সাতক্ষীরায় ওয়াজ মাহফিলে মাইক বা লাউড স্পিকার ব্যবহার সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার ঝড় উঠেছে। সম্প্রতি ওয়াজ মাহফিলে লাউড স্পিকার ব্যবহারে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সাতক্ষীরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়।
সাতক্ষীরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ইন্দ্রজিত সাহা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংসদের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৬ষ্ঠ বৈঠকের সুপারিশ বা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিটি সাতক্ষীরা জেলার পুলিশ সুপার, জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সকল থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর পাঠানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ওই সুপারিশে যা বলা হয়েছিলে তা হলো- দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত ওয়াজ মাহফিলে লাউড স্পিকার ব্যবহারে যে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় তা লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এমতাবস্থায় বর্ণিত সিদ্ধান্ত বা সুপারিশ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
তবে ধর্ম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য যিনি ওই ৬ষ্ঠ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তিনি সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ওই বৈঠকে এ ধরনের কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয়নি।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মোস্তফা কামালও গণমাধ্যমকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এ ধরনের কোনো সার্কুলার নেই।
আমরা নিজেরাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় এমনিতেই ওয়াজ মাহফিলের মতো অনুষ্ঠান বেশি হয় এবং সেখানে লাউড স্পিকার ব্যবহার করা হয়। আর এ কারণেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। লাউড স্পিকার ব্যবহারের কারণে যদি শ্রবণ মাত্রার চেয়ে বেশি ডেসিবলের শব্দ তৈরি হয় এবং যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, এটা শুধু ওয়াজ মাহফিলের ক্ষেত্রে নয় বরং যেকোনো অনুষ্ঠান বা প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে যদি পরিবেশ দূষণ হয় তাহলে সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, পরিবেশ আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তানজিল্লুর রহমান বলেন, কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে সেখানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে এবং পরিস্থিতি বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় ইমামদের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। যারা ওয়াজ মাহফিল করেন তাদের সঙ্গেও আমরা কথা বলবো, তাদের মধ্যে একটা সচেতনতা সৃষ্টি হবে। স্থানীয় কোনো অসুস্থ রোগী কিংবা শিক্ষার্থীদের যাতে সমস্যা না হয় সে বিষয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রচারণা চালানো হবে বলেও জানানো হয়।