× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

টেকসই উন্নয়নের ধারণাকে বাস্তব রূপ দিতে আধুনিক ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের বিকল্প নেই

মত-মতান্তর

আকলিমা জান্নাত
৩ ডিসেম্বর ২০২০, বৃহস্পতিবার

প্রতি বছর ১৯শে নভেম্বর বিশ্ব টয়লেট দিবস পালন করা হয়। প্রতিবারই দিবসটি উদযাপনে একটি প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়। এ বছরের প্রতিপ্রাদ্য বিষয় ছিল ‘টেকসই স্যানিটেশন এবং জলবায়ু পরিবর্তন’। টয়লেট শব্দটিকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। পৃথিবীতে এখনো প্রায় ৪২০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সে হিসেবে বিশ্বের ৬০ শতাংশ মানুষের জন্যই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়াটা বেশ কষ্টসাধ্য। আমাদের দেশে ৯৭ শতাংশ মানুষ টয়লেট ব্যবহার করে। কিন্তু স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবহারের সংখ্যাটা অর্ধেকের নিচে।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, আজও প্রায় ১০০ কোটির বেশি মানুষ খোলা আকাশের নিচে মলত্যাগ করে।
ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে, মানুষের দৈনন্দিন কাজে, শৌচাগারে ও বিভিন্ন শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত পানির ৮০ শতাংশই প্রকৃতিতে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে কোনো পরিশোধন ছাড়া। এদিকে আমাদের দেশে নারীদের মধ্যে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, বাজার, শপিংমলে গেলে টয়লেটে যাতে না যেতে হয় এ জন্য প্রয়োজনীয় পানি পান করা থেকে বিরত থাকে। যা থেকে দেখা দিতে পারে ইউটিআই, কিডনির সমস্যাসহ নানান রোগ।

একটা সময় বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অধিকাংশ বাড়ির কোনায় খোলা টয়লেট দেখা যেত। খালের পাশে, পুকুরের কোনায় থাকত মলত্যাগের স্থান। এখন পরিস্থিতি অনেকটা বদলেছে। সরকারি জরিপ বলছে, বাংলাদেশের অধিকাংশ পরিবার স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করছে। কিন্তু আজও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত নাগরিকের সংখ্যা নেহাত কম নয়।

একজন মানুষ গড়ে দিনে ৪৫০ গ্রাম মল ত্যাগ করে। এই পরিমাণ মলে ৫০ শতাংশ ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকলেও সংখ্যা বিচারে তা বিপুল। প্রাকৃতিক, কৃত্রিম ও ভূগর্ভস্থ জলাধারগুলো প্রতিনিয়ত মানুষের মলে দূষিত হচ্ছে। এসব অণুজীব অধিক হারে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের ক্ষমতা অর্জন করছে। খোলা স্থানে, নদী-নালায়, পুকুরে মল-মূত্রত্যাগ জনস্বাস্থ্যের জন্য অতিমাত্রায় বিপজ্জনক। বিশ্ব টয়লেট দিবস এই অধিকারবঞ্চিত বিশাল জনগোষ্ঠীর কথা মনে করিয়ে দেয়।

স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের প্রয়োজনীয়তার বিবেচনা করেই বিশ্ব টয়লেট দিবস পালন শুরু হয়। ২০০১ সালের ১৯শে নভেম্বর বিশ্বজুড়ে নিরাপদ টয়লেট ব্যবহার বিষয়ে ক্যাম্পেইন শুরু করে ওয়ার্ল্ড টয়লেট অর্গানাইজেশন। তার পর থেকে প্রতি বছর এই দিনে বিশ্ব টয়লেট দিবস হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হচ্ছে।  প্রতিবছর বাংলাদেশেও দিবসটি নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে। ২০০১ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে এলেও ২০১৩ সালে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে এর স্বীকৃতি দেয়। দিনটির উদ্দেশ্য স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য টয়লেটের সুবিধা নিশ্চিত করা। একটি টয়লেটকে শুধু একটি সুবিধা নয়; সুস্থ, সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য এটি অপরিহার্য। টেকসই উন্নয়নের ধারণাকে বাস্তব রূপ দিতে হলে আধুনিক ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের বিকল্প কিছু নেই।

প্রতিবছর ন্যায় এবারও দেশে হারপিক ‘বিশ্ব টয়লেট দিবস’ উদযাপন করেছে। এবার হারপিকের স্লোগান ছিলো ‘স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট সুস্থ দেশ’। হারপিক বিগত ৪০ বছরেরও অধিক সময় ধরে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বাংলাদেশে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত টয়লেট ব্যবহারের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে আসছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর