× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ফ্রান্সে ‘চরমপন্থিদের সন্ধানে' মসজিদে তল্লাশি

অনলাইন

আব্দুল মোমিত (এ এম সি রোমেল) ফ্রান্স থেকে
(৩ বছর আগে) ডিসেম্বর ৪, ২০২০, শুক্রবার, ১১:০০ পূর্বাহ্ন

ফ্রান্সের মুসলিম গোষ্ঠীগুলোকে ফরাসী সমাজে সম্পৃক্ত করার, তাদের সমাজের অংশ করে নেবার জন্য সাম্প্রতিক কয়েক বছরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চাপ বাড়ছে। ফ্রান্সে ইউরোপের সর্বাধিক সংখ্যক মুসলিমের বাস। দেশটিতে মুসলমান জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ৫০ লক্ষ। বৃহস্পতিবার থেকে কয়েক ডজন মসজিদে তল্লাশি চালাচ্ছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ৷ দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার পর এসব মসজিদে ‘চরমপন্থার প্রচার' করা হয় সন্দেহ করছে দেশটির সরকার৷আরটিএল রেডিওকে ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন জানিয়েছেন, কোনো মসজিদকে উগ্রবাদ ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, এমন সন্দেহ হলে সেটি বন্ধ করে দেয়া হবে৷কোন কোন অঞ্চলের মসজিদে এমন তল্লাশি চালানো হবে, তা প্রকাশ করেননি মন্ত্রী৷ তবে স্থানীয় বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রধানদের পাঠানো চিঠিতে প্যারিস এলাকার ১৬টি এবং দেশজুড়ে আরো ৬০টি মসজিদের কথা উল্লেখ রয়েছে বলে জানিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি ।
ধর্মনিরপেক্ষতা - ফরাসি ভাষায় যাকে বলে ‘লাইসিতে‘ - তা ফ্রান্সের জাতীয় পরিচয়ের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। ফরাসী বিপ্লবের পর থেকেই “মুক্তি, সাম্য এবং ভ্রাতৃত্ব“ ফরাসী রাষ্ট্রের মূলমন্ত্র, কিন্তু লাইসিতে বা ধর্মনিরপেক্ষতাও সমান গুরুত্ব পায় সেদেশে। লাইসিতের মূল কথা হলো জনসমক্ষে - তা ক্লাসরুম হোক বা কাজের জায়গায় হোক - সেখানে ধর্মের কোনো কথাই চলবে না। ফরাসী রাষ্ট্রের কথা - কোনো একটি জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতিকে রক্ষার জন্য মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ চাপালে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হবে। গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পরপর দুটি হামলার ঘটনা ঘটে৷ এক শিক্ষককে গলা কেটে হত্যা এবং নিস শহরে গির্জায় ঢুকে তিনজনকে হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে এমন তল্লাশির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
আরটিএলকে মন্ত্রী জানান, দেশটির আড়াই হাজারের বেশি মসজিদের মধ্যে মাত্র কয়েকটিকেই উগ্রবাদের প্রচার চালানোর বিষয়ে সন্দেহ করা হচ্ছে৷ তবে দেশজুড়ে উগ্রবাদ ছড়িয়েছে, এমন আশঙ্কা ফ্রান্স সরকার করছে না বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
ডারমানিন বলেন, ‘‘ফ্রান্সের প্রায় সব মুসলিমই প্রজাতন্ত্রের আইনকে শ্রদ্ধা করেন এবং এ নিয়ে (উগ্রবাদ) তারাও ব্যথিত৷শিক্ষক স্যামুয়ের প্যাটিকে হত্যার পর ‘উগ্রবাদের প্রচার' চালানোর সন্দেহে বেশ কিছু ইসলামিক স্পোর্টস গ্রুপ, দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার দপ্তরে অভিযান চালায় ফরাসি পুলিশ৷ প্যাটির বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ করা একটি ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে প্যারিসের পাশেই একটি মসজিদ বন্ধও করে দেয়া হয়৷প্যারিসের উত্তর শহরতলীর একজন পাকিস্তানি ইমাম লুকমান হায়দারকে দিনকয়েক আগে, ২৭শে নভেম্বর, ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে টিকটক প্ল্যাটফর্মে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উস্কানি দিয়ে ভিডিও বার্তা পোস্ট করার জন্য।
২০১৫ সালে ফ্রান্সে যাওয়া এই ইমামের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে, তিনি টিকটকে তিনটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন, যার প্রথমটিতে তিনি শার্লি এবদোতে ইসলামের নবীর কার্টুন ছাপা প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন, ‘মুসলমানরা নবীর জন্য নিজেদের জীবন বলি দিতে প্রস্তুত’। দ্বিতীয়টিতে তিনি ‘অমুসলিম এবং অবিশ্বাসীদের ওপর হামলার’ কথা বলেন এবং বলেন ‘তাদের স্থান দোজখে’। ২৫শে সেপ্টেম্বর পোস্ট করা শেষ ভিডিওতে তিনি পাকিস্তানি এক হামলাকারীর শার্লি এবেদোর সাবেক দপ্তরের বাইরে ছুরিকাঘাতে চার ব্যক্তিকে জখম করার ‘সাহসিকতার’ প্রশংসা করেন। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ অক্টোবর মাসে মুসলিম গোষ্ঠীগুলোর ওপর ‘ব্যাপক চাপ প্রয়োগের’ কথা বলেছেন। কিন্তু ফ্রান্সের জন্য কাজটা কঠিন। কারণ দেশটি নিজেদের 'ধর্মনিরপেক্ষ' বলে গর্ব করে থাকে। মি. ম্যাক্রঁ বলছেন তিনি রাজনৈতিক ইসলামের বিস্তার বন্ধের চেষ্টা করছেন। তিনি ধর্মপালনের ক্ষেত্রে কোনরকম হস্তক্ষেপ করতে চাইছেন না। তিনি এই ধরাণা দিতে চান না যে, তিনি কোন একটি বিশেষ ধর্মকে আলাদা করে দেখছেন।প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ স্কুলে নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রয়োজনীয় কর্ম-পরিকল্পনা তৈরির জন্য তার সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর