এমপিও না হওয়ায় ভয়াবহ কষ্টে দিনযাপন করছেন হাজারো শিক্ষক। দীর্ঘদিন বেতনছাড়া জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে তারা যেনো রীতিমতো ক্লান্ত। জাতি গড়ার কারিগর এই নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা চান একটু স্বস্থির জীবন। বেতনভাতা প্রদানের আর্জি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লিখেছেন ফুলসর আব্দুর রহিম সরকার বালিকা বিদ্যালয়, নাটোরের প্রধান শিক্ষক মো: মোতালেব হোসেন সরকার রুবেল।
তার চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আমরা অসহায় শিক্ষক। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা আমাদের। কিন্তু করোনাকালে সেই পান্তাটুকুও যেনো জুটছে না। জাতি গড়ার কারিগর হয়ে এই অসহায় জীবনের গল্প অত্যন্ত করুণ।
ধরাযাক, একটি প্রতিষ্ঠানের নামে এক কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র কিনে রাখা হলো। এখান থেকে প্রতিমাসে প্রায় ৯২ হাজার টাকা মত মুনাফা আসবে। এই টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারিদের তিনমাস পর পর বেতন ভাতা ও অন্যান্য খরচ চালাবেন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। সঞ্চয়পত্রের মূল এক কোটি টাকা সরকারের কাছেই থাকবে। শুধু মুনাফার টাকাটা প্রতিষ্ঠান পাবে। যতদিন এমপিওভুক্ত না হবে ততদিন এভাবে পেতে থাকবে। এমপিওভুক্ত হয়ে গেলে এক কোটি টাকা সরকার নিয়ে নেবে। যদি সরকার জনস্বার্থে কোনো শর্ত দেয় সেটাও প্রতিষ্ঠান মেনে নিবে। একটা বৃহৎ শিক্ষক সমাজকে রক্ষা করতে এই ধরনের বা এমন ভিন্ন কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া খুব জরুরি।
ব্যাংকে অলস টাকা বা রিজার্ভ টাকা পড়ে থাকে। দেশে এতো উন্নয়ন হচ্ছে। সেখান থেকে আমাদের কিছু অর্থ বরাদ্দ দিলেই আমারা শান্তিতে দু'বেলা দু'মুঠো খেয়ে থাকতে পারবো।
সারাদেশে প্রায় সাত হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। সেখানে সাত হাজার কোটি টাকার মত লাগবে। মুনাফার টাকায় সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলবে। যে প্রতিষ্ঠান নীতিমালার শর্ত পূরণ করবে সেটি এমপিওভুক্ত হবে। চরম দারিদ্রে থাকা শিক্ষক সমাজকে একটু স্বস্তি দিতে এই আবেদন জানাচ্ছি।
হয়তো আমার এই ধারণার কিছুটা অস্পষ্ট মনে হতে পারে। তবে এই পদ্ধতিতে কিংবা এই ধারণাকে আরও পরিচ্ছন্নভাবে সাজিয়ে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে এগিয়ে আসার জন্য বিবেচনা করার আকুল আবেদন জানাচ্ছি।