× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অ্যামনেস্টির বিরোধিতা / ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের যাত্রা শুরু

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার থেকে
৪ ডিসেম্বর ২০২০, শুক্রবার

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের একটি দল গতকাল দুপুরে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ এলাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোতে অন্তত ৩শ’ রোহিঙ্গা ছিল বলে জানা গেছে। স্বেচ্ছায় যারা ভাসানচরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে কেবল তাদের পাঠানোর মাধ্যমেই এ স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনের কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বেশকিছু রোহিঙ্গা ট্রানজিট পয়েন্টে চলে আসে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে আসা শুরু করে অন্যরাও। আগে থেকে প্রয়োজনীয় পরিবহন ব্যবস্থা ও খাদ্যসামগ্রী মজুত করা হয়। উখিয়া কলেজ মাঠ থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর শুরু হয় সকাল ১১ টার দিকে।
ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের জন্য সেখানে মজুত করা হয়েছে প্রায় ৭০ টন খাদ্যসামগ্রী।
বিভিন্ন ক্যাম্পের মাঝিরা জানিয়েছেন, অনেক রোহিঙ্গা পরিবার স্বেচ্ছায় ভাসানচর যেতে আগ্রহী হচ্ছে। তাদের অনেকে বুধবার সন্ধ্যায় ট্রানজিট পয়েন্টে চলে যায়। বাকিরা বৃহস্পতিবার সকালে গেছে। ভাসানচরগামী রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে প্রথমে চট্টগ্রামে নেয়া হবে। সেখান থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌবাহিনীর ১৪টি জাহাজ। প্রথম দুই মাস তাদের রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হবে। এরপর নিজ নিজ বাসস্থানেই তারা রান্না করতে পারবেন বলে সূত্র জানিয়েছে। রোহিঙ্গাদের ভাসানচর নেয়ার আগে ২২টি এনজিও’র প্রতিনিধিরা ভাসানচর পরিদর্শন করে সরকারের পরিকল্পিত আয়োজনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। রোহিঙ্গাদের ভাসানচর নেয়ার বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তারা।

ভাসানচরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের অনেকে জানান, তারা ভাসানচর পরিদর্শন শেষে ফিরে আসা রোহিঙ্গা নেতাদের মুখে সেখানকার বর্ণনা শুনে বসবাস করতে রাজি হয়েছেন। তাদের মতে পাহাড়ের ঘিঞ্জি বস্তিতে বসবাসের চেয়ে ভাসানচর অনেক নিরাপদ হবে। এছাড়া ভাসানচরে বসবাসের জন্য নির্মিত অবকাঠামো প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা সংবলিত মনে হয়েছে রোহিঙ্গাদের কাছে।

ভাসানচরে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন স্থগিতের আহ্বান অ্যামনেস্টির: ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া অবিলম্বে স্থগিত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি এক বিবৃতিতে ভাসানচরে এরই মধ্যে যেসব রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন তাদেরকে পরিবারের কাছে এবং বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে ফিরিয়ে আনতে আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া শরণার্থীদের যেকোনো রকম পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে তাদের পূর্ণাঙ্গ ও অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বিবৃতিতে সাদ হাম্মাদি লিখেছেন, ভাসানচরে এত বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে পুনর্বাসন করায় নিরপেক্ষ মানবাধিকার বিষয়ক পর্যবেক্ষকদের জন্য মারাত্মক এক উদ্বেগের বিষয় হবে। কারণ, ওই দ্বীপে সবার যোগাযোগের সুযোগ সীমিত। বিশেষ করে মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপ ও সাংবাদিকদের সেখানে যেতে হলে আগে থেকে অনুমোদন নিতে হবে। তিনি আরো লিখেছেন, শরণার্থীদের সেখানে পুনর্বাসনের যেকোনো পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে সবার আগে ভাসানচরে বসবাসের উপযোগিতা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে জাতিসংঘ, অধিকার বিষয়ক গ্রুপ ও মানবাধিকার বিষয়ক এজেন্সিগুলোকে অনুমোদন দিতে হবে বাংলাদেশের। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যাদেরকে পুনর্বাসন করা হবে তাদের পূর্ণাঙ্গভাবে এবং তাদের সম্মতি ছাড়া ভাসানচরে বা অন্য কোথাও পুনর্বাসন পরিকল্পনা করা উচিত নয়। সাদ হাম্মাদি বলেছেন, ওই চরে অবস্থানকারী কিছু শরণার্থী এরই মধ্যে তাদের উদ্বেগের বিষয় তুলে ধরেছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কাছে। তাদেরকে তাদের পরিবার ও সম্প্রদায় থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অন্য সদস্যদের শুধু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষিত করাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের পূর্ণাঙ্গ এবং অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

উল্লেখ্য, বঙ্গোপসাগরের বুকে পলিমাটি জমে সৃষ্টি হয়েছে ভাসান চর। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। এ নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর