মাউন্ট আবাদালমা জয়ের স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে গেলো। শৃঙ্গের এত কাছে পৌঁছেও ফিরে আসতে বাধ্য হলাম আবহাওয়ার প্রাচীর টপকাতে না পেরে। গত কয়েকদিন মানবজমিনের পাঠকদের জানাতে পারিনি আমাদের অবস্থানের কথা। কারণ এক অসম লড়াই করছিলাম প্রকৃতির সঙ্গে। ২৮ নভেম্বর ক্যাম্প টু থেকে শৃঙ্গ অভিযান শুরু করি রাত ১০টা নাগাদ। ভোর চারটে নাগাদ পৌঁছাই ক্যাম্প থ্রিতে। সেখান থেকেই শুরু হয় বিপত্তি। প্রবল তুষারঝড় এবং প্রবল হাওয়া। হাওয়ার ফলা যেন অন্ধ করে দিচ্ছিল। তুষারের টুকরোগুলো ছুরির ফলার মতো বিঁধছিল। ওই অবস্থাতেও আমি এগিয়ে যাচ্ছিলাম। আবাদালমা শৃঙ্গের একশো মিটার দূরে যখন আমি, তখনই শুরু হলো তুষারপাত। মিহি গুঁড়োর মতো বরফ, সেই সঙ্গে ভয়াবহ ঝঞ্ঝা। সাড়ে তিনঘন্টা এই অবস্থা চলার পর শৃঙ্গ জয়ের আশা ত্যাগ করে ক্যাম্প টুতে ফিরলাম ২৯ তারিখ। ৩০ তারিখ ভগ্ন মনোরথ হয়ে ফিরলাম বেস ক্যাম্পে। সেখানে হেলিকপ্টার নিয়ে অপেক্ষা করছিল মিংমাস শেরপা। কপ্টার আমাদের নিয়ে এলো লুলাতে। সেখান থেকে বিমানে আজ কাঠমান্ডু। ফিরে যাচ্ছি দেশে। প্রথম ভারতীয় দল হিসেবে মাউন্ট অবদালমার শিখরে পৌঁছানো সম্ভব হলো না। কিন্তু, আবার ফিরে আসবো এই শৃঙ্গ জয় করতে। সঙ্গে আপ্তবাক্যটি মনে রাখবো, মানুষ সবকিছু জয় করলেও এখনো প্রকৃতিকে জয় করার ক্ষমতা মানুষের নেই। প্রকৃতি সত্যিই অপরাজিতা।
(দেবাশীষ বিশ্বাস মাউন্ট আবাদালমাগামী ভারতীয় পর্বতারোহন দলের অধিনায়ক )
।