্তাফিজ-শরিফুলদের তোপে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো ফরচুন বরিশাল থামে ৮ উইকেটে ১৪১ রানে। মিডল অর্ডারে আফিফ হোসেনের ২৪ ও তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান। লোয়ার অর্ডারের সুমন খান অপরাজিত ছিলেন ১৪ রানে।